রিফাত হত্যাকাণ্ড : মুখোমুখি দুই প্রভাবশালী নেতার দ্বন্ধের জের!

ক্রাইমর্বাতা রিপোট : বরগুনায় রিফাত শরীফের খুনিরা রাজনৈতিক পরিচয়েই ক্ষমতাধর। বরগুনা জেলার প্রভাবশালী দুই রাজনৈতিক নেতা হলেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র  দেবনাথ শম্ভু এবং একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন। এ দুই আওয়ামী লীগ নেতার দ্বন্দ্বের বিষয়টিও বরগুনাবাসীর জানা। নৌকার প্রার্থী হয়েও একবার দেলোয়ার হোসেনের কাছে সংসদ নির্বাচনে হেরেছেন শম্ভু। আলোচিত এ দুই প্রভাবশালী নেতার মধ্যে চরম বিরোধ থাকলেও নিজেদের প্রভাব বিস্তারে এ দুইজনের কাঁধেই ভর করেছিল রিফাত হত্যার মূল আসামি নয়ন বন্ড, রিফাত ও রিশান ফরাজী। হত্যা মামলার মূল আসামিরা বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের চিরচেনা দুই প্রতিপক্ষের ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়ে ওঠার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ বরগুনায় এখন টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে।

বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর পক্ষের লোকজনের অভিযোগ, রিফাতের হত্যাকারী রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী বর্তমান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে। দেলোয়ার হোসেনের প্রশ্রয়েই এ দুই ভাই রিফাত হত্যার মতো অপরাধে দুঃসাহসী হয়ে ওঠে।

অন্যদিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে দেলোয়ার হোসেন দাবি করেছেন, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে এবং জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথের ছত্রছায়ায় রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ডসহ অন্যরা বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে বলে তিনি শুনেছেন।

বরগুনা সরকারি কলেজের দক্ষিণ-পশ্চিমে বরগুনা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে নয়ন বন্ডের বাসা। নয়নের বাবা মৃত ছিদ্দিকুর রহমান। দুই ভাইয়ের মধ্যে নয়ন ছোট। নয়নের বড় ভাই মিরাজ দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুরে শ্রমিকের কাজ করেন। মাকে নিয়েই ওই বাসায় বসবাস করছিল নয়ন। নয়ন নিজেও ছাত্রলীগের সমর্থক; কিন্তু সক্রিয় কর্মী নয়। তার পদও নেই। তবে অভিযোগ রয়েছে তার পৃষ্ঠপোষক সংসদ সদস্য শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ। এর আগে জেলা ছাত্রলীগের একাংশ সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছিল সুনাম মাদক কারবারি। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে রিপোর্টও প্রকাশিত হয়েছিল। যেহেতু নয়ন মাদক কারবারি, তাই সুনামের সঙ্গে তার যোগসূত্রের কথা খোদ স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাই বলছেন। তারা বলছেন, রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় না থাকলে এত বড় অঘটন ঘটানো সম্ভব নয়। তাছাড়া একাধিক মামলার আসামি প্রকাশ্যে আসতেও পারে না।

