ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শুভাষিনী ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান হোসেন বাপ্পী এবং তেঁতুলিয় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল কর্তৃক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর প্রতিবাদে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের ক্লাজ বর্জন এর ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২৪ জুলাই ) সকালে এঘটনায় শুভাষিনী কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা “ইভটিজিং মুক্ত কলেজ ক্যাম্পাস চাই, কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি বাপ্পীর বর্হিস্কার চাই এবং ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই শ্লো গানে শ্লো গানে কলেজ ক্যাম্পাস মুখরিত করে তোলে। এসময় কলেজ শিক্ষকরা তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন বাপ্পীকে সাময়িক বর্হিস্কার ঘোষনা করেছেন এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কলেজ গভার্ণিং বডির মিটিং করে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলে তারপর কলেজ ক্যাম্পাস শান্ত হয়।
কলেজ শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, প্রথম বর্ষের ছাত্র মনিরুল ইসলাম, ২য় বর্ষের ছাত্র হাদিউজ্জামান, মাসুম হোসেন, ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন, ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাসুদ রানা পিয়াস। এসময় শিক্ষদের পক্ষে প্রভাষক কামরুল ইসলাম, সহকারী প্রভাষক প্রণব কুমার সাহা প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ইমরান হোসেন বাপ্পী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে একের পর এক অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তার অপকর্মে কলেজ শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরাসহ এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ্য হয়ে উঠেছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, নারী কেলেঙ্কারী ও মারপিঠের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। বাপ্পীর অপকর্মে অতীতে কয়েকবার শালিশ হয়েছে এবং ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে গেছে।
কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ায় দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সম্পতি সে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সালকে নিয়ে শনিবার (২১ জুলাই ) সকালে কলেজে প্রবেশ করে এবং শহীদ মিনার চত্ত¡রে দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর নিকট পানি খাইতে চাইলে সে পানি দিতে গেলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল তার গায়ের উড়না টেনে নিয়ে অসৌজন্য মূলক আচরন করে এসময় কলেজ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করতে গেলে তোপারে মুখে টিকতে না পেরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এরপর বাপ্পী এবং ফয়সাল কলেজ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি অব্যহত রেখেছে বলে বক্তারা জানিয়েছেন।
এসময় শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচী ও দাবীর মুখে পরিস্থিতি শান্ত করার লক্ষে বাপ্পী ও ফয়সালের এহেনও অপকর্মের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সরদার রফিকুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এম এম মকবুল হোসেন, ছাত্রলীগের সাবেক কলেজ শাখার সভাপতি আক্তারুজ্জামান বিপ্লাব প্রমুখ।
তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সাদী জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। এব্যাপারে দ্রæত তদন্ত করা হবে এবং তদন্তে বাপ্পী এবং ফয়সাল দোষী হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
শুভাষিনী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ কামরুল ইসলাম সেলিম জানান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের দাবী যৌক্তিক। বাপ্পী অতীতে এর থেকেও মারাত্মক অপকর্ম করেছে যা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কলেজ সভাপতির উপস্থিতিতে শালিশের মাধ্য ক্ষমা চেয়ে নেয়। কিন্তু তার পরেও সে শুধরায়নি বরং আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বাপ্পীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সাতদিনের ভিতরে তদন্তপুর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।