সোমবার ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি এএসএইচ শামস জগলুল হোসেন এই পরওয়ানা জারি করেন।
বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এর আগে রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন পিবিআই সদর দপ্তরের সিনিয়র এএসপি রিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, তদন্তে থানায় নুসরাতের জবানবন্দি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়াসহ প্রতিটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্তে প্রমাণিত সব তথ্য-উপাত্তসহ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। এমন অভিযোগ উঠলে দু’জনকে থানায় নিয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করতে করতে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ গ্রহণের সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না। ভিডিওটি প্রকাশ হলে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে ওসির সখ্যের বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি খতিয়ে দেখতে ১৩ এপ্রিল ডিআইজি এসএম রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ২ মে তাদের প্রতিবেদন পুলিশ সদর দপ্তরে জমা দেয়।
ফেনীর এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকার এবং সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, এসআই ইকবাল ও এসআই ইউসুফের গাফিলতির কথা উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম শ্রেণির (এইচএসসি সমমান) আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসাকেন্দ্রে যান নুসরাত। এরপর কৌশলে তাকে চার-পাঁচজন বোরকা পরিহিত ব্যক্তি ছাদে ডেকে নিয়ে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে স্বজনরা প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। এরপর চিকিৎসকরা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত মারা যান।