রিফাত হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি রিফাত ফরাজী ও তার ভাই রিশান ফরাজী বরগুনা সদর উপজেলার রায়েরতবক গ্রামের দুলাল ফরাজীর ছেলে। দুলাল ফরাজী সাবেক জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মরহুম লতিফ ফরাজীর ভাতিজা। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে তারা। মামলার অন্যতম প্রধান আসামি হলেও পুলিশ তাদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। রিফাতের বিরুদ্ধে মাদক কারবারের অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে বরগুনা সদর থানায় অন্তত চারটি মামলা রয়েছে। বরগুনা সরকারি কলেজে বখাটেপনার দায়ে পুলিশ তাকে দুইবার আটক করেছিল। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা না দেয়ায় পুলিশ মুচলেকা রেখে রিফাতকে ছেড়ে দেয়। সমপ্রতি জেলা পরিষদের ডাকবাংলোয় রিফাত ঘটা করে জন্মদিন পালন করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামলার চার নম্বর আসামি চন্দন ও ছয় নম্বর আসামি মো. রাব্বি আকন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তারা জেলা ছাত্রলীগের সদস্য। এ ছাড়া কিলিং মিশনে অংশ নেয়া আরেক যুবক সুহার্ত, বরগুনা জেলা যুবলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন সাবুর ছেলে। গ্রুপ ০০৭ থেকে ফাঁস হওয়া এক ছবিতে তাকে রামদা হাতে বসে থাকতে দেখা গেছে। বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিকের সঙ্গে অভিযুক্তদের বিভিন্ন সময়ে ঘনিষ্ঠভাবে দেখা গেছে। তাছাড়া কিলিং মিশনে অংশ নেয়া অন্যান্য আসামিরাও জুবায়ের আদনান অনিকের অনুসারী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ছাত্রলীগের বিভিন্ন মিটিং মিছিলে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।

রিফাত হত্যার পর গত ২৭শে জুন হত্যাকারীদের ফাঁসি চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন সুনাম দেবনাথ। এতে তিনি রিফাত হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামি রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীকে বর্তমান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে উল্লেখ করে এ দুই ভাইয়ের বিভিন্ন সময়ে ঘটানো কিছু অপকর্মের চিত্র তুলে ধরেন। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে দেলোয়ার হোসেনের কাছে গেলে তিনি অভিযোগকারীদের নানাভাবে অপদস্থ করতেন। আর তার এমন প্রশ্রয়ে ওই দুই ভাই এতো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তবে সুনাম দেবনাথের এ ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে কথা উঠলে তিনি স্ট্যাটাসটি ‘হাইড’ করে ফেলেন।

এদিকে সুনাম দেবনাথের ফেসবুক স্ট্যাটাস নজর এড়ায়নি দেলোয়ার হোসেনের। এ নিয়ে শুক্রবার রাতে বরগুনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এ সময় তিনি হত্যাকারীদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করেন এবং হত্যাকারীদের ফাঁসি চান।
২৭শে জুন হ্যাশট্যাগ দিয়ে ফেসবুকে সুনাম দেবনাথ লিখেন, ‘আমার ভাইয়ের জীবন গেলো রক্ত-স্রোত-বন্যায়/ক্ষমতাধরের ভায়রার ছেলে, মুখ খোলা তাই অন্যায়!’ এরপর তিনি লিখেন, ‘প্রথমেই আমরা স্পষ্ট হবো নাম নিয়ে। কারণ যে মারা গেছে আর যারা মেরেছে তাদের নাম এক হওয়াতে আমরা গুলিয়ে ফেলছি। কাকতালীয়ভাবে দুইজনের বাবার নামও এক। যে ছেলেটিকে হত্যা করা হলো তার নাম রিফাত শরীফ, পিতার নাম দুলাল শরীফ, সাং: ৬ নং ইউনিয়ন। আর হত্যাকারীদের মধ্যে প্রধান হচ্ছে নয়ন এবং তার সহযোগী হচ্ছে রিফাত ফরাজী, পিতা দুলাল ফরাজী, সাং বরগুনা ধানসিঁড়ি রোড এবং আরেক সহযোগী হচ্ছে রিফাতের ছোট ভাই রিশান ফরাজী, পিতা ও সাং: ওই। এই রিফাত ও রিশানের অন্য এক পরিচয় রয়েছে, তারা দুইজনই সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমান জেলা চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে। যারা আদর করে তাকে (দেলোয়ার হোসেন) বাবা বলেই সম্বোধন করে।’

সুনাম দেবনাথের স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে, ‘নয়ন (নয়ন বন্ড) সব থেকে বেশি নজরে এসেছে তখন, যখন সে একটি বড় ধরনের মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল। প্রায় ১২ লাখ টাকার মাদক নয়নের কাছ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। রিফাত ফরাজীর বিভিন্ন অপকর্মের নালিশ থানায় দেয়ার পাশাপাশি তার খালু জেলা চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের কাছেও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বারবার নালিশকারীদের সেখান থেকে অপমান, অপদস্থ হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। মূলত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রভাবেই তারা অনেকটাই বেপরোয়া।’

