তরিকুল ইসলাম তারেক, যশোর:
আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যশোরের কোরবানির পশু ‘পালসার বাবু’, ‘সোনামণি’ ও ‘সুলতান’। মানুষের মুখে মুখে এদের নাম। তিনটি নাম মানুষের হলেও আদতে এগুলো কোরবানির গরু। এরই মধ্যে এসব গরু নিয়ে চলছে আলোচনা। পাশাপাশি এসব গরুর মালিকদের নিয়েও চলছে আলোচনা। গরুর মালিকদের বাড়িতে এখন শত শত মানুষের ভিড়। কেউ আসছেন গরু দেখতে, কেউ আসছেন কিনতে। এরই মধ্যে পালসার বাবুর মালিক ঘোষণা দিয়েছেন ক্রেতাকে বিনামূল্যে পালসার মোটরসাইকেল উপহার দেবেন।
জানা যায়, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ইত্যা গ্রামের গরু ব্যবসায়ী ইয়াহিয়া মোল্যা তিন বছর ধরে একটি বাচ্চা ষাঁড় সন্তানের মতো লালন-পালন করে বড় করেছেন। ষাঁড়টির নাম দিয়েছেন পালসার বাবু। ওই নামেই বাড়ির সবাই তাকে ডাকে। এবারের কোরবানিতে গরুটি বিক্রি করতে চান তিনি। ইয়াহিয়া ষাঁড়টির দাম হেঁকেছেন ১২ লাখ টাকা। ক্রেতাকে গরুর সঙ্গে পালসার মোটরসাইকেল উপহার দেয়ার ঘোষণাও করেছেন তিনি। ১২ লাখ টাকার এ গরু দেখার জন্য ইয়াহিয়ার বাড়িতে এখন মানুষের ঢল নেমেছে। সেই সঙ্গে ওই গরুর সঙ্গে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করছেন কেউ কেউ। ইয়াহিয়ার বাড়িতে গরুটি দেখতে আসা উপজেলার ঘুঘুরাইল গ্রামের মমতাজ হোসেন বলেন, শুনলাম গরু কিনলে পালসার ফ্রি। এ কথা শুনে কৌতূহল জাগে মনে। তাই গরুটি দেখতে এসেছি। উপজেলার ঘুঘুরাইল গ্রামের ইনতাজ আলী বলেন, লোকমুখে ১২ লাখ টাকার গরুর কথা শুনে আইছি। এত বড় গরু জীবনে প্রথম দেখলাম।পালসার বাবুর মালিক ইয়াহিয়া বলেন, ‘আমি গরু ব্যবসায়ী। ১৯৯৬ সাল থেকে একটা করে শংকর জাতের গরু পুষে আসছি। তিন বছর আগে ৪৫ হাজার টাকায় হলেস্টিয়ান জাতের এই ষাঁড়টি কিনি। শখ করে এর নাম দিয়েছি পালসার বাবু। গত বছর গরুটি কিনতে ঢাকা থেকে অনেকেই এসেছিলেন। বিক্রি করিনি। গত এক বছরে গরুটি বেশ বড় হয়েছে। প্রায় ২০ মণ মাংস আছে তার গায়ে। এখন পর্যন্ত এর দাম আট লাখ টাকা উঠেছে। তবে ১২ লাখ টাকার নিচে বিক্রি করব না। এ দামে কেউ গরুটি কিনে নিলে ক্রেতাকে খুশি হয়ে পালসার মোটরসাইকেল উপহার দেব।’ এদিকে দুর্গাপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিন বছর আগে বাড়িতে একটি পাকিস্তানি শাওয়াল গাভি পালন করেন তিনি। ওই গাভি একটি এঁড়ে বাছুর জন্ম দেয়। আদর করে বাছুরটিকে বাড়ির সবাই সুলতান বলে ডাকা শুরু করে। গায়ের রঙ কালো, প্রায় ১০ ফুট লম্বা ২৪ মাস বয়সী সুলতানের ওজন প্রায় সাড়ে ১৫ মণ। সুলতানের মালিক শরিফুল ইসলাম বলেন, আমার খুব শখের গরু সুলতান। ওকে আমি কখনো পশু ভাবিনি। ওকে আমার পরিবারের সদস্য বলে মনে করি। আমরা সবাই সুলতানকে খুবই ভালোবাসি। সুলতানকে ভাত, কলা, কাঁচা ঘাসসহ বিভিন্ন