সাতক্ষীরায় ডেঙ্গু পরিস্থি ভয়াবহ:২৪ ঘণ্টায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও গৃহবধুর মৃত্যু: গৃহবধুর শ্বামীর অবস্থা আশাঙ্কাজনক

আবু সাইদ বিশ্বাস:সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তে আরো দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কলারোয়ার এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। খুলনার একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত গৃহবধুর নাম রহিমা বেগম (৫৮)। তিনি কলারোয়া উপজেলার দক্ষিণ সোনাবাড়ীয়া গ্রামের ইয়াছিন আলীর স্ত্রী। সোমবার রাতে খুলনার গাজী মেডিকেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তবে বেসরকারী ভাবে মৃত্যু এরাগীর সংখ্যা বেশি।
স্বামী ইয়াছিন আলীও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তিনিও খুলনা গাজী মেডিকেলে ভর্তি ছিলেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়াতে তাকেও বাড়িতে ফেরত দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যে কোন সময় তারও মৃত্যু হতে পারে।
এদিকে সাতক্ষীরার তালা সদরের খাজরা এলাকার তানভীর শেখ (২৫) নামের এক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারের ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। তানভীর ইসলাম সদরের খাজরা এলাকার সরফুদ্দীন শেখের ছেলে।
এনিয়ে, সাতক্ষীরায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মোট চার জনের মৃত্যু হলো।
কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ কামরুল ইসলাম গৃহবধূ রহিমার স্বজনদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, তিনি ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহ আগে সাতক্ষীরা সিবি হাসপাতালে প্রথমে ভর্তি হন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তিন দিন পর তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এরপর গাজী মেডিকেলে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি সোমবার রাতে মারা যান। তিনি নিহত গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে গাজী মেডিকেলের প্রেসক্রিপশনসহ অন্যান্য কাগজপত্র দেখে আরো জানান তিনি ডেঙ্গু, হাইপোথাইরোডিজম, ডায়াবেটিকসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সনাক্ত করেছেন।
এদিকে তালা জনসেবা ক্লিনিকের মধু সুধন জানান, গত বুধবার ঢাকার হেলথ অ্যান্ড হোপ হসপিটালে তানভির শেখের প্যানক্রাইসিস রোগের জন্য অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পরদিন বৃহস্পতিবার তার শরীরে ডেঙ্গুর জীবানু ধরা পড়ে। এরপর থেকে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে তানভীর। অবশেষে সোমবার রাতে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ডেঙ্গু ও প্যানক্রাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় সে। তানভীর সাতক্ষীরা সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে দু’বছর আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছিলো।

রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হসপিটাল কর্তৃপক্ষ জানান, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তানভীর। তার মরদেহ রাতেই হাসপাতাল থেকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে, সাতক্ষীরায় মঙ্গরবার পর্যন্ত ৪৮২ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে বলে সনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত ভর্তি রয়েছে ৪০ জন। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন আরো ৩৪৫ জন এবং অন্যত্র রেফার করা হয়েছে আরো ৯৭ জনকে। আক্রান্তদের সাতক্ষীরা সদর ও মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে যারা ভর্তি রয়েছেন তারা এখন আশংকামুক্ত বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডাঃ আবু শাহিন। তবে বেসরারী মতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরো বেশি।
আবু সাইদ বিশ্বাস
সাতক্ষীরা
৩/৯/১৯

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।