সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এন.এস.আই) সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে সাতক্ষীরার কলারোয়া থেকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৫ হোতাসহ ২১ সদস্যকে আটক করেছে। পরে তাদের ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করা হলে আদলতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আমিনুর রহমান প্রত্যেককে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদ্বন্ড প্রদান করেন। সাজা প্রাপ্তদের মধ্যে ৫ জন মূল হোতা ও বাকী ১৭ জন পরিক্ষার্থী ছিলেন।
এর আগে শুক্রবার সকালে কলারোয়া থানার পার্শবর্তী সোনালী সুপার মার্কেটে অবস্থিত কিডস কোচিং সেন্টারের ব্লাক বোর্ডে ফাঁসকৃত প্রশ্ন পত্রের উত্তর লিখে দেয়ার সময় ওই চক্রকে আটক করা হয় বলে র্যাবের দাবী।
আটক ৫ হোতারা হলেন, কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা থানার পরানখালি গ্রামের মৃত আহসান আলীর ছেলে ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম, সাতক্ষীরার কলারোয়ার ঝাপাঘাটা গ্রমের আব্দুল আজিজের ছেলে জনতা ব্যাংক ম্যানেজার আফতাবুজ্জামান, একই উপজেলা একই গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে শিক্ষক আমিরুল ইসলাম, আশাশুনি উপজেলার চেউটিয়া গ্রাামের আব্দুল ওহাবের ছেলে কৃষি ব্যাংক ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম, একই উপজেলার কাকবাশিয়া গ্রামের রইছ উদ্দীনের ছেলে শিক্ষক তরিকুল ইসলাম।
র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল সৈয়দ নুর সালেহীন প্রেসব্রিফিং এ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কলারোয়া থানার পাশর্^বর্তী সোনালী সুপার মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭ নারীসহ ২৮ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তালা উপজেলার ধানদিয়া এলাকা থেকে আব্দুল হালিম নামের এই চক্রের আরো এক হোতাকে আটক করা হয়। এনিয়ে মোট ২৯ জনকে আটক করে র্যাব। এর মধ্যে ২১ জনকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ২ বছরের সাজা প্রদান করা হয়। বাকী ৮জনের (অভিভাবক) বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না পাওয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
তিনি আরো জানান, আমরা জানতে পেরেছি ঢাকায় বসে একটি প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্র ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে তাদের কাছে মোবাইল ফোনে প্রশ্ন ও তার উত্তর বলে দেবে। এসব প্রশ্ন ও উত্তর ব্লাকবোর্ডে লিখে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়। এজন্য সিন্ডিকেটের হাতে অগ্রিম পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। বাকি টাকা পরীক্ষা শেষে দেওয়ার কথা ছিলো। তিনি বলেন, প্রতারক চক্রটির কাছ থেকে যে প্রশ্নউদ্ধার করা হয়েছে তার সাথে মূল প্রশ্নে হুবহু মিল পাওয়া গেছে।
পরীক্ষাথীরা জানান, প্রতারক চক্রটির কাছ থেকে যে প্রশ্নউদ্ধার করা হয়েছে তার সাথে মূল প্রশ্নে হুবহু মিলে গেছে। তাই পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেয়ার দাবী তাদের।
সূত্র জানায়, সাতক্ষীরায় ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ এক নেতার ছেলে ( যিনি ঢাকা প্রবাসী ) এসব সমন্বয় করতে ঢাকা থেকে কয়েক দিন আগে সাতক্ষীরায় এসে অবস্থান করছেন। এজেন্ট নিয়োগ থেকে শুরু করে তিনিই সব কিছুর সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন বলে সূত্র জানায়।