সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা

রাসূল সা: মদিনায় হিজরতের পর প্রথমেই একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। সেখানেই তিনি মুসলমানদের সমস্যা সমাধান বা ফয়সালা দিতেন। তিনি সেখানে ইহুদি-খ্রিষ্টান ও পৌত্তলিকদের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যা ইতিহাসে মদিনা সনদ নামে পরিচিত এবং পৃথিবীর প্রথম লিখিত সংবিধান হিসেবে স্বীকৃত। ওই সনদের মাধ্যমে মদিনায় একটি ইসলামী রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করেন। মহানবী সা: সে রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং পদাধিকার বলে তিনি ছিলেন মদিনার সর্বোচ্চ বিচারপতি। এভাবে নবী করীম সা: পরিপূর্ণ শাসক ও বিচারক হিসেবে দাায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার জীবদ্দশায় তিনি ছিলেন একই সাথে রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান ও প্রধান বিচারপতি। মহানবী সা: ইসলামী বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে পৃথিবীতে শান্তি কায়েম করে গেছেন। ইসলামী বিচারব্যবস্থা একমাত্র কল্যাণকর ও ইনসাফপূর্ণ ব্যবস্থা। শান্তি ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি এবং অপরাধমুক্ত। সমাজ গঠনের জন্য এ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা অপরিহার্য। মহানবী সা: বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে তৎকালীন জাহেলি সমাজকে পরিবর্তন করে সুশীল ও অপরাধমুক্ত সমাজ উপহার দেন। এ ধারা অব্যাহত থাকে খিলাফতে রাশিদার যুগ পর্যন্ত। বর্তমান মানবসভ্যতায় রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছেÑ নাগরিক অধিকার ও তাদের কর্তব্য নির্ধারণ করা। আর এ অধিকারও কর্তব্য পালনের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য বিচার ব্যবস্থার গুরুত্ব ও
অস্তিত্ব অপরিহার্য। তাই আধুনিক সমাজব্যবস্থায় ন্যায়নীতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইসলামী বিচারব্যবস্থার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
নবুওয়াতি ধারাবাহিকতার সর্বশেষ মিশন হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাতে পূর্ণতা লাভ করে। তাঁর মিশনের লক্ষ্য ছিল, জুলুমের অবসান ঘটিয়ে মানবজীবনের সর্বক্ষেত্রে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ কায়েম করা। তিনি সম্যক উপলব্ধি করেন যে, ন্যায়বিচার এমন এক প্রচলিত নীতি যার প্রয়োগ সুস্থ সমাজের সংরক্ষণের জন্য অপরিহার্য। যে লক্ষ্য নিয়ে তিনি দুনিয়ায় আবির্ভূত হন, ২৩ বছর
প্রাণান্তকর প্রয়াস চালিয়ে তিনি তা কার্যকর করেন সার্থকভাবে। তার উপস্থাপিত জীবনব্যবস্থা মানবজীবনের সর্বক্ষেত্রে সবদিক দিয়ে ইনসাফ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার নিয়ামক ও চালিকাশক্তি। পবিত্র কুরআনের ভাষ্য অনুযায়ী মহান আল্লাহ্ সব নবী ও রাসূলকে ইনসাফ ও ন্যায়বিচারের বিধান এবং তা কার্যকর করার দায়িত্ব দিয়ে দুনিয়ায় প্রেরণ করেন (সূরা হাদিদ : ২৫)
জীবনের সবক্ষেত্রে ন্যায়পরায়ণতা ও ইনসাফের গুরুত্ব অপরিহার্য। কারণ ন্যায়বিচার ছাড়া মানবজীবনের কোনো ক্ষেত্রে শান্তিশৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে না। মানবিক মর্যাদাবোধ ও পারস্পরিক দায়িত্ববোধ এ গুণের কারণেই সৃষ্টি হয়। নিজের অধিকার সংরক্ষণের পাশাপাশি সমাজের অপরাপর সদস্যদের অধিকারের প্রতি সচেতন থাকা জরুরি, যেন কারো প্রতি জুলুম না হয়। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে বারবার ও স্পষ্টভাষায় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ন্যায় ইনসাফ কায়েমের নির্দেশনা প্রদান করেন।
‘নিশ্চয় আল্লাহ্ ন্যায়পরায়ণতা ও সদাচরণের নির্দেশ দেন (সূরা নাহ্ল : ৯০),
হে মুমিনগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্য ন্যায় সাক্ষ্যদানে তোমরা অবিচল থাকবে, কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদিগকে যেন কখনো সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে, সুবিচার করবে, তা তাকওয়ার নিকটতর (সূরা মায়িদা : ৮) তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচারকাজ পরিচালনা করবে তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে (সূরা নিসা: ৫৮), হে মুমিনগণ! তোমরা ন্যায়বিচারে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহর সাক্ষীস্বরূপ, যদিও তা তোমাদের নিজেদের অথবা পিতা- মাতা এবং আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধে হয়, সে বিত্তবান হোক বা বিত্তহীন, হোক আল্লাহ উভয়েরই ঘনিষ্ঠতর। সুতরাং তোমরা ন্যায়বিচার করতে প্রবৃত্তির অনুগামী হয়ো না। যদি তোমরা পেঁচাল কথা বলো অথবা পাশ কাটিয়ে যাও তবে তোমরা যা করো আল্লাহ্ তো তার সম্যক খবর রাখেন। (সূরা নিসা: ১৩৫)