স্ট্যাটাসটিতে সুনাম দেবনাথ উল্লেখ করেন, “যে ছেলেটির (তরিকুলের) ঘটনা প্রথমেই বলেছি, সে বর্তমান ঘটনার (রিফাত হত্যা) প্রেক্ষিতে ফেসবুকে লিখেছে, ‘২০১৭-তে আমার ঘটনার বিচার হলে আজ রিফাতের প্রাণ হারাতে হতো না’। লেখাটি কতটা গুরুত্ববহ, এখন আমরা বুঝতে পারছি।” সুনাম দেবনাথের দাবি, ‘রিফাত শরীফ আমাদের খুব কাছের ছোট ভাই ও কর্মী ছিল। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের সঙ্গে থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা করেছে। নিজের কাছে খুব খারাপ লাগছে, রিফাতের মৃত্যু সংবাদে। তবে এ খুনের পেছনে আরো অনেক রহস্য আছে। বিভিন্ন মিডিয়ায় যাকে এখন হিরো বানানো হচ্ছে; মূল ভিলেন সে নিজেও হতে পারে। রিফাত শরীফের বন্ধুদের থেকে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে, তাতে এটাই বোঝা যায়, আর একটু সময় পার হলে হয়তো আরো ক্লিয়ার হওয়া যাবে।’

ফেসবুকে এ স্ট্যাটাসের ব্যাপারে সুনাম দেবনাথ বলেন, ‘আমি স্ট্যাটাসে যা লিখেছিলাম, সেটা দিনের আলোর মতো সত্য। আমি বলেছিলাম, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে। আমি কোথাও বলিনি, তিনি খুনি বা তার নির্দেশে এই খুন হয়েছে।’ ‘আমাদের কাছে নয়ন, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আসতো, তখন তার (দেলোয়ার হোসেন) কাছে পাঠালে তিনি বিচার না করে বরং উল্টো আমাকে নিয়ে বাজে কথা বলতেন। কিন্তু সেই সময় যদি উনি তার ভায়রার ছেলেদের সঠিক বিচার করতেন, তাহলে আজকে তারা আর এত বড় অপরাধ করার সাহস পেতো না।’
আপনার ছত্রছায়ায় নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী বিভিন্ন অপকর্ম করতো, বিভিন্ন সময় আপনি তাদের শেল্টার দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে, এ কথার জবাবে সুনাম দেবনাথ বলেন, ‘দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক বিরোধিতা দীর্ঘদিনের, সেটা বরগুনাবাসী জানে। এক্ষেত্রে তার লোকজনকে প্রশ্রয় দেয়ার তো প্রশ্নই আসে না। বরং বিভিন্ন সময় আমি তাদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। কিন্তু তারা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আবার বের হয়ে যেত।’

অপরদিকে, সুনাম দেবনাথের স্ট্যাটাসের জের ধরে শুক্রবার রাতে বরগুনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘রিফাত হত্যার ঘটনায় জড়িতদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এই খুনের মূলহোতা নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী। ফেসবুকে দেখি, আমাকে নিয়ে একটা নোংরা খেলা শুরু হয়েছে। কারণ রিফাত ফরাজী আমার আত্মীয়। ওদের সঙ্গে আমার কোনো রক্তের সম্পর্ক নেই। ওরা আমার ছেলেও না, ভাইও না, ভাইয়ের ছেলেও না, বোনের ছেলেও না, কিচ্ছু না। বিয়ের সূত্রে রিফাত আমার আত্মীয়। এমন অনেক আত্মীয় থাকে সবারই। তারা কেউ ভালো হয়, কেউ খারাপ হয়, কেউ চোর হয়, কেউ সন্ত্রাসী হয়, ডাকাত হয়। সুতরাং এখানে আমার ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়ার কারণটা কী, আমি ঠিক বুঝতে পারি না। আমি এদের কোনোদিন প্রশ্রয় দিইনি।’

