ক্রাইমর্বাতা রিপোট: আবু সাইদ বিশ্বাস:সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৩৬ সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে কলারোয়া থানার সামনে থেকে তাদের আটক করে র্যাব ৬-এর একটি দল।
আটককৃতদের মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পরীক্ষার্থীসহ প্রশ্নপত্র ফাঁশ চক্রের সদস্য রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আটকের পর তাদের সবাইকে র্যাব নিয়ে যায়। পরে সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবে র্যাব।
এর আগে সাতক্ষীরায় প্রাইমারী শিক্ষক পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়া চক্র তৎপর শিরোনামে একটি সংবাদ প্রশাশিত হয় কয়েকটি গণমাধ্যমে। এরই সূত্র ধরে র্যাব অভিযান শুরু করে।
সূত্র জানায়ম ঢাকা থেকে প্রশ্নপত্র ফঁাঁশ প্রতারক একটি চক্র সাতক্ষীরায় । তারা বিভিন্ন প্রার্থীর কাছে গিলে বলছে ‘আমরা পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক ঘন্টা আগেই প্রশ্নের ও উত্তর বলে দেবো। আর এ জন্য ৮ লাখ টাকা দিতে হবে। তবে এখন দুই লাখ টাকা দিলে প্রশ্ন এবং উত্তরপত্র পাওয়া যাবে। বাকী টাকা পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পরে দিলে চলবে ’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রার্থী জানায়,বুধবার সাতক্ষীরা জেলা শহরের উত্তর কাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাকে ফোন করে বলেন ‘আমরা পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক ঘন্টা আগেই প্রশ্নের উত্তর বলে দেবো। আর এ জন্য ৮ লাখ টাকা দিতে হবে। তবে এখন দুই লাখ টাকা দিলে প্রশ্ন এবং উত্তরপত্র পাওয়া যাবে । বাকী টাকা পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর দিলে চলবে ’। ফখরুল নামের এক শিক্ষক বিভিন্ন প্রার্থীর সাথে কথা বলেছেন বলে জানাগেছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, চক্রটি গত দুই দিন আগে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা শহরে আসে। তারা জেলার বিভিন্ন জায়গাতে এজেন্ট নিয়োগ করে এভাবে প্রার্থীদের সাথে চুক্তি করে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে যারা ডিউটিতে থাকবেন তাদের মধ্যে চক্রটি মিশেগেছে বলেও সূত্র জানিয়েছে। অর্থাৎ যারা পরীক্ষা কেন্দ্রে ডিউটিতে থাকবেন তাদের কেউ কেউ এই প্রতারক চক্রের সাথে জড়িত ।
সূত্র জানায়, সাতক্ষীরায় ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ এক নেতার ছেলে ( যিনি ঢাকা প্রবাসী ) এসব সমন্বয় করতে ঢাকা থেকে কয়েক দিন আগে সাতক্ষীরায় এসে অবস্থান করছেন। এজেন্ট নিয়োগ থেকে শুরু করে তিনিই সব কিছুর সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন বলে সূত্র জানায়।
গত কয়েক বছর ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের আগে সাতক্ষীরায় এ ধরনের একটি প্রতারক চক্র এসে হাজির হয়। গত বছর সর্বশেষ যে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে সেখানেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিলো। সর্বশেষ নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রিক ডিভাইজসহ পরীক্ষা কেন্দ্রথেকে একজন হাতেনাতে গ্রেফতারও হয়। তবে স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর নজরদারীর কারণে প্রতারক চক্রটি বেশ বাঁধাগ্রস্থ হয়।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে সভা করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পরীক্ষার্থীরা যাতে কোন ধরনের প্রতারণার শিকার না হয় সে ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকার জন্য তিনি বলেছেন। এছাড়া যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। –
————0———–
শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের দায়ে আটক ২৯
শুক্রবার সকালে কলারোয়া থানার পাশের একটি ভবনে প্রশ্ন সমাধান করার সময় তাদের আটক করা হয়। আটকদের মাঝে পরীক্ষার্থী ও প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্য রয়েছেন।
র্যাব-৬ সাতক্ষীরা সিপিসি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান জানান, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে কয়েকজন বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার সোনালি সুপার মার্কেট ভবনের কিডস ক্লাব সেন্টারে জড়ো হন। সেখানে রাতভর ও সকালে মোবাইল ফোনে আসা প্রশ্নের উত্তর লিখে পরীক্ষার্থীদের শেখানো হয়।
এমন খবর পেয়ে র্যাব সদস্যরা ভবনটি ঘিরে ফেলেন। সেখান থেকে প্রথমে ২২ জন এবং পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী আরও সাতজনকে আটক করা হয়। আটকদের মধ্যে একজন ব্যাংক কর্মকর্তাও রয়েছেন, বলেন মাহমুদুর রহমান।
আটকরা র্যাবকে জানান, ঢাকার একটি চক্র ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে মোবাইল ফোনে প্রশ্ন ও উত্তর বলে দেয়ার দায়িত্ব নেয়। এ জন্য চক্রটিকে অগ্রিম পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। বাকি টাকা পরীক্ষা শেষে দেয়ার কথা ছিল।