আনুলিয়ায় অপহরণ মামলার বাদী ও স্বাক্ষীকে খুন, জখমের হুমকি ও মিথ্যা ডাকাতি মামলায় হয়রানির চেষ্টার অভিযোগ

ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট:   আশাশুনির আনুলিয়ায় অপহরণ মামলার বাদী ও স্বাক্ষীকে খুন, জখমের হুমকি ও মিথ্যা ডাকাতি মামলায় হয়রানির চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন আশাশুনি বাগালী গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর পুত্র শামছুর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, জমি জমা সংক্রান্ত বিষয়ে একই এলাকার ওজিয়ার সানার পুত্র খলিল সানা, আবু তাহের সানা, ওইতুল সানার সাথে বিরোধ চলে আসছিল। তারা বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এর জের ধরে গত ২০১৪ সালের আমার কন্যা লালুয়া বাগালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ শ্রেণির ছাত্রীর পিছনে স্থানীয় সোবহানা সানার পুত্র বখাটে যুবক জাহিদুল কে লেলিয়ে দেয়। সে প্রায়ই আমার কন্যার স্কুল যাওয়ার পথে ইভটেজিং করা শুরু করে। এবিষয় নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে সে সময় শালিশী বৈঠকের মাধ্যমে আর আমার কন্যাকে বিরক্ত করবে না মর্মে লিখিত দেয় জাহিদুল। কিন্তু ২ বছর পর আমার কন্যার এস এস সি পরীক্ষার মাত্র কয়েকদিনপূর্বে ১৯ জানুয়ারী ওই বখাটে জাহিদুল আমার কন্যাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বিষয়টি আমি জানতে পেরে খোজ খবর করে জাহিদুলের কবল থেকে আমার কন্যাকে ১৩ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার করি। উদ্ধার করতে পারলেও ২ ফেব্রুয়ারী পরীক্ষা শুরু হওয়ার কারণে আমার কন্যার আর এস এস সি পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। কিন্তু সে সময় আমার কন্যার সম্মানের দিকে তাকিয়ে আর মামলা করিনি। পরবর্তীতে ২৭ মে ২১ রমজান ওই বখাটে জাহিদুল আবারো আমার কন্যাকে অপহরণ করে নিয়ে ওই ওজিয়ার সানার বাড়িতে রাখে যায়। এঘটনায় আমি বাদী হয়ে আশাশুনি থানায় মামলা দায়ের করলে থানা পুলিশ আমার কন্যাকে উদ্ধারের উদ্দেশ্যে বের হলে খলিল সানা কৌশলে আমার কন্যাকে জাহিদুলের বাড়িতে তুলে দেই। আশাশুনি থানা পুলিশ সেখান থেকে আমার কন্যাকে উদ্ধার করতে পারলেও জাহিদুলসহ অন্যান্য আসামীদের আটক করতে পারেননি। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে।
পরবর্তীতে ওই মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য ওজিয়ার সানার পুত্র খলিল সানা, আবু তাহের সানা, ওইতুল সানা, বাবু, মৃত. মোজাহার সানার পুত্র মুত্তাজুল গং আমাকে এবং মামলার স্বাক্ষীদের খুন জখমের হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের হুমকিতে আমি এবং মামলার স্বাক্ষীরা ভীতু না হওয়ায় তারা আমাদের মিথ্যা মামলা হয়রানির পায়তারা চালাতে থাকে। একপর্যায়ে গত ২৪/৭/২০১৯ তারিখে খলিল সানার মাছের হাচ্যারীর হালখাতা অনুষ্ঠিত হয়। পরের দিন সকালে থানা গিয়ে খলিল সানা অভিযোগ করে তাদের হালখাতার টাকা ডাকাতি হয়ে এবং আমাকে ১নং আসামী এবং স্বাক্ষীদের আসামী করে মিথ্যা ডাকাতি মামলা দায়েরের চেষ্টা করেন। কিন্তু থানা পুলিশ তাদের মামলা রেকর্ড না করলেও তারা থেমে থাকেনি। তারা জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আমার এবং মামলার স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রেকর্ডের। ইতোপূর্বে তারা মসজিদ চত্বরে আমাকে মারপিট করে গুরুতর আহত করেছিল। ওই খলিল সানার পিতা অত্র এলাকার একজন চিহ্নিত মামলাবাজ। তিনি প্রায় ডজন খানেক মামলার আসামী।
আমি একজন অসহায় কন্যার পিতা। গত বছর খলিল সানা এবং ওই বখাটের কারনে আমার কন্যার এস এস সি পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। এবারেও পরীক্ষার সময় আসার পূর্বেই একই ধরনের পায়তারা চালাচ্ছে। এতে আমি যাতে কোন বাধা না থাকে সে কারণে আমার এবং মামলার স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ডাকাতি মামলা দায়েরের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্র সফল হলে আমার কন্যার জীবন নষ্টের সাথে সাথে আমিসহ কয়েকজন নিরিহ মানুষ মিথ্যা মামলায় হয়রানি হবো। বর্তমান সময়ে একটি মেয়ের জীবন নিয়ে এভাবে একের পর ষড়যন্ত্রকারীদের এখনই রুখতে না পারলে না জানি আরো কত মেয়ের জীবন এভাবে ধ্বংস হবে। আমি একজন অসহায় কন্যার পিতা হিসেবে ওই বখাটে জাহিদুল এবং তার নেতৃত্বদানকারী খলিল সানাসহ তার ভাইদের হাত থেকে আমার কন্যাকে রক্ষা ও আমাদের জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

 

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।