সুনাম দেবনাথের ফেসবুক স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ওদের (রিফাত ফরাজী ও রোশান ফরাজী) সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই গত ৪-৫ বছর ধরে; কোনো সম্পর্কই নেই।’
আপনার কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে আপনি নাকি অভিযোগকারীদের অপমান-অপদস্থ করতেন, এ প্রশ্নের জবাবে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট কথা।’ এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমি নয়ন বন্ডকে চিনি না। কিন্তু শুনেছি, এই নয়ন নাকি সুনামের শিষ্য। সুনামের নেতৃত্বেই নয়নরা বিভিন্ন অপকর্ম করতো।’

এ ছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু সূত্র জানায়, বিভিন্ন মামলায় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী কারাগারে গেলে মোতালেব মিয়া ও হুমায়ন কবির পল্টু নামের দুই আইনজীবীর মাধ্যমে তারা শিগগিরই মুক্ত হয়ে যেত। এই দুই আইনজীবী দেলোয়ার হোসেনের খুব কাছের লোক।
এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘রিফাত ও রোশান যখন মাদকে জড়ায়, তারপর থেকে আমি ওদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করি। আমার স্ত্রীকেও তাদের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলি।’ তাদের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবেই কোনো সম্পর্ক নেই। ডাকবাংলোয় রিফাতের জন্মদিন পালন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে অবগত নই।
গ্রেপ্তার আরো ৩
এদিকে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আরো তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলো মো. তানভীর, মো. সাগর ও মো. কামরুল হাসান সাইমুন। এর আগে সন্দেহভাজন মো. নাজমুল হাসান ও এজাহারে নাম থাকা চন্দন ও মো. হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। সব মিলে এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

গতকাল দুপুরে বরগুনার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন এসব তথ্য জানান। এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, ‘আসামি ধরা ঘণ্টাব্যাপী বা সেকেন্ডব্যাপী হয় না। টেকনিক্যাল অনেক বিষয় আছে? আসামি কোথায় আছে না আছে? কখন নক করলে আসামিকে আমি সুবিধাজনকভাবে ধরতে পারবো, নাকি আসামি পালিয়ে যাবে; এরকম অনেক বিষয় থাকে। তার মানে এটা না যে এত ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আসামি ধরলাম না, বা আসামি আমাদের নজরদারির বাইরে চলে গেছে বা আমাদের গাফিলতি আছে। আমরা রাতদিন বিষয়টি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমার আস্থা আছে, আমার টিমের প্রতি, আমার কাজের প্রতি, তাই আমি কনফিডেন্টলি বলতে পারি; আমরা শিগগিরই আসামি ধরতো পারবো।’

এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কতজনকে আটক করা হয়েছে জানতে চাইলে এসপি বলেন, ‘এটা এই মুহূর্তে বলা যাবে না, কারণ অনেকেই গোপনে আমাদের কাছে এসে ইনফরমেশন দিচ্ছেন। আবার অনেককেই আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনছি, এই বিষয়টি আপাতত গোপন থাক।

এ সময় তিনি পুলিশ কনস্টেবল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ রিফাত হত্যায় পরিকল্পনাকারী গ্রুপের সদস্য সাগরের বিষয়ে বলেন, ‘সে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু, আমরা যখন জানতে পারি, এই গ্রুপে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, তখনই তাকে গ্রেপ্তার করি। মিডিয়া জেনেছে আজকে, কিন্তু আমরা তাকে আগেই গ্রেপ্তার করেছি। শনিবার দিবাগত রাতে বরিশালের নানার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। maj

Check Also

সাতক্ষীরায় ৪ গ্যালন ফরমালিন পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ গ্যালন ফরমালিন পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। তবে এসময় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।