????????????????????????????????????

বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে বন্যায় ভোগান্তি

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ চলমান বন্যায় এরই মধ্যে অন্তত ২৮ জেলার মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গত এক থেকে দুই সপ্তাহ ধরে চলছে মানুষের ভোগান্তি। বানের পানি কমার লক্ষণ এখনও নেই, এমনকি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ আরও ২-৩টি জেলার নিুাঞ্চল বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যেসব জেলা ইতিমধ্যে বন্যার কবলে পড়েছে, সেখানকার মানুষের ভোগান্তির পাশাপাশি ফসল ও গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতি, গ্রামীণ সড়ক ডুবে যাওয়া এবং ওইসব জেলার স্কুলগুলোতে পাঠদান বন্ধ হয়ে পড়েছে।

এ অবস্থায় পরিস্থিতি যেন আরও খারাপ না হয় সেজন্য আগাম ব্যবস্থা নিয়ে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ বন্যাকবলিত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটের পাশাপাশি বন্যাজনিত নদীভাঙনে শত শত বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। এরই মধ্যে অন্তত ৬ জনের প্রাণহানির খবরও পাওয়া গেছে।

বন্যায় কেবল মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি ফসল ও গবাদিপশুর ক্ষতি হয় তাই নয়, বন্যার সময় পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব, বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব, রান্নাবান্নার কষ্টসহ নানা সমস্যায় ভুগতে হয়। এমনকি ফসলহানির কারণে চাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামেও এর প্রভাব পড়ে। দু’বছর আগে হাওর অঞ্চলে বন্যার সময় চালের দাম আকাশছোঁয়ার নজির রয়েছে। চলমান বন্যায়ও দেশের উত্তরাঞ্চলে সবজির দাম চড়া।

এর প্রভাব পড়েছে গোটা দেশের বাজারে। খোদ রাজধানীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সবচেয়ে বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম- কেজিপ্রতি ৫০ টাকা। শুক্রবারও রাজধানীর বাজারগুলোতে কেজিপ্রতি কাঁচামরিচ ২০০ থেকে ২২০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বন্যার পানির কারণে নদীর স্রোত তীব্র হওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে যানজট তৈরি হয়ে ট্রাকের পণ্যে পচন ধরার খবরও পাওয়া গেছে।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি) বলেছে, চলমান বন্যায় দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ৪০ লাখের বেশি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তা ও রোগের ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। এ অবস্থায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় আগাম ব্যবস্থা রাখার বিকল্প নেই। কারণ ভাটির দেশ হিসেবে বন্যা প্রতি বছর যেন আমাদের নিত্যঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমাদের দেশে প্রায় প্রতি বছরই বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, মৌসুমি বায়ু, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর মধ্যে বন্যার কারণেই মানুষকে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় বাঁধ মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও তৈরিসহ দুর্যোগ থেকে রক্ষার কার্যক্রমগুলো চলে ঢিমেতালে। সমস্যা গভীর না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বশীল পক্ষের টনক তো নড়েই না; উপরন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তাদের অনিয়ম-অবহেলায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়ে।

গত বৃহস্পতিবার রাতেই তো টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর-তারাকান্দি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ও ৭-৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়। আশার কথা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় তথা সরকার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বন্যা মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকায় প্রয়োজনীয় টাকা, চাল, শুকনো খাবার ও তাঁবু পাঠানো হচ্ছে। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরও অগ্রগতি কাম্য। দুর্যোগের ওপর যেহেতু কারও হাত নেই, সেহেতু কীভাবে এর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে।

Check Also

ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

আবুল হোসেন সদর প্রতিনিধি : ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।