এলাকার কয়েক কোটি মানুষ আতঙ্কের মধ্যে কালাতিপাত

ক্রাইমর্বাতা রিপোট:   দেশের ১৮ কোটি জন জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৫ কোটি মানুষ দেশের নদী বেষ্টিত উপকূলীয় এলাকায় বসবাস করে। কিন্তু উপকূলীয় এলাকা এখন অরক্ষিত। বিশেষ করে টেকসই বাধঁ না থাকায় জান মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। প্রতি বছর উপকূলীয় বাঁধ ভেঙ্গে নদীর পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
বিশেষ করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। উপকূলীয় জেলাগুলোর মধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, পটুয়াখালি,কক্সবাজার, ভোলা অন্যতম। প্রায় ডজন খানেক জেলার ভৌগলিক অবস্থান উপকূলীয় এলাকায়। এসব উপকূলীয় এলাকা জেলে, কৃষক,বাওয়ালী কামার, কুমার সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোক বসবাস করে। জাতীয় অর্থনীতিতে  উপকূলীয় অধিবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। বিশেষ করে মৎস্য সম্পদ আহরণ করে দেশের মৎস্য সম্পদের দুইয়ের তৃতীয়াংশ চাহিদা পূরন করে  উপকূলীয় জেলেরা। সাগরসহ স্থানীয় নদ নদী থেকে মৎস্য সম্পদ আহরণ করে স্থানীয় চাহিদা পূর্ণ করে বেদেশিক মুদ্রা অর্জন করে আসছে দীর্ঘ দিন থেকে। বিশেষ করে হিমায়িত চিংড়ী রপ্তানি করে বাংলাদেশ কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। এ পেশার সাথে উপকূলীয় ২ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জড়িত। মৎস সম্পদ উৎপাদনের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ বিভিন্ন প্রজাতির ফসল উৎপাদন হয়। যা দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কিন্তু উপকূলীয় বাঁধগুলো এত জরাজীর্ণ যে এসব এলাকার কোটি কোটি মানুষ চরম আতংক উদ্বেগ উৎকন্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। শুধু সাতক্ষীরা, খুলনা উপকূলীয় এলাকায় সাড়ে ৮শত কিলোমিটার ওয়াপদা বাধঁ জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোন মুহূর্তে এসব বাধঁ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
১৯৬৯ সালে বঙ্গোসাগরের তরঙ্গমালা হতে রক্ষা করার জন্য মূলত: এসব বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এসব বাঁধের স্থায়িত্ব ধরা হয় বিশ বছর। কিন্তু ৪০ বছর উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর ও যথাযথ ভাবে এসব বাঁধ সংস্কার করা হয়নি। ফলে বিশাল বিস্তৃত এলাকা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। ১৯৮৮ সালের ২৯ শে নভেন্বর হারিকেন ঝড়,২০০৭ সালের ১৫ নভেন্বর সিডর,২০০৯সালের ২৫ মে আইলায় উপকূলীয় এলাকা লন্ড ভন্ড হয়ে যায়।প্রায় ৩শতাধিক লোকের প্রাণহানি ঘটে,হাজার হাজার বসত বাড়ী নদীর সাথে বিলীন হয়ে যায়। এর পর থেকে উপকূলীয় বাঁধ জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে । এসব বাঁধগুলো সংস্কার জরুরী হয়ে পড়েছে। এদিকে বঙ্গোপসাগরে চর পড়ায় জোয়ারের পানিতে উচ্চতা আগের তুলনায় অনেকে বেড়েছে। আগেকার দিনে ৫/৬ ফুট উচুঁ রাস্তা দিয়ে জোয়ারের পানি থেকে লোকালয় রক্ষা করা যেত। তবে উপকূলীয় অধিবাসীদের আগলে রেখেছে সুন্দর বন।এর পর ও উপকূলীয় বাধঁ সংস্কার করা না হলে শত শত জনপদ নদী গর্ভে বিলনি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

Check Also

তাবলীগ জামায়াতের সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ-সমাবেশ

মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : তাবলীগ জামাতে সাদপন্থীদের বর্বোরিচত হামলার প্রতিবাদ ও সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সহসভাপতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।