বিদ্যুৎ বিলের কাগজ দেখিয়ে কলেজছাত্রীকে বিয়ে!

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  কলেজছাত্রীকে তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী বলে দাবি করলেন যুবক। বিষয়টি অস্বীকার করায় সেই কলেজছাত্রীর বাবার কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন কথিত স্বামী।

কথিত স্বামীর দাবি, ওই কলেজছাত্রীই তার স্ত্রী ছিলেন। দুজনে ভালোবেসে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেছেন।

কিন্তু কলেজছাত্রীর ভাষ্য, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি। তালাক তো দূরের কথা বিয়েই হয়নি তাদের। এমনকি এর আগে তার সঙ্গে ওই ব্যক্তির পরিচয়ও ছিল না।

এমন অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার পোড়াদিয়া গ্রামে।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার কথিত স্বামী খাইরুল আলম ওরফে সাব্বির খান ও তার চার সহযোগীবিরুদ্ধে নরসিংদীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন কলেজছাত্রী।

মামলার ১ নং আসামি সাব্বির খান বেলাবো উপজেলার পোড়াদিয়া গ্রামের আইয়ুব খানের ছেলে। বাকি আসামিরা হলেন- একই উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত করম আলীর ছেলে কাশেম, জাহিদুর রহমান ও মোমেন।

মামলার বাদী পোড়াদিয়া কারিগরি মহাবিদ্যালয়ের ডিপ্লোমা কোর্সের চতুর্থ পর্বের ছাত্রী কনা আক্তার।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, বাড়ির বিদ্যুৎ বিল বেশি আসায় বিষয়টি নিয়ে কলেজছাত্রীর বাবা আলাউদ্দিন স্থানীয় অধিবাসী সাব্বির খানের সঙ্গে আলোচনা করেন। সাব্বির বিলটি সংশোধন করে দেয়ার দায়িত্ব নেন। বিষয়টি সমাধানে দুদিন তার বাড়ি যান সাব্বির। ওই সময় বিল সংশোধনের জন্য সাদা কাগজে একটি আবেদনপত্রে কলেজছাত্রী স্বাক্ষরসহ, তার ও তার বাবার দুই কপি করে ছবি নেয় সাব্বির।

মামলায কলেজছাত্রী কনা আক্তারের দাবি, ওই স্বাক্ষর জাল করে নরসিংদী নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে এসে বিয়ের কাগজ তৈরি করেন সাব্বির। তিনি বিয়ের দিন নোটারি পাবলিকে যাননি। এমনকি বিয়ের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরও করেননি বলে জানান কনা আক্তার।

কলেজছাত্রী কনার বাবা আলাউদ্দিন বলেন, সাব্বির আমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এ জালিয়াতি করেছে। আমি বিদ্যুৎ বিল সংশোধনের জন্য তার কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু জাল স্বাক্ষর ও প্রতারণা করে কাগজে-কলমে আমার মেয়েকে বিয়ে করেছে সাব্বির।

এ বিষয়ে উপজেলা কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে অভিযোগ দিয়েও বিচার পাননি বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, আর কোথাও কোনো বিচার না পেয়ে আদালতের দারস্থ হয়েছি আমরা।

তবে স্বাক্ষর জাল করে বিয়ে করার অভিযোগ অস্বীকার করে খাইরুল আলম সাব্বির বলেন, কনার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব ছিল। সেখান থেকেই ভালোবাসা হয় আমাদের। তারপর আমরা নোটারি পাবলিকে গিয়ে বিয়ে করি। পরে সে হঠাৎই আমাকে ডিভোর্স দেয়। এখন তারা বৈধ সব কাগজপত্রও অস্বীকার করছে।

তিনি আরও বলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে উপজেলা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিলে আমি প্রমাণ দেখাই। সেখানে না পেরে এখন তারা আদালতে মামলা করেছে।

বিদ্যুত বিলের প্রসঙ্গে অভিযুক্ত সাব্বির আরও বলেন, আমি নিঃস্বার্থভাবে তার বাবার বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে দিয়েছিলান। আবাসিক স্থলের বিল বানিজ্যিক হিসেবে ধরা হয়েছিল সেখানে। তা আমি ঠিক করে দেই। কোনো প্রতারণা করিনি আমি।

আদালতের বিচারক কনা আক্তারের করা মামলাটি গ্রহণ করে বেলাবো থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

Check Also

ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

আবুল হোসেন সদর প্রতিনিধি : ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।