খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে সম্পাদকসহ ১০১৭ সাংবাদিকের বিবৃতি

ক্রাইমর্বাতা রিপোট:    বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ১০১৭জন সাংবাদিক। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা দেশের তিনবারের নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের দাবি, আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই তাঁর বন্দিত্ব অবসানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হোক। বিবৃতিতে বলা হয়, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তাঁর দুই হাত ও কাঁধের ব্যথা মারাত্মক পর্যায়ে।

তাঁর ডায়াবেটিসও বিপজ্জনক মাত্রায়। ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে মুখের ভেতরে। তাঁর স্বাস্থ্যের এমন অবনতি হয়েছে যে তিনি স্বাভাবিকভাবে খাওয়া-দাওয়া পর্যন্ত করতে পারছেন না। আমরা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন। সাংবাদিকরা বলেন, অসুস্থ অবস্থায়ই এক বছরের বেশি সময় আগে তাঁকে জেলে নেয়া হয়। নাজিমউদ্দিন রোডের জনমানবহীন পরিত্যক্ত কারাগারের স্যাঁতস্যাঁতে কক্ষে রাখা হয়। জেলে নেয়ার পর চিকিৎসায় উপর্যুপরি অবহেলার কারণে তাঁর অসুখের মাত্রা বেড়ে যায়। নতুন নতুন উপসর্গ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে খালেদা জিয়া নিজেই আদালতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা জানাতে বাধ্য হন। বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড তাঁকে পরীক্ষা করে তাদের রিপোর্টে জানায়Ñ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাম কাঁধে ব্যথা বৃদ্ধির পাশাপাশি তিনি বাম কাঁধ ঠিকমতো নাড়াতে পারেন না।

বাম বাহু, বাম পা এবং শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথায় তিনি অস্থির থাকেন। তাঁর হাতের গ্রিপও দুর্বল। চিকিৎসকরা রিপোর্টে তাঁর ‘কার্পাল টানেল সিনড্রোমের’ কথা উল্লেখ করেছেন। সাংবাদিকরা বলেন, আমরা গভীর উৎকণ্ঠার সঙ্গে বলতে চাইÑ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে করা একটি উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে খালেদা জিয়াকে কারাদ- দেয়া হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট বা চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সঙ্গে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তাছাড়া যে দুই কোটি টাকা নিয়ে মামলা, তার একটি টাকাও নষ্ট হয়নি। ইতোমধ্যে সেই টাকা ব্যাংকে তিনগুণ বেড়ে ছয় কোটিরও বেশি হয়েছে। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে অন্যায়ভাবে শাস্তি পাচ্ছেন খালেদা জিয়া। এই মামলায় উচ্চতর আদালত থেকে জামিন হওয়া সত্ত্বেও এক বছরের বেশি সময় ধরে নানান ফন্দিফিকির করে তাঁকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। ৩৪টি হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁর মুক্তিলাভে সুকৌশলে ব্যাঘাত ঘটানো হচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, খালেদা জিয়া বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আপসহীন নেত্রী।

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী তিনি। তাঁর ন্যুনতম মৌলিক মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এই অবস্থায় বন্দি রেখে তাঁকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া অমানবিক, অযৌক্তিক, প্রতিহিংসামূলক ও অগ্রহণযোগ্য। আমাদের প্রত্যাশা, অনতিবিলম্বে সরকার তাঁকে মুক্তি দিয়ে গণতন্ত্র ও গণমানুষের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেনÑ রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, আমামুল্লাহ, আলমগীর মহিউদ্দিন, আবুল আসাদ, অধ্যাপক আবদুল গফুর, শওকত মাহমুদ, রুহুল আমিন গাজী, ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী, আল মুজাহিদী, মোবায়েদুর রহমান, ফজলুর রহমান মুন্সী, মোস্তফা কামাল মজুমদার, সালাহউদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, কামালউদ্দিন সবুজ, এমএ আজিজ, এম আবদুল্লাহ, আবদুল হাই শিকদার, এরশাদ মজুমদার, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গণি চৌধুরী, আবদুস শহিদ, গোলাম তাহাবুর, আবু সালেহ, মাশুক চৌধুরী, খায়রুল আনোয়ার মুকুল, বাকের হোসাইন, শহিদুল ইসলাম, সৈয়দ মেজবাহ, হাসান হাফিজ, এ ইউ এম ফখরুদ্দিন, শেহাবউদ্দিন আহমেদ নাফা, চিন্ময় মুৎসুদ্দী, জিয়াউল হক, রীটা রহমান, মাহমুদা চৌধুরী, মমতাজ বিলকিস বানু, রোজী ফেরদৌস, মুন্সী আবদুল মান্নান, কাজী রওনাক হোসেন, নূরুল হুদা, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ইলিয়াস হোসেন, শফিউল আলম দোলন, সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, বদিউল আলম, নূরুল হাসান খান, বখতিয়ার রানা, গোলাম মোস্তফা, আবদুল আউয়াল ঠাকুর, জাহেদ চৌধুরী, জাহাঙ্গীর ফিরোজ, শাহ আহমদ রেজা, ড. আবদুল হাই সিদ্দিক, মাসুমুর রহমান খলিলী, মাসুদ মজুমদার, আজম মীর, রেজাউর রহমান সোহাগ, নুরুদ্দিন আহমেদ, একেএম মোহসীন, আনোয়ারুল কবির বুলু, আতাহার খান, এনাম আবেদীন, শামসুদ্দিন হারুন, লোটন একরাম,  কায়কোবাদ মিলন, আবুল কালাম মানিক, মুরসালীন নোমানী, মাহফুজুর রহমান, শাহাদাত হোসেন খান, এসএস জাহাঙ্গীর, সৈয়দ আলী আসফার, মো. শহীদুজ্জামান, মাঈনুদ্দিন আহমেদ, রফিকুল ইসলাম আজাদ, আনিসুর রহমান খান, মুজতাহিদ ফারুকী, বাছির জামাল, শাহীন হাসনাত, জহিরুল আলম, ফখরুল আলম কাঞ্চন, সালাউদ্দিন বাবলু, শফিউল আলম গ্যালমান, নির্মল চক্রবর্তী, কামার ফরিদ, শামসুদ্দিন আহমেদ, আবু সাঈদ জুবেরী, আবু রূশদ, আলী মামুদ, আবু সালেহ আকন, সানাউল হক ও খুরশিদ আলম প্রমুখ।

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।