কাশ্মীর পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে পুরো বিশ্বকে ভুগতে হবে: ইমরান খান

ক্রাইমর্বাতা রিপোট:   কাশ্মীর সংকটের আরও অবনতির বিরুদ্ধে প্রতিবেশী ভারতকে হুশিয়ারি করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, বিরোধপূর্ণ অঞ্চলটিতে সামনে উত্তেজনা বাড়লে কেউ-ই জয়ী হবে না।

মঙ্গলবার পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, যদি ক্রমবর্ধমান ঘটনাবলি সংঘাতের দিকে যায়, তবে কেউ-ই বিজয়ী হবে না। পুরো বিশ্বসহ দুপক্ষই শেষ পর্যন্ত মারাত্মক পরিণতির মুখোমুখি হবে।

ভারতের পদক্ষেপ কাশ্মীরের আগুনে নতুন করে ইন্ধন দেবে বলেও মন্তব্য করেন ইমরান খান। সাবেক এই ক্রিকেট তারকা বলেন, নির্মম বাহিনী কর্তৃক তাদের অনস্বীকার্য অধিকার ও নিশ্চয়তা কেড়ে নেয়ার বিষয়টি তারা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।

পাকিস্তানভিত্তিক পিটিভিকে তিনি বলেন, এতে কাশ্মীরি প্রতিরোধ আরও বেশি উসকে দেবে এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে।

কাশ্মীরের ঘটনাকে তিনি জাতিসংঘে তুলে ধরার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) অধীন দেশটির সংখ্যালঘুদের প্রতি বর্ণবাদী আচরণ করা হচ্ছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে জার্মানিতে নাৎসিদের প্রতি ব্রিটেনের নীতি উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন, শান্তির নীতি কার্যকর হবে না-বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বুঝতে হবে। তাই বিশ্বের কাছে আমার আকুল আবেদন, এ বিষয়টিতে নজর দেয়ার।

ভারতের সংবিধানে অধিকৃত কাশ্মীরকে যে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছিল, তা তুলে নেয়ার পর থেকে দেশের অন্যান্য জায়গার সঙ্গে অঞ্চলটির যোগাযোগ একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।

রোববার সন্ধ্যা থেকে বন্ধ করা ইন্টারনেট ও টেলিফোন নেটওয়ার্ক এখনও সচল হয়নি; উপত্যকাটির বিভিন্ন সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাজার হাজার সদস্যের টহল অব্যাহত আছে।

বিবিসি বলছে, সংবিধানের ওই বিশেষ মর্যাদা বাতিলের ঘটনা কাশ্মীরজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের বিস্ফোরণ ঘটাবে বলে ধারণা করা হলেও মানুষ সেখানে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে তার কোনো খবর মিলছে না।

স্থানীয় নেতারা এখনও আটকাবস্থাতেই আছেন।

১৯৪৭-এর পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই হিমালয় অঞ্চলের কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করে এলেও নয়া দিল্লি ও ইসলামাবাদ এখন অঞ্চলটির আলাদা দুটি অংশের নিয়ন্ত্রক।

ভারতশাসিত অংশে দীর্ঘদিন ধরেই বিচ্ছিন্নতাবাদী বিভিন্ন সংগঠনের তৎপরতাও দেখা গেছে, যাতে প্রাণ হারিয়েছে হাজার হাজার লোক।

শ্রীনগরে বিবিসির প্রতিনিধি আমির পীরজাদা সোমবার দিল্লিতে থাকা সহকর্মীদের সঙ্গে টেলিফোনে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন।

ইমরান খান বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদসহ বিশ্বের প্রতিটি ফোরামে এই ইস্যু নিয়ে আমরা লড়ব। বিষয়টি তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব যদি আজ কোনো পদক্ষেপ না নেয়, যদি উন্নত বিশ্ব নিজেদের আইনকেই সমর্থন না জানায়, তা হলে পরিস্থিতি এমন জায়গায় যাবে, যেটার জন্য আমরা দায়ী থাকব না।

‘ভারত যদি কাশ্মীরিদের ধ্বংস করে দিতে চায়, তবে কাশ্মীরিদের কাছ থেকেও তার প্রতিক্রিয়া আসবে। এতে অঞ্চলিক সহিংসতা আরও বাড়বে। যাতে অতীতে দুই পরমাণু অস্ত্রে সমৃদ্ধ প্রতিবেশী দেশ সংঘাতে জড়িয়েছে।’

Check Also

আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইল বাংলাদেশ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারতকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।