দেশি ফল খাওয়ানো হয়েছে। সঙ্গে থাকে পশুর প্রয়োজনীয় সব খাবার। তার থাকার জায়গায় একটি ফ্যান লাগিয়ে দিয়েছি। পবিত্র কোরবানির ঈদে সুলতানকে বিক্রি করব আমি। গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক সদর আলী দেশি জাতের একটি গাভি পোষেন। সেই গাভি একটি ষাঁড়ের বাচ্চা দেয়। বাচ্চাটি সদর আলী দম্পতি প্রায় ৪০ মাস ধরে লালন-পালন করে বড় করেছেন। আদর করে বাড়ি ও প্রতিবেশীরা ষাঁড়টিকে সোনামণি বলে ডাকে। কালো রঙের পাঁচ ফুট উচ্চতা ও ১২ ফুট লম্বা সোনামণির ওজন প্রায় ১২ মণ। সোনামণির মালিক সদর আলী বলেন, আদর-যতœ দিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী সোনামণিকে বড় করে তুলেছি। কোরবানির ঈদে গরুটি বিক্রি করব। আশা করছি, গরুটি পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি হবে।#
বেনাপোল থেকে ট্রেনে যাওয়া যাবে কলকাতা
তরিকুল ইসলাম তারেক, যশোর: খুলনা-কলকাতা রুটে সরাসরি চলাচলকারী ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ ট্রেনে বেনাপোল স্টেশন থেকেও কলকাতা যাওয়া যাবে। ৮ আগস্ট থেকে এ সুবিধা চালু হচ্ছে। ওই দিন বেনাপোল স্টেশন থেকে টিকিট কেটে সরাসরি কলকাতায় যেতে পারবেন যাত্রীরা। রেলওয়ের মহাপরিচালক সামসুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের বেনাপোল স্টেশন ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন, এখন বেনাপোল স্টেশন থেকেই যাত্রীরা বন্ধন ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে কলকাতা যেতে পারবেন। তবে তাদের খুলনা-কলকাতা রুটের ভাড়াই দিতে হবে। এক্ষেত্রে এসি বগিতে টিকিটপ্রতি যাত্রীদের খরচ হবে দুই হাজার টাকা এবং নন-এসির জন্য এক হাজার ৫০০ টাকা। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, আগে প্রতি বৃহস্পতিবার খুলনা থেকে বেনাপোল হয়ে কলকাতা যেতে শুধু খুলনা ও যশোর থেকে টিকিট কেটে ট্রেনে উঠতে হতো। কিন্তু এখন বেনাপোল স্টেশন থেকেই টিকিট কেটে সরাসরি কলকাতা যাওয়া যাবে। বেনাপোল নাগরিক কমিটির সম্পাদক আলহাজ নুরুজ্জামান বলেন, খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস যখন চালু হয় তখন থেকে বেনাপোলবাসীর দাবি ছিল তারাও এই ট্রেনে বেনাপোল স্টেশন থেকে কলকাতা যাবেন। দীর্ঘদিন পর সেই দাবি পূরণ হতে চলছে জেনে খুব ভালো লাগছে। ভাড়াটা অনেক বেশি হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাধারণ যাত্রীরা ভারতের পেট্রাপোল থেকে ২৫ রুপি দিয়ে বনগাঁ রেল স্টেশনে যান। সেখান থেকে শিয়ালদহ স্টেশন যেতে লাগে মাত্র ২০ রুপি। সেক্ষেত্রে বন্ধন এক্সপ্রেসের ভাড়াটা অনেক বেশি হয়ে গেছে। ভাড়া সহনীয় পর্যায় না আনলে বেনাপোল স্টেশনে যাত্রী না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।#