আল্লাহ তায়ালার নির্দেশনা অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমাজে ন্যায়বিচারের মানদণ্ড সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী, বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন, ধনী-দরিদ্র, প্রভু-ভৃত্য সবার ক্ষেত্রে বিচার সমান, এখানে বিন্দুমাত্র হেরফেরের অবকাশ ছিল না। দয়া বা পক্ষপাতিত্ব আল্লাহর বিধান কার্যকরকরণে কোনোরূপ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি। হজরত ‘আয়েশা রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিজস্ব ব্যাপারে কারো কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। (হাফিজ আবু শায়খ ইসফাহানী, আখলাকুন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, পৃ. ১৯)
সামাজিক জীবনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশ কয়েকটি বৈপ্লবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। প্রথমত, তিনি অর্থসম্পদ অর্জন, সঞ্চয় ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন আনার প্রয়াস চালান। সমকালীন দুনিয়া বিশেষত প্রাক ইসলামী সমাজে ধনসম্পদ ছিল আভিজাত্যের মাপকাঠি, কামিয়াবির নিদর্শন, শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক। তাই মানুষ হন্য হয়ে অর্থসম্পদ অর্জনের পেছনে ছুটেছে সারা জীবন। বৈধ-অবৈধ হালাল-হারাম, ন্যায়-নীতি, পাপ-পুণ্য এসবের ধার ধারেনি। এভাবে মানুষ হয়েছে অর্থসম্পদের দাস আর অর্থসম্পদ হয়েছে তাদের প্রভু। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের লক্ষ্যে ওহি নির্ভর যে দর্শন পেশ করেন তা হলো মানবজীবনে অর্থসম্পদ অপরিহার্য। জীবন ও জীবিকার তাগিদে অর্থসম্পদ অর্জন করতে হয়, কাজে লাগাতে হয়, কিন্তু তা জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়। অর্থ ও ধনসম্পদসহ দুনিয়ার সব কিছুই মানুষের সেবক ও খাদেম। পৃথিবীর বস্তু মানুষের জন্য সৃষ্টি। (সূরা আল বাকারা: ২৯) মানুষ ও মানুষের সব কর্মকাণ্ড কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিবেদিত। সুতরাং অর্থসম্পদ অর্জন, সঞ্চয় ও ব্যয় করতে হবে আল্লাহর নির্দেশিত পথে। এতেই নিহিত আছে মানুষের মুক্তি ও কামিয়াবি।
সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জনগণকে নীতি ও বিধিসম্মতভাবে অর্থসম্পদ অর্জন করার এবং জাকাত ও সাদ্কার মাধ্যমে সে অর্জিত সম্পদের কিয়দংশ দুঃখী ও অভাবগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের নির্দেশ দেন। অধিকন্তু রাষ্ট্রের আর্থিক সম্পদে জনগণের অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছয় প্রকার রাজস্ব প্রবর্তন করেন। এগুলো হলো ১. আল-গনিমাহ্ বা যুদ্ধলব্ধ সম্পত্তি, ২. জাকাত বা ধনীদের দেয়-দরিদ্র কর, ৩. খারাজ বা অমুসলিম, কৃষকদের ভূমি কর, ৪. জিজিয়া বা অমুসলিমদের নিরাপত্তা কর, ৫. আল-ফাই বা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি, ৬. সাদকা বা স্বেচ্ছাধীন দান। এসব খাতে সংগৃহীত রাজস্ব নির্ধারিত হারে জনগণের মধ্যে বিতরণ করা হতো। এ ব্যবস্থা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মদিনা জীবনে এবং পরবর্তীতে খুলাফায়ে রাশেদিনের শাসনামলে আশানুরূপ সুফল বয়ে আনে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে আদর্শ সমাজ গড়ে তোলেন। বংশ কৌলীন্য ও আভিজাত্যের গৌরবের পরিবর্তে মানবতার ভিত্তিতে সমাজ বন্ধন সুদৃঢ় করেন। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা দেন, আরবের ওপর অনারবের, অনারবের ওপর আরবের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। সব মানুষ একে অপরের ভাই। সব মানুষ আদমের বংশধর আর আদম মাটি থেকে তৈরি (আহমদ ইবন হাম্বল, মুসনাদ, ৫খ., পৃ. ৪১১; জাহি আল বয়ান ওয়াত তিবঈন, ২খ. ৩৩) তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তির খোদাভীতি প্রবল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ ঘোষণা ছিল তৎকালীন সমাজের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ ও বিদ্রোহ। কারণ বংশ কৌলীন্য ও রক্তের মর্যাদা ছিল সামাজিক আভিজাত্যের ভিত্তি। তিনি ঈমানদারদের সুভ্রাতৃত্বের বন্ধনে সুদৃঢ় করে এক অখণ্ড দেহ সত্তায় পরিণত করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
