ক্রাইমবার্তা রিপোর্টঃ
বিশ্বকাপের ৩৪তম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১২৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ওঠার পথ আরো পরিস্কার করলো ভারত। প্রথমে ব্যাট করে ভারতের দেয়া ২৬৯ রানের লক্ষ্য ব্যাট করতে নেমে ৩৪.২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ (৩১) রান করেন সুনিল অ্যামব্রিস।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ২৬৮ রান সংগ্রহ বারত। দলের হয়ে অধিনায়ক বিরাট কোহলি সর্বোচ্চ (৭২) রান করেন। মহেন্দ্র সিং ধোনির ব্যাট থেকে আসে (৫৬) রান।
ভারতের সামনে সহজ সমীকরণ- জয় পেলেই সেমিফাইনালের রাস্তা পরিষ্কার। অন্য দিকে সেমিফাইনালের পথ থেকে আগেই ছিটকে পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবুও শেষের ম্যাচগুলে জিতে বিশ্বকাপ থেকে সম্মানজনক বিদায় চায় তারাও। এমন সমীকরণ নিয়েই বৃহস্পতিবার ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে মুখোমুখি হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ভারত। বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় ম্যাচটি শুরু হয়। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে দলীয় ২৯ রানে মাথায় ওপেনার রোহিত শার্মাকে উইকেটরক্ষক শাই হোপের তালুবন্দীতে ১৮ রানে ফেরান উইন্ডিজ পেসার কেমার রোচ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৬৯ রানের জুটি গড়ে বিরাট কোহলি ও আরেক ওপেনার লোকেশ রাহুল সে চাপ সামলে নেন। দলীয় ৯৮ ও ব্যক্তিগত ৪৮ রান করে ইনিংসের ২১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে জেসন হোল্ডারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন লোকেশ। ১৪ রান করে বিজয় শঙ্কর ও ৭ রান করে ফেরেন কেদার যাদব। তবে দেখে-শুনে খেলে অধিনায়ক বিরাট কোহলি তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৫৩তম হাফসেঞ্চুরি। সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সাথে জুটি বাঁধতে চাইলেও অর্ধশতক হাঁকিয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি কোহলি। ৮২ বলে ৮ চারে ৭২ রান করে জেসন হোল্ডারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। দলের ১৮০ রানের মাথায় কোহলি আউট হলে ষষ্ঠ উইকেটে হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে ধোনি দলকে টেনে নিতে থাকেন। দুজনে মিলে গড়েন ৭০ রানের জুটি। ৩৮ বলে ৪৬ রান করে ফ্যাবিয়ান অ্যালনকে ক্যাচ দিয়ে পান্ডিয়া ফেরেন কট্রেলের শিকার হয়ে। ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ সামিও ফেরেন শূন্য রানে। শেষ পর্যন্ত ধোনির ৬১ বলে ৩ চার ও দুই ছক্কায় অপরাজিত ৫৬ রানের ওপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ২৬৮ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় ভারত।
উইন্ডিজ বোলারদের মধ্যে কেমার রোচ ৩টি, জেসন হোল্ডার ও শেল্ডন কট্রেল নেন ২টি করে উইকেট।
২৬৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কোনো ব্যাটসম্যানই ভারতীয় বোলারদের সামনে দাঁড়াতে পারেননি। ৬ রান করে দলীয় ১০ রানের মাথায় মোহাম্মদ সামির বলে কেদার যাদবকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ক্রিস গেইল। ১৬ রানের মাথায় ওয়ানডাউনে নামা শাই হোপকে বোল্ড করে দ্বিতীয় শিকার করেন সামি। হোপের ব্যাট থেকে আসে ৫ রান। ওপেনার সুনিল অ্যামব্রিসকে নিয়ে চারে ব্যাট করতে নামা নিকোলাস পুরান ম্যাচের হাল ধারার চেষ্টা করলেও দলের ৭১ রানের মাথায় পান্ডিয়ার এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ৩১ রান করে মাঠ ছাড়েন। এরপর নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে উইন্ডিজরা। ৮০ রানরে মাথায় ২৮ রান করে কুলদীপ যাদবের বলে সামির তালুবন্দী হয়ে ফেরেন্। ব্যাট করতে নেমে জেসন হোল্ডার ৬, কার্লোস ব্রাথওয়েট ১, শেল্ডন কট্রেল ১০ ও প্যাবিয়ান অ্যালেন শূন্য রানে আউট হলে খেলা অনেকটাই শেষ হয়ে যায় উইন্ডিজের। শুধু সময় এবং নিয়মের কবলে পড়ে জয়ের অপেক্ষায় থাকতে হয় ভারতকে। শেষ উইকেটে কেমার রোচ ও ওশান থামাসে একটু ভোগাতে চাইলেও সে সুযোগ দেননি দুর্দান্ত বোলিং করা পেসার সামি। ৩৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ওশান থামসকে রহিত শার্মার ক্যাচ বানিয়ে ১৯ রানের জুটি ভেঙে দলকে এনে দেন কাঙ্খিত জয়ের লক্ষ্য। ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন রোচ। ৩৪.২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৩। আর তাতে ভারত পায় ১২৫ রানের বড় জয়
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ সামি ৪টি, জাসপ্রিত বুমরাহ ও যুজবেন্দ্র চাহাল ২টি, কুলদীপ যাদব ও হার্দিক পান্ডিয়া একটি করে উইকেট শিকার করেন।
৭২ রান করে ব্যাট হাতে ম্যাচে সেরা নৈপুণ্য দেখিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
এএলএমটি