পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকালে ঝড়বৃষ্টির সময় কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের গড়ইমহল গ্রামের আদম আলী গাজীর ছেলে আল আমিন ও রবিউল ইসলাম এবং আল আমিনের স্ত্রী সাবিনা খাতুনসহ তিনজন বিলের মধ্যে ফাঁকা জায়গায় একটি টিনের ঘরের মধ্যে ছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠা বিকট শব্দে বজ্র্রপাত হলে টিনের চাল ছিদ্র হয়ে বজ্রপাত তাদের উপর পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই পুড়ে তিনজন নিহত হয়।
এদিকে, একই সময়ে কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের বিজয়নগর গ্রামের মুনছুর আলী গাজী বাড়ির পাশে একটি বিলে কাজ করছিল। এসময় হঠাৎ বজ্রপাত ঘটলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
রতনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খোকন জানান, বৃষ্টি ও প্রচন্ড বজ্রপাত শুরু হওয়ায় গড়ুইমহল গ্রামের আদম গাজীর দুই পুত্র আলামিন, রবিউল এবং পুত্রবধু সাবিনা বাইরের কাজ ফেলে রেখে ঘরের বারন্দায় বসে গল্প করছিল। এসময় তাদের ঘরে বজ্রপাত পড়লে তারা তিনজনই ঘটনাস্থলে নিহত হন। তিনি আরো জানান, আলামিনের সাথে সাবিনার গত ৫ মাস পূর্বে বিয়ে হয়।নিহত নববধু সাবিনা একই গ্রামের হানিফ কয়ালের কন্যা। অপরদিকে শুক্রুবার বেলা ১১ টার দিকে একই ইউনিয়নের বিজয়নগর গ্রামের হাতেম গাজীর পুত্র মুনছুর গাজী মাঠে গরু আনতে যেয়ে বজ্র্রপাতে নিহত হয়। এসময় দুইটা গরুও মারা যায়।
কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আজিজুর রহামন জানান, কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনয়নের গড়ইমহল ও বিজয়নগরে বজ্রপাতে একই পরিবারের তিনজনসহ চার জন নিহতের ঘটনাটি নিশ্চিত করেছে।
অপরদিকে, সকালে বৃষ্টি শুরু হলে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা মাদরা গ্রামের জুয়েল হোসেন বাড়ির পাশে একটি গোয়াল ঘরে আশ্রয় নেয়। বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর গোয়াল ঘর থেকে বাইরে বের হলেই হঠাৎ বজ্রপাত ঘটলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আব্দুস সালাম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। আবু সাইদ বিশ্বাস:সাতক্ষীরা: ২৮/০৬/১৯
—-0——
ঢাকা : দেশের চার জেলায় বজ্রপাতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের তিনজন রয়েছেন। শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাতক্ষীরা, নড়াইল, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ ও মাগুরায় এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
সাতক্ষীরা: দুই উপজেলায় পৃথক তিনটি বজ্রপাতের ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কালীগঞ্জের উপজেলার দুই গ্রাম ও আশাশুনি উপজেলার মাদ্রা গ্রামে এসব বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, কালীগঞ্জ উপজেলার গড়ইমহল গ্রামের আদম গাজীর বড় ছেলে আলামিন হোসেন, ছোট ছেলে রবিউল ইসলাম, আলামিনের স্ত্রী সাবিনা খাতুন। তারা বজ্রপাতের সময় ঘরের বারান্দায় বসে ছিলেন। এছাড়া, ক্ষেতে কাজ করা সময় একই উপজেলার বিজয়নগর গ্রামের হাকিম গাজীর ছেলে মুনছুর গাজী ও আশাশুনি উপজেলার মাদ্রা গ্রামের কবির সরদারের ছেলে জুয়েল সরদার বাড়ির উঠানে বজ্রপাতে নিহত হন।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান ও আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম পাঁচজনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নড়াইল: নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ভক্তডাঙ্গা বিলে মাছের ঘেরে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরো চার কৃষক আহত হয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, সকাল ১১টার দিকে ভক্তডাঙ্গা বিলে প্রদীপ বর্মনের মাছের ঘেরে কাজ করছিলেন তার ভাতিজা ছোটকালিয়ার প্রহ্লাদ বর্মনের ছেলে নয়ন বর্মন (২৩) এবং সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের ফারুক সরদার (৪০)। এ সময় বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়। আহত হন চারজন। ঘটনার সত্যতা সত্যতা নিশ্চিত করে কালিয়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহ: বজ্রপাতে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের মধ্য ঝালপাজা চৌরা পাড়া গ্রামে রমিজা খাতুন (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের সামজত আলীর স্ত্রী। ঘরের বারান্দায় বসে থাকা অবস্থায় হঠাৎ তার ওপর বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ভালুকা মডেল থানার ওসি মাঈন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ছাদের ট্যাংকি পরিষ্কার করতে গিয়ে বজ্রপাতে রকি মিয়া (১৫) নামে কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। নিহত রকি মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি থানার গচিয়াহাটা এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে। রকি মিয়া উপজেলা বিশ্বরোড এলাকার বাদশা মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকছিল। স্থানীয় জানান, উপজেলার শাহ চন্দ্রপুরী হোটেলে ওয়েটার রকি দুপুরে কয়েকজনের সঙ্গে হোটেলের ছাদের ট্যাংকি পরিষ্কার করছিল। এ সময় রকির ওপর বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই রকির মৃত্যু হয়।
মাগুরা: সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া গ্রামে বজ্রপাতে পংকজ কুমার বিশ্বাস (৩৫) নামে এক মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। প্রতিবেশী অমারেশ বিশ্বাস জানান, দুপুরে বৃষ্টি শুরু হলে পংকজ বিশ্বাস গ্রামের পাশের আড়মুখ মাঠ থেকে গরু আনতে যান। এ সময় মাঠে বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় লাশ নিজ বাড়ি আনা হয়। পংকজ কুমার বিশ্বাস সদরের কুচিয়ামোড়া গ্রামের মৃত নারদ বিশ্বাসের ছেলে।
শীর্ষকাগজ/এসএসআই