ক্রাইমবার্তা ডেস্করিডোটঃ ১২ ঘন্টায় ঢাকায় ডেঙ্গু রোগে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ডেঙ্গু জ্বরে রক্তের প্লাল্টিলেট কমে যাওয়ায় তাদের মৃত্যু হয়। মৃতরা হচ্ছেন, আমজাদ মন্ডল (৫২), মনোয়ারা বেগম (৭৫), মোহাম্মদ হানিফ (৪০), ইতালি প্রবাসী হাফসা লিপি (৩৪), নকুল কুমার দাস (৪৫) ও মদিনা (৬)।
আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৬টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামে) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আমজাদ মন্ডল। তিনি মানকিগঞ্জের একজন কৃষক। গত শুক্রবার ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। পরে তাকে মানিকগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে গত ৫ই আগস্ট রাতে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার তেতুয়াা ধারাগ্রামের আবদুল হামিদের ছেলে।
আজ ভোর ৪টায় একই হাসপাতালে মৃত্যু হয় মনোয়ারা বেগমের। ৩রা আগস্ট ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মনোয়ারা বেগমকে। তার চার দিন আগে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। চিকিৎসা দিলেও দ্রুত তার রক্তের প্লাটিলেট কমতে থাকে। এই অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়। মনোয়ারা বেগম চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের আহমেদপুরের আবদুল হাই’র স্ত্রী। তিনি পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় থাকতেন।
তার আগে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা যান নুকুল কুমার দাস নামে এক ডেঙ্গু রোগীর। হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিন জানান, সোমবার বিকেলে তিনি জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাসপাতালের ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টারে (ওসিসি) তিনি মারা যান। তার বাড়ি রাজধানীর শনির আখড়ায়। নকুল কুমার দাস স্থানীয় একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।
একইভাবে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাতে হয়েছে ইতালি প্রবাসী হাফসা লিপিকে। স্বামী-সন্তান নিয়ে দেশে বেড়াতে এসেছিলেন তিনি। কথা ছিলো ছুটি কাটিয়ে আবারও ফিরে যাবেন। কিন্তু তার আর ইতালি যাওয়া হয়নি। ডেঙ্গুজ¦রে আক্রান্ত হয়ে সোমবার দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে মারা যান লিপি। স্বামী সন্তান নিয়ে তিনি রাজধানীর কলাবাগানের একটি বাসায় ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে।
সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে মুগদা হাসপাতালে মারা গেছেন মোহাম্মদ হানিফ নামে এক রোগী। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চার দিন আগে মুগদা হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। অবস্থার অবনতি ঘটলে তার মৃত্যু হয়।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে শিশু মদিনা। সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ধানমন্ডির একটি প্রাইভেট হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। শিশুটি কেজি ওয়ানের ছাত্রী। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় মদিনাকে। সেখানে থেকে তাকে পাঠানো হয় চাঁদপুর সদর হাসপাতালে। অবস্থার গুরুতর হলে চাঁদপুর থেকে পাঠিয়ে দেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু ঢামেক হাসপাতালে আইসিইউতে সিট সঙ্কুলান না হওয়ায় ধানমন্ডির প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এই শিশুকে। মতলব উত্তর উপজেলার উত্তরের ছেংগারচর পৌরসভার ছোট ঝিনাইয়া গ্রামের শিশু মদিনা।