ক্রাইমর্বাতা রিপোট: কাশ্মীরে ভারতের ‘অবৈধ’ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। ভারত শাসিত কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার। এর বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সহ সব দিক থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেছেন, ভারতের ওই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। একই সঙ্গে কাশ্মীরে ভারত জাতি নিধন করবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার একদিন পরেই পুরো জম্মু-কাশ্মীর অচল হয়ে আছে। হিমালয়ের পাদদেশে পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করে ভারত ও পাকিস্তান। তবে তারা প্রত্যেকেই এই অঞ্চলের অংশবিশেষ তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে দীর্ঘদিন ধরে চলছে বিচ্ছিন্নতাবাদী বা স্বাধীনতার আন্দোলন। এ নিয়ে লড়াইয়ে গত তিন দশকেরও বেশি সময়ে মারা গেছেন কয়েক হাজার মানুষ। এসব আন্দোলনকারীদের পাকিস্তান সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ ভারতের। তবে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। তারা বলেছে, যেসব কাশ্মীরি তাদের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে চায় শুধু তাদেরকেই নৈতিক ও কূটনৈতিক সহযোগিতা দিচ্ছে পাকিস্তান।
কি বললেন ইমরান খান?
সোমবার ভারত সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে সে সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে জানাতে চান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। মঙ্গলবার পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের যৌথ অধিবেশন বসে। সেখানে ইমরান খান বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে এখন আমরা পরিস্থিতি সম্পর্কে পর্যালোচনা করছি। এ বিষয়টি আমরা জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে উত্থাপন করবো। প্রতিটি ফোরামে আমরা রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে আলোচনায় এই ইস্যুটি উত্থাপন করবো। আমরা মিডিয়ার কাছে এবং বাকি বিশ্বের কাছে এ বিষয়টি উত্থাপন করব। ইমরান খান আরো বলেন, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের মাধ্যমে ভারত সংখ্যাগরিষ্ঠ ওই রাজ্যের জনসংখ্যাতত্ত্বকে পাল্টে দেবে। তার ভাষায়, আমার ভয় হয় এই ভেবে যে, ভারত এখন কাশ্মীরে জাতি নিধন শুরু করবে। তারা স্থানীয় জনগণকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে অন্যদের নিয়ে যাবে এবং তাদেরকে সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ দেখাবে, যাতে স্থানীয়রা তাদের কাছে দাস হয়ে যান। এর আগে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বলেছেন, তার সেনারা কাশ্মীরিদের সংগ্রামের পাশে আছে। অন্যদিকে ভারদের পদক্ষেপকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যায়িত করে এ বিরোধিতা করেছে প্রতিবেশী চীন।
আসলে কি ঘটছে?
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে টেলিফোন ও মিডিয়া ব্লাকআউট রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে কারফিউ। সরকারের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তে বড় রকমের প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখা দিতে পারে এমন আশঙ্কায় জোরপূর্বক এসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি গলিয়ে রাজ্যের ভিতরে শ্রীনগরে একটি স্থানে অবস্থান নিতে সক্ষম হয়েছেন বিবিসির সাংবাদিক আমির পীরজাদা। তিনি বলছেন, সর্বত্র ক্ষোভের লক্ষণ আছে। যাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন, তারা মনে করছেন তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে। ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়েছে। স্থানীয় নেতাদের আগেই আটক করা হয়েছে। ভারতের অন্যান্য স্থানে যেসব কাশ্মীরি আছেন, তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করার আগে ভারত সরকার সেখানে অতিরিক্ত কমপক্ষে ২৫ হাজার সেনা মোতায়েন করে।