মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে ঘুষগ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ সুপারের বডিগার্ডসহ চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বডিগার্ডসহ দুই কনস্টেবলকে আটকের পর নেয়া হয়েছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে। এ ছাড়া একই অভিযোগে আরও দুই কর্মকর্তাকে জেলা থেকে অন্যত্র বদলি করেছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার।
স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে ঘুষগ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে অপরাধীদের ধরার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারের দেহরক্ষী পুলিশ সদস্য নুরুজ্জামান সুমনকে মোটা অঙ্কের ঘুষগ্রহণের টাকাসহ আটক করা হয়।
একই অপরাধে পুলিশলাইনসের মেস ম্যানেজার জাহিদ হোসেনকে আটক করে দুজনকেই ঢাকা হেডকোয়ার্টার্সে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
টিআই গোলাম রহমান ও পুলিশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালার কাছ থেকেও ঘুষের টাকা উদ্ধার করা হয়।
টিআই গোলাম রহমান ও পুলিশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালাকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।
ঘটনাটি গত সোমবার রাতে হলেও বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। কয়েক দফায় মাদারীপুর জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাংবাদিকদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
পরে বিষয়টি জানতে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) সোহেল রানাকে মাদারীপুরের সাংবাদিকরা অবগত করলে তিনি আটকের বিষয়টি স্বীকার করেন।
পরে বৃহস্পতিবার রাতেই মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালাদার জরুরী সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিষয়টি অবগত করেন।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি সোহেল রানা মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের জানান, মাদারীপুরের একাধিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগে টাকাগ্রহণের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ হিসেবে কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি। আমরা সুস্থ ও নির্ভেজাল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য যা যা করা দরকার, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স তা করেছে। যেসব জেলা থেকেই আমরা খবর পেয়েছি, সেখানেই ব্যবস্থা নিয়েছি।
মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ২৪ জুন গোপন সংবাদে জানা যায়, পুলিশলাইনসের মেস ম্যানেজার জাহিদ হোসেন মোটা অঙ্কের উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছেন। এ সংবাদের ভিত্তিতে ওই দিনই ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ ও মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে আটক করে ঢাকা হেডকোয়ার্টার্সে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরের দিন একই অভিযোগে এসপির বডিগার্ড নূরুজ্জামান সুমনকে তিন লাখ টাকাসহ আটক করে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এ ছাড়া গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় প্রতারণার অভিযোগে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর গোলাম রহমান ও পুলিশলাইনস হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। আটককৃত ও বদলিকৃতদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা জব্দ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত চলছে। দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।