ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ভেসে আসা আরও পাঁচ জেলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন জায়গা থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঝড়ের কবলে পড়ে সমুদ্রে ডুবে যাওয়া মাছ ধরার ট্রলারের জেলে ছিলেন তারা। এ নিয়ে ট্রলারডুবির ঘটনায় ১১ জনের লাশ উদ্ধার করা হলো।
গতকাল উদ্ধার করা ৫ লাশের মধ্যে হিমছড়ি থেকে ১ জন, মহেশখালী থেকে একজন এবং শহরের সমতিপাড়া পয়েন্ট থেকে তিন জনকে উদ্ধার করা হয়। লাশগুলো ফুলেফেঁপে বিকৃত হয়ে গেছে। তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ মৃতদেহ চারটি লাশ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রেখেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সাগরে টানা ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকলেও গত ৪ জুলাই চরফ্যাশনের ১৭ জেলে ট্রলার নিয়ে মাছ ধরতে যায়। ঝড়ের কবলে পড়ে দুদিন পরই ৬ জুলাই ট্রলারটি সাগরে ডুবে যায়।
গত বুধবার কক্সবাজার শহরের সমুদ্রসৈকতের সি-গাল পয়েন্টে ছয় জেলের লাশ ভেসে আসে। এ সময় দুজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা হলেন- মনির মাঝি (রাসেল-৩০) ও জুয়েল (৩০)। তাদের সবার বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়ে ২৯ জেলে নিয়ে মাছ ধরার দুটি ট্রলার ডুবে যাওয়ার পর থেকেই তারা সবাই নিখোঁজ ছিলেন। বেশ কয়েকজন জেলে এখনও নিখোঁজ।
দুলারহাট থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনীর সদস্য ও স্থানীয়রা তাদের খোঁজে নদী ও সাগরে অভিযান চালাচ্ছিলেন। ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসপি ফখরুল করিম বলেন, বুধবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা সৈকতের সিগন্যাল পয়েন্টে একটি ভাসমান ট্রলার দেখতে পায়। পরে সেখানে গিয়ে ট্রলারটির আশপাশে চারটি লাশ ভাসমান অবস্থায় এবং দুটি লাশ ট্রলারের পাটাতনের ওপর পড়ে থাকতে দেখা যায়।
উদ্ধার হওয়া জেলে মোহাম্মদ মনির মাঝি ও মোহাম্মদ জুয়েল জানান, সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে তাদের ট্রলার বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে। পরে সেটি ভাঙাচোরা অবস্থায় জোয়ারের ধাক্কায় ভেসে কক্সবাজার উপকূলে চলে আসে। মনির মাঝির নেতৃত্বে মাছ শিকারে যাওয়া ১৫ জেলের মধ্যে ১২ জনের নাম জানা গেছে।
তারা হলেন- মো. মনির মাঝি (৩০), মো জুয়েল (৩০), জিহাদ হোসেন (২৫), মাকসুদ (২৮), সেলিম (৩২), বাবুল (৩৫), অলিউদ্দিন (২৭), বেলায়েত হোসেন (৩১), অজিউল্লা (২৭), কামাল (২৬), জাহাঙ্গীর (৩৪) এবং তছির (৩৩)।
শাজাহান মাঝির ট্রলারে যে ১৪ জন জেলে ছিলেন, তাদের পরিচয় আগেই জানা গেছে। এর আগে সাগরের অন্য জেলেরা বলেছেন, তারা শাজাহানা মাঝির ট্রলারটি ডুবে যেতে দেখেছেন।