আমি বাঁচতে চাই না: সাধনা: সেই ডিসি

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  অফিস সহায়কের সঙ্গে জামালপুরের সাবেক ডিসি আহমেদ কবীরের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিওর প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। গত ২৪শে আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠানো এক প্রতিবেদনে  এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। ওই প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনার জানান, প্রতিবেদনের বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় কমিশনার নিজে জামালপুর জেলার একজন সংসদ সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেন। সংসদ সদস্য আহমেদ কবিরের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ করেন। তাই বিভাগীয় কমিশনার তার প্রতিবেদনের শেষ দিকে বলেন, প্রকাশিত ভিডিওটির প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে। তাই ডিসি আহমেদ কবিরকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হলো। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের এ কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে সোচ্চার সবাই। তারাও চান এমন কর্মকর্তাকে যেন সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানিয়েছেন, জামালপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি চাকরিচ্যুতও হতে পারেন।

গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকের বিষয়ে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে। অতীতে সেভাবে কাউকে শাস্তি পেতেও দেখা যায়নি। জামালপুরের ডিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি, শাস্তি হবে ইনশাআল্লাহ। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রিসভায় কোনো আলোচনা হয়নি।

তিনি বলেন, যদি তদন্তে (অভিযোগ) প্রমাণিত না হয় তবে কাউকে শাস্তি দেয়া কঠিন। আমরা এজন্য কমিটি করেছি। কমিটি দেখবে এটা। অবজেক্টটিভলি দেখবে, নিরপেক্ষভাবে দেখবে। টেকনিক্যালি এটার মধ্যে যদি কোনো ম্যানুপুলেশন থাকে তারা সেটাও যাচাই করবে এক্সপার্ট দিয়ে। সেজন্য এক্সপার্টও সঙ্গে রাখা হয়েছে। যদি দোষী সাব্যস্ত হয় তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কী ধরনের শাস্তি হতে পারে-জানতে চাইলে শফিউল আলম বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ডিসিপ্লিন অ্যান্ড আপিল রুল যেটা- সেখানে ডিসমিসাল হতে পারে চাকরি থেকে (চাকরিচ্যুতি), রিমুভাল হতে পারে অথবা নিচের পদে নামিয়ে দেয়া হতে পারে। গুরুদণ্ড হতে পারে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কার্যপরিধির বাইরেও যদি কোনো ইনফরমেশন চলে আসে তবে গঠিত তদন্ত কমিটি বলতে পারে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগও আছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠিত কমিটির তদন্তের ভিত্তিতে আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে।

এদিকে ঘটনায় জড়িত অফিস সহকারী সানজিদা ইয়াসমিন সাধনার আপত্তিকর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ওই নারীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে হঠাৎ করে সোমবার জেলা প্রশাসকের অফিসে হাজির হন। এ সময় তার হাতে একটি ছুটির দরখাস্ত দেখা যায়। ভিডিও’র বিষয়ে জানতে চাইলে সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা সাংবাদিকদের বলেন, এসব কিভাবে হল আমি কিছুই জানি না। আমি বাঁচতে চাই না, আমার সন্তানের জন্য আমাকে বাঁচান। তিনি বলেন, স্যারের কোন দোষ নেই। এক পর্যায়ে অফিসেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে ছুটির আবেদন রেখে তিনি অফিস ত্যাগ করেন।

Check Also

মেজরিটি–মাইনরিটি মানি না, এ দেশের নাগরিক প্রত্যেকে সমমর্যাদাবান: ডা শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা সাফ বলেছি, মেজরিটি-মাইনরিটি মানি না। এ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।