ক্রাইমর্বাতা রিপোট: চলতি সেপ্টেম্বরের ১৪ তারিখ ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে দেশের অন্যতম বৃহৎ ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের। শীর্ষ দুই পদে নেতা নির্বাচিত হবেন গণতান্ত্রিক পন্থায়। এবার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ২৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সভাপতি হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ৯ জন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ১৯জন।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসাবে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন যোগ্য, মেধাবী ও পরিচ্ছন্ন ছাত্রনেতা আমিনুর রহমান আমিন। ২০০১ সালে এসএসসি ও ২০০৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর নিজ যোগ্যতায় ছাত্রদলের রাজনীতির মাঠ কাঁপান তিনি। বিগত ১/১১, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের অগ্রভাগের সৈনিক।
জানা গেছে, পারিবারিক সূত্রে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত আমিন ছোটবেলা থেকে ছাত্রদলের রাজনীতি নেতৃত্ব দেয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের এই ছাত্রনেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে থাকতেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
বিগত আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে আমিনের ভূমিকার বিষয়ে সদ্য বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন সোহান বলেন, ‘বিগত আন্দোলন-সংগ্রামের এক অকুতোভয়ের নাম আমিনুর রহমান আমিন। ১/১১র আন্দোলন থেকে শুরু করে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের জন্য বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে আমার সাথে রাজপথে নিজের জীবন বাজি রেখে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার যোগ্য বিকল্প কেউই নেই।’
সদ্য বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি আতিকুজ্জামান রিপন বলেন, ‘পরিচ্ছন্ন এবং মেধাবী ছাত্রনেতা আমিন। সবর্দা সংগ্রামী ও পরিশ্রমী। বিগত প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের সাথে রাজপথে থেকেছে। সাধারণ সম্পাদক হিসাবে আমিনই যোগ্য। ’
সদ্য বিদায়ী কমিটির আরেক সহ-সভাপতি আবু আতিক আল হাসান মিন্টু বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যতগুলো প্রার্থী আছেন তার মধ্যে সেরা আমিন। কাউন্সিলরদের কাছে আমিনের জন্য ভোট চাই।’
আমিনের বিষয়ে সদ্য বিদায়ী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা ইয়াছিন আলী ও অর্থ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, ‘আগামি কাউন্সিলে ২০০০ সালের ক্রাইটেরিয়ায় আমরা প্রার্থী হতে পারছিনা। দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা সেই সিদ্ধান্তে একাত্বতা প্রকাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সুদীর্ঘ এই পথচলাতে যে সকল ছোট ভাই আমাদের সাথে ছিলো, আন্দোলন সংগ্রাম, মিছিল, মিটিং, স্লোগানে স্লোগানে যাদের সরব উপস্থিতি ছিলো তাদের মধ্যে অন্যতম আমিন।’
তারা বলেন, ‘১/১১ থেকেই আমাদের সাথে রাজপথের যুদ্ধক্ষেত্রে, সংগঠক, পরিশ্রমী, বিনয়ী ও মেধাবী একজন ছাত্রনেতা। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে আরো বেগবান করার লক্ষ্যে যিনি রাজপথে সকল আন্দোলন সংগ্রামে দৃঢ় ভূমিকা পালন করেছেন তিনি হলেন আমিন।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আমিনকে সাধারণ সম্পাদক করতে দলের হাইকমান্ডও ইতিবাচক। ছাত্রদলের সাবেক কয়েকজন সিনিয়র নেতা আমিনের পক্ষে মাঠে রয়েছেন। কাউন্সিলের আচরণ বিধি মেনে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।
নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, ছাত্রদলের প্রতিটি শাখার শীর্ষ পাঁচজন নেতা ভোট দিতে পারবেন। সংগঠনটির ১০টি সাংগঠনিক বিভাগের ১১৬ শাখায় মোট ৫৬৬ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগের ৯ শাখায় ৪৫ ভোট, ঢাকা বিভাগের ২৯ শাখায় ১৩৮ ভোট, চট্টগ্রাম বিভাগের ১২ শাখায় ৫৮ ভোট, কুমিল্লা বিভাগের ছয় শাখায় ৩০ ভোট, খুলনা বিভাগের ১৪ শাখায় ৭০ ভোট, ময়মনসিংহ বিভাগের ৯ শাখায় ৪৫ ভোট, রাজশাহী বিভাগের ১১ শাখায় ৫২ ভোট, সিলেট বিভাগের সাত শাখায় ৩৫ ভোট, রংপুর বিভাগের ১৩ শাখায় ৬৩ ভোট ও ফরিদপুর বিভাগের ছয় শাখায় ৩০ ভোট রয়েছে।
আমিন ইতিমধ্যে সিলেট, উত্তরাঞ্চল, বরিশাল, খুলনা সফর সম্পন্ন করেছেন। আজকালের মধ্যে চট্টগ্রাম ও ঢাকার পাশপাশের এলাকায় কাউন্সিলরদের সাথে দেখা সাক্ষাত করবেন।
সার্বিক বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সজিব, সাধারণ সম্পাদক চন্দন ও মাগুরার সাধারণ সম্পাদক সবুজ, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মনির, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ, কুমিল্লা মহানগরের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আক্তার, বান্দরবনের সাধারণ সম্পাদক অমিত, শেরপুরের সভাপতি সৈকত বলেছেন, ‘আগামীর ছাত্রদলে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে আমিন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আশা করি কাউন্সিলরদের অধিকাংশই আমিন ভাইকে বেছে নেবেন।’
ছাত্রদল নিয়ে লক্ষ্য এবং অঙ্গীকার প্রসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আমিনুর রহমান আমিন বলেন, ‘নির্বাচিত হলে আধুনিক ও যুগোপযোগী ছাত্রদল উপহার দেবো। আমাদের প্রাণের সংগঠন ছাত্রদলকে তৃণমুল পর্যন্ত সুসংগঠিত করবো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে তুলবো আন্দোলন। আমি হলফ করে কথা দিচ্ছি, কাউন্সিলরা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে, প্রধান লক্ষ্য থাকবে, আমাদের সকলের মা তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা।’
তিনি বলেন, ‘আমি সবর্দা অবিচল থাকবো শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) আদর্শ বাস্তবায়ন ও আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এবং আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের স্বপ্নের ছাত্রদল গড়ার ব্যাপারে।’