ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুমন পোদ্দারকে লাঞ্ছিত করেছেন শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
রোববার বিকালে এ ঘটনার পর আহত ডা. সুমন কুমার পোদ্দার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, কোনো লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেনি। সুমনের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে সে মিথ্যা অভিযোগ করছে।
ডা. সুমন পোদ্দার জানান, গত আইন-শৃঙ্খলা সভায় তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ উত্থাপন করেন শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে। এ বিষয়ে রোববার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে সুমন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দেকে ফোন করে কথা বলতে চায়।
এ সময় অনল কুমার দে জেলা শহরের নিপুর ক্লিনিক সংলগ্ন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সবুজ দত্তের দোকানে ডা. সুমনকে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর সুমন পোদ্দারের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সভায় অভিযোগ করা নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়।
ডা. সুমন জানান, কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে অনল কুমার দে একটি পানির গ্লাস ছুড়ে মারে এবং সুমনের গলা টিপে ধরেন। এ সময় অনল কুমার দের সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগের সাবেক ২-৩ জন নেতা তাকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে তাকে মারতে মারতে দোকানের বাইরে রাস্তায় চলে আসার পর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।
স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। বর্তমানে ডা. সুমন পোদ্দার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ডা. সুমন কুমার পোদ্দারের বড় ভাই রঘুনাথ পোদ্দার বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দেসহ সবুজ দত্ত, জাহাঙ্গির ও ডালিম মিলে আমার ভাইকে মারধর করেছে। আমি আবেগতাড়িত হয়ে কিছু বলতে পারি। অনল কুমার দে একজন সম্মানিত ব্যক্তি যে কাজ করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য।
শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে বলেন, ডা. সুমনের সঙ্গে আমার কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। সুমন উত্তেজিত হয়ে আসলে আমি তাকে হাত দিয়ে সরিয়ে দিয়েছি। এর পর শুধু কথা-কাটাকাটি হয়েছে। এর বেশি কিছু নয়। এর পর সুমনের বড় ভাই রঘুনাথ পোদ্দার আমার সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে কথা বলেন।
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডা. খলিলুর রহমান বলেন, একটি সার্টিফিকেট নিয়ে বিরোধের জের ধরে সুমন পোদ্দারকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমারদে মারধর করেছেন বলে জানিয়েছেন সুমন পোদ্দার। এ বিষয়ে এখনো অনল কমার দের সঙ্গে কথা হয়নি।
পালং মডেল থানার ওসি মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, আমরা হামলার কথা শুনেছি। এখনো তার পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দাখিল করেনি। মামলা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।