ডিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম গত ২ সেপ্টেম্বর তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে “নব্য জেএমবির নামে জামায়াত-শিবিরের লোকজনই পুলিশকে টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে” মর্মে যে ভিত্তিহীন মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ডিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম গত ২ সেপ্টেম্বর তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ‘নব্য জেএমবির নামে জামায়াত-শিবিরের লোকজনই পুলিশকে টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে’ মর্মে যে ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়েছেন তা সর্বৈব মিথ্যা। তার ঐ বক্তব্যের মধ্যে সত্যের লেশমাত্রও নেই। তিনি ঐ ভিত্তিহীন মিথ্যা বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
গতকাল মঙ্গলবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, তিনি ‘জেএমবি ছিল মূলত জামায়াত-শিবিরের সাবেক নেতা-কর্মীদের তৈরি একটি সংগঠন’ মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা একেবারেই ডাহা মিথ্যা ও বানোয়াট। নব্য জেএমবি বা জেএমবির সাথে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কখনও কোন সম্পর্ক ছিল না এবং এখনও নেই। নব্য জেএমবি বা জেএমবি কারা তা জানার জন্য বেশি বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। তা জানার জন্য গুলশানের হলি আর্টিজানের বোমা হামলার ঘটনাই যথেষ্ট।
তিনি বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের বক্তব্য সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও কাল্পনিক। নিজেদের চরম ব্যর্থতা ঢাকা দেয়ার জন্য তিনি এখন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে মূলত শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এভাবে কাল্পনিক বক্তব্য দিয়ে দেশবাসীকে কখনো ধোকা দেয়া যাবে না।
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য তিনি পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের প্রতি আহ্বান জানান।
—০—–
সরকার নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল করতে কিছু পুলিশ কর্মকর্তাকে ব্যবহার করছে – ছাত্রশিবির
গতকাল মঙ্গলবার দেয়া প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন ও সেক্রেটারি জেনারেল সিরাজুল ইসলাম বলেন, পুলিশের উপর হামলা নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে জঙ্গিদের সাথে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে তিনি যে দায়িত্বহীন ও বাস্তবতা বিবর্জিত বক্তব্য দিয়েছেন তাতে আমরা বিষ্মিত। ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে তার প্রতিটি কথা নিকৃষ্ট মিথ্যাচার ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হয়েও সামান্যতম তথ্য প্রমাণ ছাড়াই রাজনৈতিক ও বিদ্ধেষমূলক অবস্থান থেকে তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন। দেশবাসী দেখছে যে জঙ্গি নিয়ে সরকারের মন্ত্রী এমপিরা একেক সময় একেক রকম বক্তব্য দিচ্ছে। একই সাথে তার মত দলীয় মনোভাবাপন্ন পুলিশ কর্মকর্তারাও রাজনৈতিক নেতাদের মতই বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন। তার এই বক্তব্য বিভ্রান্তিকে আরো প্রকট করবে। সরকার নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল করতে মনিরুলের মত কিছু দলীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্যবহার করছে। এর আগেও তিনি ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে এমন দায়িত্বহীন বক্তব্য দিয়েছেন যা সময়ের ব্যবধানে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। মূলত মিথ্যাচার করে বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে সরকার ও পুলিশ পরিকল্পিতভাবে উদোর পিন্ডি ভুধোর ঘারে চাপিয়ে ফায়দা হাসিল করতে চাইছে। যার প্রতিফলন ঘটেছে তার এই বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের মাধ্যমে। আমরা মনে করি, দেশে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরকারে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেয়া হয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, ছাত্রশিবির নিজস্ব কর্মসূচি অনুযায়ী ছাত্রদেরকে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কোন প্রকার জঙ্গিবাদের সাথে ছাত্রশিবিরের দূরতম কোন সম্পর্ক নাই। কারণ শিবির জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করেনা।
নেতৃদ্বয় বলেন, কোন গোষ্ঠির ক্রীড়নক হয়ে দায়িত্ব ভুলে মিথ্যাচার করা পুলিশের পবিত্র দায়িত্বের প্রতি চরম অবহেলা। জাতি পুলিশকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকায় দেখতে চায়। এমন দায়িত্বহীন ভূমিকা অব্যাহত রাখলে জনগণের অনাস্থা ছাড়া তারা আর কিছুই অর্জন করতে পারবে না। যা কোনভাবেই কাক্সিক্ষত নয়।
নেতৃদ্বয় আইন-শৃঙ্খলার পবিত্র দায়িত্বে নিয়োজিত থেকে মিথ্যাচার না করতে ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান।