ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ ক্ষমতার পূর্ণ মেয়াদ পূরণ করতে পারবেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশের অবৈধ কমপক্ষে দেড় কোটি অভিবাসী পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করছেন। তারাই মমতাকে দেখভাল করছেন। স্থানীয়দের অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন এসব অভিবাসী। এমন মন্তব্য করেছেন বিজেপির নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়া। তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সফলতা ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। এখন দলে দলে ওই দলের বিধায়করা বিজেপিতে যোগ দেবেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার সাংবাদিক অখিলেশ কুমার সিংকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেছেন।
তার কাছে জানতে চাওয়া হয়- জয় শ্রীরাম স্লোগানকে মমতা ব্যানার্জী রাজনীতিকীকরণ করছেন এবং এই স্লোগান যারা দিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। এখন আপনার দলতো তার কাছে জয় শ্রীরাম স্লোগান লেখা পোস্টকার্ড পাঠাচ্ছে। কেন?
উত্তরে কৈলাশ বলেন, লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ের পর পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নেতাকর্মীরা যখন সেলিব্রেট করছিলেন তখন তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। বিজেপির তিনজন কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হতাশ হয়ে পড়েছেন। তিনি জয় শ্রীরাম শুনে এমন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন যেন কেউ তার কানে গরম তেল ঢেলে দিয়েছে। তিনি এই স্লোগানকে তার ওপর নির্যাতন হিসেবে দেখছেন। কিভাবে কোটি মানুষের একটি ধর্মীয় স্লোগান নির্যাতনের পর্যায়ে ফেলা যেতে পারে? তিনি যদি এমনটাই মনে করেন, তাহলে দেশের মানুষ তার ভবিষ্যত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। বিজেপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ইঞ্চি বাই ইঞ্চি করে প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিয়েছেন মমতা। এরই মধ্যে এটা শুরু করেছেন তিনি। মমতার অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গে বিপুল সংখ্যক বহিরাগত প্রবেশ করেছে। তারা রাজ্যকে অস্থির করতে চায়। পক্ষান্তরে রোহিঙ্গাদের মতো মানুষরা পশ্চিমবঙ্গে প্রকৃত বহিরাগত। তাদের নিয়ে তার কোনো সমস্যা নেই। বাংলাদেশ থেকে কমপক্ষে দেড় কোটি অবৈধ অভিবাসী এ রাজ্যে অবস্থান করছেন। তাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। দেয়া হয়েছে রেশন কার্ডও। এসব অবৈধ অভিবাসী তার সরকারকে দেখভাল করছে। প্রকৃত অধিবাসীদের কাছ থেকে তাদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন। এ জন্য পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ক্ষুব্ধ। তারা তাদের সংস্কৃতিতে আগ্রাসনের বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদেরকে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বিজেপি। ওই শপথ অনুষ্ঠান বর্জন করেন মমতা। এটা কি বিজেপির কোনো রাজনীতিকরণ নয়?
এ প্রশ্নের জবাবে কৈলাশ বলেন, দেখুন বিজেপি এমন একটি রাজনৈতিক দল যার তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মরিা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পছন্দ করেন। কেন যেসব মানুষ তাদের নিকটজনদের হারিয়েছেন তাদেরকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হবে না? এটা পরিকল্পিত ছিল না। এটা ছিল তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত। প্রকৃতপক্ষে মমতা ওই অনুষ্ঠান এড়ানোর পথ খুঁজছিলেন। তিনি বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক হত্যাকা- ঘটেনি। কিছু মানুষ মারা গেছেন ব্যক্তিগত বিরোধে। তিনি আসলে তার দলের দুর্বৃত্তদের রক্ষা করছেন। তার রাজ্যে বিজেপির কর্মীদের হত্যার সাফাই গাইছেন।
বিধানসভা নির্বাচনের আর দুই বছর বাকি আছে। বর্তমানের এই ধারা কিভাবে অব্যাহত রাখবে বিজেপি?
এ প্রশ্নের উত্তরে কৈলাশ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তার পূর্ণ মেয়াদ পূরণ করতে পারবে না। নির্বাচন খুব বেশি দিন হয়েছে এমন নয়। এরই মধ্যে তার দলের অনেক বিধায়ক বিদ্রোহ করছেন। পদত্যাগ করছেন। তৃণমূল কংগ্রেস থেকে দলে দলে বিধায়করা বেরিয়ে আসবেন। তারা যেকোনো সময় তৃণমূল কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করতে পারেন। সিনিয়র নেতারা ক্ষুব্ধ। তাদের আশঙ্কা, মমতার ভাতিজা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মমতার পদে আসতে পারেন। তৃণমূলের অনেক নেতাকে আমি জানি, যারা এ অবস্থায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।