স্টাফ রিপোর্টারঃ
- অবশেষে বহ অপকর্মের হোতা, এলাকার ত্রাস, অসংখ্য মামলার আসামী, সন্ত্রাসী দিদার হোসেন (৩২), পুলিশের খাঁচায় বন্দী। নারী নির্যাতন মামলায় কালিগঞ্জ থানা পুলিশ শুক্রবার( ২৮ জুন) দুপুরে তাকে আটক করেছে। সে কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাঁচাই গ্রামের মৃত মাদার আলী মোড়লের পুত্র। মাদার আলী মোড়লের দুই স্ত্রীর মধ্যে শেষ পক্ষের সন্তান দিদার।
তার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন কুমার পাল বাচ্চুকে প্রকাশ্য বাজার ফেলে মারপিট, ঘের ব্যাবসায়ী শ্রীধরকাটি গ্রামের গহর আলী শেখের পুত্র শেখ আব্দুস সালাম, চাঁচাই গ্রামের বিশিষ চিকিৎসক ডাঃ আব্দুল হামিদকে মারপিট ও অপদাস্ত করা, মুকুন্দ মধু সুদনপুর গ্রামের শাহমত আলী শেখের পুত্র শেখ আব্দুল করিমকে বেধড়ক মারপিট করা। এছাড়াও চাঁদাবাজি, ঘের দখল, জমি দখল ও নারী কেলেঙ্কারীসসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ঘের ডাকাতি, চুরি, ছিনতাইয়ের মত গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সে অল্প বয়স থেকে অপরাধ জগতে জড়িত রয়েছে বলে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য নিরঞ্জন কুমার পাল বাচ্চুসহ তার দারা ক্ষতিগ্রস্থ ব্যাক্তিবর্গ এ প্রতিনিধিকে জানান। তারা আরও জানান, দিনমজুর পরিবারের সন্তান দিদার কোনো কাজকর্ম না করলেও চলনে বলনে রাজকীয় হাল। এলাকার সহজ সরল মানুষকে মামলায় জড়ানো ও পুলিশের ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করা তার মুল ব্যবসা। দিদার একটি ডায়াং (৮০সিসি) মটর সাইকেল চালিয়ে দাপটিয়ে বেড়ায়, সেটা ছিনতাই করে আনা বলে জনশ্রুতি রয়েছে, যার কাগজপত্র ও নম্বর নেই । তার ভাই আব্দুল কাদের মোড়ল (৩৮) জাল কাগজপত্র আর জাল সনদে বিষ্ণুপুর ইউপির ২ নং ওয়াডের গ্রাম পুলিশ হিসাবে চাকুরী নিয়েছে, যা অবৈধ। সন্ত্রাসী দিদারের যথাযথ শাস্তির জন্য ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে জোর দাবী উঠেছে। তার বিরুদ্ধে গৃহবধূকে শ্লীলতাহানী ও উত্যক্ত করার বিষয়টি নতুন নয়। সর্বশেষ কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মেয়ে ও খুলনা জেলার ঢাকুরিয়া গ্রামের গৃহবধুকে বাবার বাড়িতে যৌন হয়রানীর চেষ্টা করে। ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর মা জানান, গত ৫ বছর পূর্বে তার মেয়েকে খুলনা জেলার ঢাকুরিয়া গ্রামে বিয়ে দেওয়া হয়। সংসার জীবনে তার মেয়ের চার বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। তার মেয়ে ও মেয়ের জামাই সুখে শান্তিতে বর্তমানে বসবাস করছে। কিন্তু বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাঁচাই গ্রামের মৃত মাদার মোড়লের বখাটে ছেলে, এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী দিদার মোড়ল তার মেয়ের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে প্রায়ই সময় ফোন করে অশ্লীল কথাবার্তাসহ কু-প্রস্তাব দিতে থাকে। বিষয়টি আমার মেয়ে আমাদের জানালে আমরা একধিকবার দিদার মোড়লকে নিষেধ করলে সে আমাদের জীবননাশের হুমকি দিতে থাকে। এরপর গত ১৭ জুন (সোমবার) আমার মেয়ে আমার বাড়িতে বেড়াতে আসলে ওই বখাটে দিদার আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে রাস্তা ঘাটে দেখলে উত্যক্ত করাসহ কু-প্রস্তাব দেয়। রাত-বিরাতে প্রতিনিয়ত আমার বাড়িতে এসে আমার মেয়ের ঘরের দরজায় শব্দ করে। সর্বশেষ গত ২৩ জুন (রবিবার) রাত ১১.৫০ ঘটিকার দিকে বাড়িতে অবস্থান কালিন সময়ে বখাটে দিদার মোড়ল রাতের আধারে আমার বাড়িতে এসে আমার মেয়ের ঘরের দরজায় শব্দ করে। এসময় আমার মেয়ে ঘরের দরজা খোলার সাথে সাথে বখাটে দিদার মোড়ল তার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্য আমার মেয়েকে জাপটিয়ে ধরে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। আমার মেয়ের চিৎকারে আমরাসহ স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে বখাটে দিদার মোড়ল আমার মেয়েকে ভয়ভীতি প্রদান করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে শুক্রবার (২৮ জুন) রাতে আমি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে রাতে পুলিশ দিদারকে আটক করে থানায় দিয়ে আসে।
তার আটকের বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুর রহমান খাঁনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন নারী নির্যাতন মামলায় দিদারকে আটক করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ এসেছে, যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।