নিজস্ব প্রতিনিধি: পাটকেলঘাটার খলিষখালীতে মদ খাওয়া লাইসেন্স স্বেচ্ছায় স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সহযোগিতা চেয়েছেন এক মাদকসেবী। মাদকসেবী কমল কুমার রায় খলিষখালী ইউনিয়নের চোমরখালী গ্রামের মনরঞ্জন রায়ের ছেলে।
বুধবার সকালে কমল রায় স্ত্রী শ্বাশুড়ীসহ খলিষখালী ইউনিয়ন পরিষদে হাজির হয়। এসময় তার মদখাওয়া সরকারী লাইসেন্স (যা স্বারাষ্ট্রমন্ত্রনালয় থেকে ইসুকৃত) চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমানের কাছে তুলে দেন। কমল রায় এসময় জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে মাদক সেবন করে আসছে। এর ফলে তার পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া ১৬ বিঘা কৃষি জমির বেশির ভাগই বিক্রি করতে হয়েছে মাদক সেবনের জন্য। মাদক সেবন করে কমল রায় প্রতিনিয়ত তার স্ত্রী পপি রায়কে শাররীক ও মানুসিক নির্যাতন করে আসছিল। মাদকাসক্ত কমল রায়ের নির্যাতন সইতে না পেরে তার স্ত্রী পপি রায় কয়েক দফায় বাবার বাড়ি শ্যামনগরে চলে যায়।
কমল দম্পত্তির এক মাত্র মেয়ে পিংকী রায় এখন স্থানীয় একটি স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাবা মাদকাশক্ত হওয়ায় তার শিশু কন্যাকেও সামাজিক বঞ্চনার শিকার হতে হয় এমনটি জানালেন কমল রায়ের স্ত্রী পপি রায়। বিষয়টি জানার পর খলিষখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমান কয়েক দফায় মাদক সেবী কমল রায়কে স্বাবাভিক জীবনে ফিরে আসার আহবান জানান। তিনি স্থানানীয় গ্রামবাসীকেও সহায়তা চান ম্বাবাভিক জীবনে কমল রায়কে ফেরাতে। কয়েক দফায় গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে তার খোঁজ খবর রাখার চেষ্টা করেন স্থানীয় চেয়ারম্যান।
এরআগে শ্যামনগরে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে মদখেয়ে মাতলামী করার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। দুই বছর পূর্বে মাদক সেবন করে স্ত্রীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নির্যাতন করার অভিযোগে পাটকেলঘাটা থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৬ মাসের কারাদন্ড হয় তার। দীর্ঘদিন সাজাভোগের পর বাড়ীতে এসে পুনরায় মাদক সেবন করা ও এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট করার কারণে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমান তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে কাউন্সিলিং করেন। কয়েক দফায় কাউন্সিলিং করার পর বুধবার সকালে খলিষখালী ইউনিয়ন পরিষদে হাজির হয়ে কমল রায় স্বেচ্ছায় মদ খাওয়া সরকারী লাইসেন্স বতিলের জন্য চেয়ারম্যানের নিকট জমা দিয়ে সহায়তা চান। এসময় তার স্ত্রী পপি রায় স্বামীর স্বাবাভিক জীবনে ফিরে আসতেও সহয়তা চান।
ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমান বিষয়টি স্বিকার করে জানান, কমল রায় দীর্ঘদিন মদ খেয়ে এলাকায় মাতলামী করত। পরিবারের সদস্যদের নানা ভাবে অত্যাচার করত সে। বিষয়টি তার স্ত্রী পপি রায় ইউনিয়ন পরিষদে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে কমল রায়কে স্বাবাভিক জীবনে ফিরে আসতে নানা ভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়। কমল রায়ের মাদকের লাইসেন্স বাতিলের বিষয়টি যথযথ কতৃপক্ষকে অবহিত করতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …