ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ : কদিন পরেই ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা সামনে রেখে সাতক্ষীরায় কামারদের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে। কামারশালাগুলোতে নতুন দা, বঁটি, ছুরি, কোপা ও চাপাতি তৈরির পাশাপাশি চলছে পুরাতন অস্ত্রে শান দেয়ার কাজ। তাই এ সময়ে দম ফেলার সময় নেই কামারদের। সকাল থেকে গভীর রাত অবধি চলছে কামারদের কর্মব্যস্ততা। কোরবানির পশু জবাই ও মাংস টুকরো করতে ধারালো অস্ত্রই একমাত্র ভরসা। হাপরের হাঁস-ফাঁস আর হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দ জানান দিচ্ছে ঈদের আগমনি বার্তা। শহরের সরকারি কলেজ রোড এলাকার কর্মকার মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘চাপাতি, দাঁ, বঁটি, চাকু তৈরি এবং পুরোনো অস্ত্রে শান দিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছি। কোরবানি ঈদের সময় কাজটা বেশি হয়’। ইটাগাছা এলাকার নিশিকান্ত কর্মকার (৫৫) বলেন, ‘বিগত ৩৫ বছর ধরে এ কাজে নিয়োজিত আছি। কুরবানি ঈদ এলেই দা, বঁটি, ছুরি চাপাতি ইত্যাদি শান দেওয়া ও বিক্রি করার ব্যস্ততা বেড়ে যায়। তবে বছরের বাকি সময়টা বেশির ভাগই বসে থাকতে হয়। তিনি আরও বলেন, ছোট ছুরি বা চাপাতি তৈরি করতে সময় লাগে ৩০-৩৫ মিনিট। দাঁ/চাপাতি বানাতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। আগুনের পাশে দিনে প্রায় ১৬ ঘণ্টা কাজ করেও ন্যায্য পারিশ্রমিক পাইনা। হিমসিম খাচ্ছি সংসার চালাতে’। কলারোয়া যুগিখালীর নিতাই কর্মকার বলেন, ‘কামার শিল্প অনেক পুরোনো, বংশ পরম্পরায় এ কাজের সাথে জড়িত। এ শিল্পের প্রধান উপকরণ লোহা, ইস্পাত ও কয়লা। বর্তমানে লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি। ক্রেতারা দুষছেন আমাদের ফলে আমরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তাছাড়া দিন দিন কয়লার দু®প্রাপ্যতা বেড়েই চলেছে’। চাপাতি তৈরি করতে আসা আফজাল হোসেন বলেন, ‘কুরবানি ঈদ উপলক্ষে ছুরি চাপাতি বানাতে আসলাম এবং পুরানো গুলো শান দেওয়ার জন্য এনেছি। তবে এবছর নতুন চাপাতি তৈরি করতে খরচ একটু বেশি লাগছে। ঈদ আসলেই সুযোগটা ধরে নেয় কামাররা’। কালিগঞ্জ ভাড়াশিমলা এলাকার সমীর কর্মকার বলেন, ‘লোহা ইস্পাতসহ সকল প্রকার কর্ম সামগ্রী সাতক্ষীরা থেকে কিনে আনি। এলাকার কাজের অর্ডারের থেকে বেশি অর্ডার পাই পাইকার ও খুচরা দোকানিদের থেকে। বেশিরভাগ দা, বটি, ছুরি, চাপাতি আমরা পাইকারের কাছে বিক্রি করি’। এখন অল্পস্বল্প বেচা-কেনা শুরু হলেও ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই বিক্রি আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে’। সাধারণত শহরের বিভিন্ন এলাকার কামারদের অর্ডার দিয়েই তারা এসব সরঞ্জামাদি তৈরি করে থাকেন। দম ফেলার ফুসরত নেই কামারদের। আব্বাস হোসেন নামে আরেক বিক্রেতা জানান, ‘কাঁচা লোহায় তৈরি করা চামড়া ছাড়ানোর ছোট সাইজের ছুরি বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকায় আর তা যদি লোহার স্প্রিং দিয়ে তৈরি হয় তাহলে বিক্রি হয় ১শ ৩০ থেকে ১শ ৫০ টাকায়। পশু জবাইয়ের ছুরি ৫শ’ থেকে শুরু করে হাজার টাকায়, বটি ৩শ থেকে শুরু করে ৫শ টাকায় এবং চাপাতি ৭শ’ থেকে শুরু করে ১২শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়’।
Check Also
আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …