জানা যায়, সাতক্ষীরায় সদ্য যোগদানকারি জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান ইতোপূর্বে মাগুরার জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে কর্মরত থাকাকালিন ২০১৭ সালের ১৭ মে মাগুরার জেলা কারাগার পরিদর্শনে যান। এ সময় তিনি কারাবন্দীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন এবং পরিদর্শন বই স্বাক্ষর শেষে জেল সুপারের নিকট তুলে ধরেন দীর্ঘ ২৫০ বছর ধরে চলে আসা এক সমস্যার কথা, “কারাবন্দীদের সকালের খাবার”। সেই বৃটিশ আমল থেকেই কারাবন্দীদের জন্য সকালের বরাদ্দ আটার রুটি আর গুড় বা চিড়া গুড়। আর যে দিন বন্দীরা কোর্টে হাজিরা দিতে আসে, এই চিড়া গুড়ই হয় তাদের দুপুরের খাবার! তিনি এই ব্যবস্থাকে অমানবিক বিবেচনা করে বন্দীদের চিড়া গুড়ের পরিবর্তে খিচুড়িভাত দেয়ার পরামর্শ দেন এবং কোর্টে আসা বন্দীদের দুপুরের খাবার কোর্টে প্রেরনের ব্যবস্থা করেন। যা সে সময়ে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় গুরুত্বের সাথে খবরটি প্রকাশ পায়। কিন্তু মাগুরার পাশাপাশি আরও কয়েকটি জেলা কারাগার যখন এই উদ্যোগ গ্রহন করে, তখন অদৃশ্য কোন চাপে এবং বাজেট স্বল্পতার কথা বলে মাগুরা জেলা কারাগার এই উদ্যোগ বন্ধ কয়ে দেয়। এই অপ্রত্যাশিত বাঁধায় থেমে থাকেননি জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান। তিনি কারাবন্দীদের ‘মানুষ’ হিসাবে বিবেচনা করে তাদের খাওয়ার যোগ্য খাবার সরবরাহের জন্য আইন মন্ত্রনালয় ও হাইকোর্ট বিভাগের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবর একটি পত্র প্রেরণ করেন। এ সবই করেন তিনি ২০১৭ সালের শেষের দিকে। তারপর শুধুই প্রতিক্ষা, নতুন কিছু বা ভালো কিছুর জন্য। অবশেষে ২০১৯ সালের ১৯ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সুরক্ষা বিভাগের প্রস্তাব মতে অর্থ মন্ত্রনালয় পাশ করে কারাবন্দীদের নতুন খাওয়ার মেন্যু- খিচুড়ি, রুটি-হালুয়া বা রুটি-সবজী। গত ১৬ জুন কেরানীগঞ্জে এই নতুন খাবার মেন্যু উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ফলে, জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানের রোপিত বীজ থেকে এবং বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় বৃটিশ আমল থেকে শুরু হওয়া ২৫০ বছরের অমানবিক ব্যবস্থার পরিবর্তন হল।
সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানের প্রস্তবে সারাদেশে কারাবন্দীদের চিড়া-গুড়ের পরিবর্তে চালুহল খিচুড়িভাত
ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানের ছোট্র একটি উদ্যোগের কারনে আজ সারা দেশের কারাবন্দীরা পাচ্ছেন চিড়া বা রুটি গুড়ের পরিবর্তে ভারি খাবার খিচুড়ি ভাত। তাঁর এই বাস্তব সম্মত মানবিক উদ্যোগ পাল্টে দিয়েছে বৃটিশ আমল থেকে শুরু হওয়া ২৫০ বছরের পুরাতন সিস্টেমকে। যার সুফল পাচ্ছেন সমগ্র দেশের লক্ষ লক্ষ কারাবন্দী সাধারণ মানুষ।