ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গদাইপুরের রাজাকার মোজাহার সরদারের ছেলে ধর্ষণ ও হত্যাসহ এক জনেরও বেশি মামলার আসামী খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিম ও তার বাহিনীর সদস্যদের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আশাশুনির কাপষ-া গ্রামের সুন্দর আলী মোড়লের মেয়ে সাজিদা খাতুন সোমবার দুপুর একটায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন তার ভাই রমজান আলী মোড়ল খাজরা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। গদাইপুর গ্রামের যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী রাজাকার মৃত মোজাহার সরদারের ছেলে শাহানেওয়াজ ডালিম সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। তার বড় ভাই মৃত আব্দুল আলিম দীর্ঘ দিন থানা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। সেঝ ভাই জুলফিকার আলী জুলি থানা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও আটটি নাশকতা মামলার আসামী। মেঝ ভাই বাচ্চু গদাইপুর ওয়ার্ডের বিএনপি সভাপতি ও কয়েকটি নাশকতা মামলার আসামী। অপর ভাই টগর জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ও নাশকতা মামলার আসামী। আর এক ভাই ডাবলু কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ি। ডালিমের বাড়িতে জিয়াউর রহমানের নামীয় মাদ্রাসা রয়েছে। ডালিমের বিরুদ্ধে পিরোজপুর গ্রামের ধর্মান্তরিত টুম্পা ধর্ষণ ও হত্যা মামলা, গদাইপুর গ্রামের মহিলা ইউপি সদস্য নাছিমা ধর্ষণ চেষ্টা মামলা , সাতক্ষীরা শহরের কামাননগরের ঠিকাদার শফিউর রহমানের চাঁদাবাজি মামলা, খাজরা গ্রামের আফছার আলীর বাড়িতে চুরির মামলা, দুর্গাপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনর বাড়িতে ডাকাতি মামলা, খাজরা গ্রামের রাহাজান মাষ্টারের দায়েরকৃত চাঁদাবাজির মামলা, তুয়ারডাঙা গ্রামের আনোয়ারুল মেম্বরের দায়েরকৃত চাঁদাবাজি মামলা, ভাই রমজান আলীর দায়েরকৃত দুদোকে মামলা, মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনসহ তিনজনের যৌথভাবে দায়েরকৃত দুদোকের মামলাসহ এক ডজনের বেশি মামলা রয়েছে। তার বাহিনী প্রধান বোমা হামলাসহ কমপক্ষে ৫টি মামলার আসামী অর্থযোগানদাতা কাপষ-া গ্রামের মঈনুল সানা তার খোলপেটুয়া নদীর ধারের বাড়িতে সুন্দরবনের ডাকাতদের আশ্রয় দিয়ে ওই সব ডাকাতদের ডালিম বিরোধীতাকারিদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে হয়রানি করে থাকে। ডালিম বাহিনীর অপর সদস্য চেউটিয়া গ্রামের কবীর হোসেন খালিয়া গ্রামের তারামনী ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামী। সে টুম্পা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার অন্যতম আসামী। এ ছাড়া সে খুলনা জেলার কয়রা থানার ধর্ষণ মামলার আসামী। ডালিম বাহিনীর অন্যতম সদস্য কাপষ-া গ্রামের বিএনপি নেতা সাত্তার গাজী মনিপুর গ্রামের রফিকুল হত্যা, ডাকাতি ও নাশকতাসহ কমপক্ষে ৩০ মামলার আসামী। ডালিম বাহিনী সদস্য চেউটিয়া ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আনিছুর রহমান জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি সাতক্ষীরার আমানউল্লাহ আমান হত্যা মামলার আসামী। এ ছাড়া নাশকতাসহ কয়েকটি মাদক মামলা রয়েছে আনিছুরের বিরুদ্ধে। সদস্য আজিজুল ইসলাম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে নাশকতা, মাদক ও চুরিসহ কমপক্ষে ১০টি মামলা রয়েছে। সদস্য লিটুর বিরুদ্ধে কমপক্ষে পাঁচটি চুরি, নাশকতা ও মাদক মামলা রয়েছে। ডালিম বাহিনীর সদস্য চেউটিয়া গ্রামের মিলন সরদার ডালিমের ছত্রছায়ায় থেকে রমরমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১০টি মামলা রয়েছে। ডালিম ও তার বাহিনীর অত্যাচারে প্রতিবাদ করতে যেয়ে কেউ বা হাত, কেউ বা পা হারিয়েছেন। আবার অনেকে মিথ্যা মামলা নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
প্রিয় সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার ও নির্যাতনের প্রতিকার করতে যেয়ে চেয়ারম্যান ডালিম তার (সাজিদা) ভাই ও তার কাছের মানুষদের নামে একের পর এক হামলা ও মামলা করিয়েছেন। ডালিমের ঘের কর্মচারী আরিফ ভিজিএফ এর চালসহ গ্রেপ্তার হওয়ায় তার ভাই রমজানের উপর হামলা করে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষ ডালিম বাহিনীর সদস্য মিলন, কবীর, সাত্তার, সামাদ, লিটু, আজিজুলসহ কয়েকজনকে পিটিয়েছে। সর্বোপরি আমার ভাইসহ কয়েকজনের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। নিজেদের দোষ ঢাকতে ভাই রমজানের বিরুদ্ধে কবীরের ছেলে বাবুকে দিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন করিয়েছে। জামিন পাওয়ার পরও সে পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রমজান ও শ্রমিক লীগ নেতা রায়হানউদ্দিন খোকাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালায়। বিগত সাত বছরে সে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্প কাজ না করে ভুয়া মাষ্টার রোলের মাধ্যমে ৭০ কোটির বেশি টাকা লুটপাট করেছে চেয়ারম্যান ডালিম। এ ঘটনায় হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ডালিমের অত্যাচারে নির্যাতিত মানুষ আগামী ২০২১ সালের খাজরা ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান হিসেবে রমজানকে দেখতে চায়। এলাকায় এ ধরনের আওয়াজ ওঠায় ডালিম ও তার বাহিনীর সদস্যরা রমজানকে প্রতিহত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
ডালিম চেয়ারম্যান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের হাত থেকে রমজান ও সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, সরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধান কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাজিদা