ক্রাইমর্বাতা রির্পোট: নারী কেলেঙ্কারির দায়ে ফেঁসে গেলেন জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীর। আজই তাকে ডিসি পদ থেকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে নেয়া হবে বিভাগীয় ব্যবস্থা। একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ডিসি পদ থেকে প্রত্যাহার হওয়ার পর বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১৮তম ব্যাচের এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, জামালপুরের ডিসি’র ঘটনা সর্ম্পকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পুরোপুরি অবগত আছে। বিষয়টি আমরা দেখছি। দুই এক দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর ও একজন নারীর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে ডিসি আহমেদ কবীরের সঙ্গে তার কার্যালয়ের এক নারী কর্মীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। এ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর তোলপাড় শুরু হয় সর্বত্র। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠে।
তবে ঘটনা অস্বীকার করে ভিডিওটি সাজানো বলে দাবি করেছেন জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর। ৪ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর তার অফিসের গোপনীয় কক্ষের বেডরুমে এক নারী কর্মচারীকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে খেতে ওই কক্ষের ইলেকট্রিক লাইটের সুইচ অফ করছেন। এছাড়া ওই নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায়ও দেখা যায় তাকে। ফুটেজে দেখা গেছে সিএ এম-২ ক্যামেরায় এটি ধারণ করা হয়েছে। তাই বুঝা যায় সিসি ক্যামেরায় নয়, ভিডিওটি গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে। এদিকে ওই নারীর সঙ্গে ডিসির সম্পর্ক এতটাই ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠে যে, অফিস সহায়ক হলেও তিনি খবরদারি চালাতেন সবার সঙ্গে। তার ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে অফিসের কর্মীদের মধ্যে কেউ ওই রুমে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করে থাকতে পারেন বলে অন্যদের ধারণা।
আর তাতেই ধরা পড়ে বিশ্রাম রুমে ডিসির আপত্তিকর ভিডিও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলা পর্যায়ের সর্বোচ্চ পদধারী এই সরকারি কর্মকর্তা তার অফিসেই একজন নারীর সঙ্গে অবৈধ মেলামেশার এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘খন্দকার সোহেল আহমেদ’ নামের একটি পেজ থেকে আপলোড হয় গত ১৫ই আগস্ট বিকালের দিকে। যদিও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি ও ৩ আগস্টের। ফেসবুক আইডি থেকে এটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে ব্যাপকহারে নজরে আসতে থাকে ফেসবুক আইডি ব্যবহারকারীদের কাছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল তোলপাড় এবং ধিক্কারের ঝড় ওঠে। রাত ১২টায় ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর নিজেকে বাঁচাতে তার ঘনিষ্ঠ ঊর্ধ্বতন কর্মকতাসহ এক সাংবাদিক নেতাকে নিয়ে রাতভর মিটিং করেন ডিসি। ভোর ৬টায় মিটিং শেষে সবাই জেলা প্রশাসকের বাসভবন থেকে বেরিয়ে যান। গত শুক্রবার ভোররাত থেকে রহস্যজনক কারণে ওই আইডির ওয়াল থেকে ভিডিও লিঙ্কটি সরিয়ে নেয়ায় সন্দেহ আরো দানা বেঁধে উঠেছে। নিজ অফিস কক্ষে একজন নারীর সঙ্গে জেলা প্রশাসকের অবৈধ মেলামেশার এই ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় বিভিন্ন সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার কর্তাব্যক্তিদেরও এ নিয়ে বেশ তৎপর থাকতে দেখা যায়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডিসি আহমেদ কবীর জামালপুরে যোগদান করেন ২০১৭ সালের ২৭শে মে। যোগদানের কিছুদিন পর থেকেই তিনি তার অফিস কক্ষের পাশে ছোট্ট একটি কক্ষে ধূমপান ও ব্যক্তিগত কাজের জন্য ব্যবহার করে আসছেন। সমপ্রতি ওই কক্ষে বিশ্রাম নেয়ার জন্য একটি খাট বসানো হয়েছে। তাতে বিশ্রাম নেয়ার মতো বালিশ, চাদর সবকিছুই আছে। সমপ্রতি ওই কক্ষে একাধিক নারীর যাতায়াতকে কেন্দ্র করে গোটা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সেখানে একজন নারীর সঙ্গে জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের অবৈধ মেলামেশার ভিডিওটি ফেসবুকে, ফেসবুক থেকে ডাউনলোড করে মেসেঞ্জারে, মোবাইল থেকে মোবাইলে এবং ইমেইেলে ছড়িয়ে পড়ায় আগে শোনা সেই গুঞ্জন শেষ পর্যন্ত বাস্তবে রূপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করছেন অনেকে। এ বিষয়ে ডিসি আহমেদ কবীর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের ডেকে বলেন, তিনি মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত। প্রকৃত ঘটনা জানতে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভিডিওর বিষয়ে তিনি বলেন, এটি একটি সাজানো ভিডিও। একটি হ্যাকার গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করলেও তিনি গুরুত্ব দেননি। এরপরই বানোয়াট ভিডিওটি একটি ফেক আইডি থেকে পোস্ট দেয়া হয়। তবে ভিডিওটিতে দেখানো কক্ষটি অফিসের ভেতরে ডিসির বিশ্রাম নেওয়ার কক্ষ ও ভিডিওর ওই নারী তার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক বলে স্বীকার করেন তিনি। বিষয়টি সর্ম্পকে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই ভিডিও ভাইরালের খবর তিনি শুনেছেন। ঘটনা সঠিক হলে তা খুবই ন্যক্কারজনক। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। মাজ
https://youtu.be/SGCmfQ63pfU