এক মুঠো ভাতের জালাই স্বামীর মৃত্যুর তিন দিন পর শ্রম বিক্রি করছে সাতক্ষীরার রোকেয়া বেগম

আবু সাইদ বিশ্বাস:ক্রাইমর্বাতা রিপোট: সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশ গ্রহণ বাড়লেও কমেনি মজুরি বৈষম্য। পুরুষ নির্ভরশীলতা কমিয়ে নারীরা স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে। জেলাতে ক্রমেই নারী শ্রমিকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে সারাবছর কাজ না থাকায় পুরুষেরা পেশা বদল করে অনত্র চলে যাচ্ছে। এমনকি ঝুাঁক পূর্ণ কাজেও নারীর সম্পৃক্ততা বাড়ছে। এক সময় এ অঞ্চলে পুরুষেরা পাট চাষ করতো। কিন্তু এখন পাটের দাম তুলনা মূলক কম থাকায় কম মজুরিতে মহিলা শ্রমের চাহিদা বাড়ছে ক্ষেত মালিকদের কাছে। ক্ষেত মালিকরা বলছে পুরুষের তুলনা নারী শ্রমিকের মজুরি কম। তাই জেলাতে এক কৃষিতে নারী শ্রমিকের চাহিদা অনেক বেশি।
এক মুঠো ভাতের জন্য স্বামীর মৃত্যুর তিন দিন পর শ্রুম বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে রোকেয়া বেগম। চলতি মাসের ৫ তারিখে তার স্বামী হার্ডএ্যার্টক করে মারা যান। সে সময় তার ঘরে এক দিনেরও খোরাকি ছিল না। প্রথম তিন দিন পাড়া প্রতিবেশিরা খেতে দিলেও এখন আর কেউ দেয় না। বাধ্য হয়ে লোকের ক্ষেতে কাজ করছি বললেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাড়ি ইউনিয়নের বকচরা গ্রামের আকবর আলীর স্ত্রী রোকেয়া বেগম। বয়স ভারে শরীরের চামড়াও গুটিয়ে গেছে।মাথার চুলও পেঁকে সাদা হয়ে গেছে। একটি ছেলে নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন রোকেয়া বেগম । অভাবের তাড়নায় ছেলেও তাকে দেখতে পারে না বলে জানায় রোকেয়া। গতকাল

শুক্রুবার দুপুর ১২টার দিকে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কের পাশের বিলে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর সময় কথা হয় তার সাথে। বলে বাবা ছবি তুলছো কেনো। আমাকে কি কিছু দিবে? গ্রামের মহিলা। ছবি তোলার সাথে সাথে মুখের ঘোণটা টেনে দেয়। প্রতিবেদকের সাথে সে বললো,স্বামী মরে যাওয়ার পর ঘরে কিছুই ছিলনা। কি করবো। জীবন যুদ্ধে চলতে গেলে মুখে কিছুতো দিতে হবে। লোকেরা কত দিন দিবে। বাধ্য হয়ে কাজে নেমে পড়লাম। যত দিন কাজ করতে পারবো ততদিন কাজ করবো। ভিক্ষা করতে ভাল লাগে না। বলেন,আল্লাহ যেন তাকে ভিক্ষা না করান।
জীবনের এমন সময়ে যখন শুয়ে বসে থাকার কথা তখন রোকেয়া বেগম এক মুঠো ভাতের জন্য কার না কাছে যাচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বলেছে একটা বিধাব ভাতার কার্ড করে দিতে। চেয়ারম্যান তাকে আশ্বস্থ করেছে। কিন্তু কবে দিকে কার্ড করে বিধবাকে তা বলেনি চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান মঞ্জু মালি জানান, বিধাব ভাতার কার্ড আসলে চেষ্টা করবো। প্রতিদিন কাজ হয় না। এক আটি পাঠ ধুলে ২০ টাকা। প্রতিদিন এভাবে পাঠ থেকে আাঁশ ছাড়িয়ে একশ থেকে দেড়শ টাকা আয় করেন রোকেয়া। কেউ তাকে সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৭২৩৩৩২৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করার কথা বলেছেন রোকেয়া বেগম।
রোকেয়ার সাথে পাট থেকে আশ ছাড়াচ্ছে পাগলির মা ফজিল্ াবয়স ৬৫ থেকে ৭০ এর কাছা কাছি। দুইটি সন্তান তার। এক ছেলে এক মেয়ে। বললেন ছেরৈ মেয়ে দুজনই পাগল। ওদের বাপও প্রায় পাগল। তাই সংসারের ঘাটি এখন তাকেই টানতে হয়। এমন বৃদ্ধা বয়সে শ্রম বিক্রি করা নজির বিহীন। গলা পানিতে নেমে পাটের আটি টেনে আনা আর সেই আটি থেকে পাট ছাড়িয়ে পাঠকাঠি বের করা কতনা কষ্ট কর না দেখলে বিশ্বাসকরা কঠিন।
ফজিলার কয়,শুনেছি সরকার বয়স্কোদের অনেক কিছু দেয়। কউ আমি তো পাইনি। আমি এখনো কোন ভাতা পায়নি।
ফজিলার পাশে একই কাজ করছে আলেয়া বেগম। এক মেয়ে তার প্রাইমারি স্কুলে পড়ে। তাকেও সংসার চালাতে লোকে ক্ষেতে কাজ করতে হয়। এমন অবস্থা এখন সাতক্ষীরা জেলার অনেকেরই।
বিশ্লেষকরা জানান, অর্থনৈতিক ভাবে কিছু ব্যক্তির আয় বৃদ্ধি পেলেও গ্রামীন নারীদের আয়ের বৈষম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীরা কর্মক্ষেত্রে নামলেও প্রকৃত মজুরি পাচ্ছে না। এছাড়া গ্রাম নারীদের স্বাবলম্বী করতে না পারলে অর্থনীতির চাকা আচল হয়ে পড়বে।
মজুরি বৈষম্যের শিকরা নারীদের দাবী,পুরুষ ও নারীদের মধ্যে মজুরি বৈষম্য হ্রাস ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের আরো বেশি সম্পৃক্ত করা।
আবু সাইদ বিশ্বাস:সাতক্ষীরা: ১৩/৯/১৯

Check Also

ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

আবুল হোসেন সদর প্রতিনিধি : ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।