জি কে শামীমের অফিসে মিললো ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর ও নগদ পৌনে ২ কোটি টাকা

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ   যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীমের নিকেতনের (১৪৪ নম্বর) জি কে বিল্ডার্স কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ১৬৫ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) কাগজ ও নগদ এক কোটি ৮০ লাখ টাকা জব্দ করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এছাড়া তার জিম্মা থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, দেহরক্ষীদের সাতটি শটগান-গুলি এবং কয়েক বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়েছে। র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম এ তথ্য জানিয়েছেন।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) শামীমকে নিকেতনের ১১৩ নম্বর বাসা থেকে আটক করে তার অফিসে অভিযান চালানো হয়।

অভিযানের বিষয়ে ব্রিফ করেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেনেন্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম ও র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম
অভিযানের ফাঁকে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সকাল থেকে আমরা শামীমের বাসা ও অফিসে অভিযান শুরু করি। এ সময় শামীম ও তার সাত জন দেহরক্ষীকে আটক করা হয়। অভিযানে শামীমের অফিস থেকে তার একটি অত্যাধুনিক অস্ত্র ও দেহরক্ষীদের সাতটি শটগান এবং নগদ এক কোটি আশি লাখ টাকা, মোট ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআরের (১৪০ কোটি টাকার এফডিআর মায়ের নামে, বাকি ২৫ কোটি টাকার এফডিআর শামীমের নামে) কাগজ ও বিদেশি মদের কয়েকটি বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ রয়েছে। আমরা সেসব তদন্ত করছি। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তাকে আটক করা হয়েছে।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এফডিআরের টাকাগুলো বিভিন্ন অবৈধ সোর্স থেকে এসেছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। সেসব অভিযোগ আমরা তদন্ত করে দেখবো। এ বিষয়ে মানি লন্ডারিং আইনে তদন্ত কাজ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, জি কে শামীমের অফিসে ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআরের কাগজ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে শামীমের মায়ের নামে রয়েছে ১৪০ কোটি টাকার এফডিআর। তবে তার মায়ের নামে কোনও প্রতিষ্ঠান নেই। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো। আমাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে, কিছু অবৈধ সোর্স থেকে তার এফডিআরের টাকাগুলো এসেছে। শামীমকে আদালতে এফডিআরগুলোর সোর্স বৈধ প্রমাণ করতে হবে।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে গ্রেফতার করতে অভিযান পরিচালনা করে। কাউকে নাজেহাল করতে অভিযান চালানো হয় না। আমাদের কাছে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও এফডিআরের অবৈধ সোর্সের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগগুলো তিনি মিথ্যা প্রমাণ করতে পারলে ছাড়া পাবেন।

জব্দ অস্ত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, জব্দ অস্ত্রগুলো বৈধ। তবে অভিযোগ রয়েছে এগুলো অবৈধ কাজে ব্যবহার হতো। এ জন্যই আমরা সেগুলো জব্দ করেছি।

শামীমের রাজনৈতিক পরিচয় বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার কোনও রাজনৈতিক পরিচয় আছে কিনা তা নির্ধারণ করবে তার দল ও নেতারা। এ দায়িত্ব আমাদের নয়।

র‌্যাব সূত্র জানায়, যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার স্বীকারোক্তিতে বিভিন্ন অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে জি কে শামীমের নামও উঠে আসে। এ তথ্যের ভিত্তিতেই তাকে আটক করে অভিযান চালানো হয়।

এরআগে, রাজধানীতে অবৈধ ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গুলশানে তার নিজ বাসা থেকে আটক করে র‌্যাব। ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে তার পরিচালিত অবৈধ ক্যাসিনোতেও অভিযান চালায় র‌্যাব।

Check Also

আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইল বাংলাদেশ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারতকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।