‘সকল মুমিন এক মানবদেহের মতো, যদি তার চোখ অসুস্থ হয় তখন তার সর্বাঙ্গ অসুস্থ হয়ে পড়ে, আর যদি তার মাথা ব্যথা হয় তখন তার সমস্ত দেহই ব্যথিত হয়’ (মিশকাত আল মাসাবিহ, ৯খ., পৃ. ১২৮)।
এ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় ইনসাফপূর্ণ যে সমাজ কায়েম করেন তার ভিত্তি ছিল,
নৈতিকতা ও মানবজাতির সার্বজনীনতা। মানুষ যদি রিপুর তাড়নার কাছে পরাভূত হয় তা হলে সুস্থ সমাজের বিকাশ-ধারায় সে কোনো তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে পারে না। মনুষ্যত্বের উজ্জীবন, চারিত্রিক উৎকর্ষ ও নৈতিক উপলব্ধি সুস্থ সমাজ বিকাশে সহায়ক আর ইন্দ্রিয়জাত প্রবণতা, অনিয়ন্ত্রিত আবেগ, অনিষ্টকর প্রথা সমাজের সুস্থতার ভিত্তিমূলকে একেবারে নড়বড়ে করে দেয়, জন্ম হয় জুলুম ও অন্যায়ের। এ উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুয়া খেলা, মদ্যপান, নেশাগ্রহণ, কুসিদপ্রথা, জিনা-সমকামিতাও অহেতুক রক্তপাত নিষিদ্ধ করে দেন। (জালালউদ্দীন সায়ুতি, দুর আল মানসুর, ১খ, পৃ. ৩৯১, ইবন কাসির, সিরাতুন নবুবিয়াহ, ৪খ, ১৯৭৮, পৃ.৩৯২) ফলে সমাজবিরোধী কার্যকলাপের ভয়াবহতার হাত থেকে মানুষ রেহাই পায়। উল্লেখ্য যে, মদ্যপান, জুয়া যাবতীয় অমার্জিত, নীচ স্বভাবের অনিষ্ট কার্যকলাপ ও সব ধরনের আতিশয্য হলো খ্রিষ্ট-ইয়াহুদি ও পৌত্তলিক সমাজের অভিশাপ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গুরুত্বপূর্ণ অবদান হলো সভ্যতার অভিশাপ থেকে মানুষকে মুক্তি দিয়ে ধর্মনিয়ন্ত্রিত ও মানবিকতায় উজ্জীবিত নতুন সমাজের গোড়াপত্তন। বিশ্ব মানবতার প্রতি এটা মহান রাসূলের ইহসান। বর্তমান বিশ্বের খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের গবেষক আল্লামা সায়্যিদ আবুল হাসান আলী নদভী র. এ প্রসঙ্গে বলেনÑ এটা দিবালোকের মতো সত্য যে, মহান রাসূলের আবির্ভাবের পর দুনিয়ার অস্তিত্ব, সম্ভব হয়েছে তাঁর দয়াপূর্ণ আচরণ ও কার্যকলাপের ফলে। সর্বপ্রথম তিনি মানবতার মাথায় ঝুলন্ত ডেমাক্লিজের তরবারি অপসারিত করে গভীর উচ্ছ্বাস ও আস্থার সাথে মানবতার ভিত্তিতে বসবাসের নতুন আদর্শ উপস্থাপন করেন। তার প্রচেষ্টার ফলে শিক্ষা-দীক্ষা, জাগতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি হয়। নতুন সংস্কৃতি সভ্যতার উন্মেষ ঘটে এবং একটি নতুন সাহসী বিশ্ব অস্তিত্ব লাভ করে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীদের তাদের পছন্দকৃত স্বামী গ্রহণের পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান করেন।
কন্যাসন্তান হত্যা নিষিদ্ধ করেন। উপরন্তু কন্যা, মেয়ে, বোন লালনপালকারীদের জান্নাত লাভের সুসংবাদ দেনÑ ‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত।’
উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আমরা যৌক্তিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তা ছিল যুগান্তকারী ও বৈপ্লবিক। মদিনায় তাঁর প্রতিষ্ঠিত সমাজ কাঠামোতে যে শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছিল পৃথিবীর অন্য কোনো সমাজে তার নজির পাওয়া মুশকিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষা ও আদর্শের অনুসরণে খুলাফায়ে রাশিদিন যে সমাজব্যবস্থা কায়েম করেন তা ছিল পুরোপুরি সুবিচার ও ন্যায় ইনসাফনির্ভর। মানুষের প্রতি ন্যায়বিচারের যে নজির রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়ার বুকে স্থাপন করে গেছেন, তার আলোকশিখা এখনো পৃথিবীতে অনির্বাণ।
লেখক : প্রবন্ধকার

Check Also

গাড়িচাপায় বুয়েট শিক্ষার্থী মাসুদের মৃত্যু ‘হত্যাকাণ্ড’

প্রাইভেটকার চাপায় বুয়েট শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদের মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ বর্ণনা করে দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ৬ দফা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।