ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য মিয়ানমার সরকারের ওপর নতুন করে চাপ দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি বলেন, হয় রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিন নতুবা তাদের আলাদা রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ দিন। বর্তমানে তিনি তুরস্ক সফরে রয়েছেন। সেখানেই তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদলুকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই আহ্বান জানান মাহাথির। সাক্ষাৎকারে আধুনিক মালয়েশিয়ার এই কারিগর বলেন, মিয়ানমারের উচিৎ রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে দেখা। অন্যথায় দেশটির উচিৎ রোহিঙ্গাদের নিজেদের রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ সৃষ্টি করা। ড. মাহাথির মোহাম্মদ আরো বলেন, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো ইচ্ছা মালয়েশিয়ার নেই। কিন্তু মিয়ানমারে যেভাবে হত্যাযজ্ঞ বা গণহত্যা ঘটছে, তার প্রেক্ষিতেই মালয়েশিয়া-এর বিরোধিতা করছে।
তিনি জানান, এক সময় ভিন্ন ভিন্ন অনেকগুলো অঙ্গরাজ্য নিয়ে মিয়ানমার গড়ে উঠেছে। কিন্তু বৃটিশরা মিয়ানমারকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে শাসন করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর এভাবেই মিয়ানমারে বিভিন্ন উপজাতিগোষ্ঠী এক মিয়ানমারের ভিতর অঙ্গীভূত হয়। কিন্তু এখন তাদের নাগরিক হিসেবে দেখা উচিত। অথবা তাদের নিজেদের আলাদা রাষ্ট্র গঠন করতে দেয়া উচিত।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা শুরু করে সেদেশের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধদের উগ্রপন্থী একটি দল। ফলে বাধ্য হয়ে কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ এ নৃশংসতাকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এ সময়ে ব্যাপকহারে গণধর্ষণ হয় বলেও রিপোর্ট দিয়েছে জাতিসংঘ।
সাক্ষাৎকারে চীনের উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি এ সমস্যা আইনের মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলতে চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। মাহাথির বলেন, মালয়েশিয়া সব সময়ই সমঝোতা, আইনের মাধ্যমে সব বিরোধ মিটিয়ে ফেলার পক্ষে পরামর্শ দেয়। চীনকে আমাদের বলা উচিত এসব মানুষকে নাগরিক মেনে নিয়ে তাদের সঙ্গে সেভাবেই ব্যবহার করতে। যদিও তাদের ধর্ম আলাদা, কিন্তু শুধুমাত্র এ কারণেই তাদের সঙ্গে আলাদাভাবে আচরণ করা উচিত নয়। যখন আপনি সহিংসতা বেছে নেন, তখন সুষ্ঠু সমাধান অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। এমন কোনো ঘটনা নেই যেখানে সহিংসতা ভালো কিছু অর্জন করেছে। তার কাছে তুরস্কের ফেতুল্লাহ টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ড. মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, যেকোনো দেশে বিদ্রোহকে সমর্থন করে না মালয়েশিয়া।