বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবীতে র্যালী ও সমাবেশ
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সকাল ১০ টায় ‘সবুজ আন্দোলন’ এর উদ্যোগে সারাবিশ্বে জলবায়ু সপ্তাহ পালনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে “বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবী”তে ও সমাবেশ” পল্টন মোড় থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত র্যালী ও র্যালী শেষে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি এডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিক। প্রধান অতিথি ছিলেন, সংগঠনের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার। এসময় অন্যদের উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ পরিচালক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক আলহাজ¦ আলমগীর হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক ফজলু, ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক লোকমান হায়দার চৌধুরীসহ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাপ্পি সরদার বলেন, ‘সবুজ আন্দোলন’ একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক, স্বেচ্ছাসেবীমূলক, পরিবেশবাদী সংগঠন। দেশে বিদ্যুতের চাহিদা অপরিহার্য। কিন্তু তার মানে এই নয় যে জলবায়ু ও পরিবেশ বিপন্ন করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হোক। সারাবিশ্বেই আজ পরিবেশবাদীদের এক দাবী, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হোক। বর্তমান সরকার যে চারটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপনের চিন্তা করেছে তার মধ্যে রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্র ইতিমধ্যে কাজ চলমান রয়েছে। আমরা চাই এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও বন্ধ করে জলবায়ু সমস্যা মোকাবেলা ও কার্বন নিঃসরণ কমাবে এ ধরণের নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হোক। এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ১০ কোটি টাকার দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত সকল কর্মকর্তাদের অনতিবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সবুজ আন্দোলনের পক্ষ থেকে সারা পৃথিবীর সকল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবি জানানো হয়। তিনি সবুজ আন্দোলনের পক্ষ থেকে জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলা ও কার্বন নিঃসরণ বন্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবী উত্থাপন করেন।
১. অনতিবিলম্বে সারা পৃথিবীর কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে অর্ধেক ও ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে।
২. বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সেক্টরে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিতে শিল্পোন্নত দায়ী রাষ্ট্রকে বাধ্য করা। সোলার সিস্টেম, দেশের সমুদ্র উপকূল ও নদীর পাড়সমূহে উইন্ড পাওয়ার প্ল্যান্টের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগিতা করা।
৩. বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূল ও বড় নদীর পাড় জুড়ে নেদারল্যান্ড এর মত বেড়ীবাঁধ নির্মাণ এবং মিঠাপানি সংরক্ষণের জন্য নদী ও দিঘী খনন করতে অর্থ বরাদ্দ দিতে দায়ী রাষ্ট্রকে বাধ্য করা।
৪. সুন্দরবনের আশেপাশে সকল ধরনের স্থাপনা উচ্ছেদ করা এবং আগামীতে যেন কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে তার জন্য আন্তর্জাতিক ভাবে আইন পাশ করতে হবে। সারাদেশে সামাজিক বনায়নে অর্থ বরাদ্দ দিতে দায়ী রাষ্ট্রকে উৎসাহ প্রদান করতে হবে।
৫. জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সম্ভাব্য ৬ কোটি বাস্তুহারা মানুষের পূনর্বাসন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে দায়ী রাষ্ট্রকে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।
৬. বায়ু, পানি ও মাটি দূষণ রোধে বাংলাদেশ সরকারকে কারিগরি সহায়তা ও পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিতে দায়ী রাষ্ট্রকে উৎসাহ দেওয়া।
৭. প্রত্যেক সিটি কর্পোরেশন, জেলা শহর ও পৌর এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিল্পাঞ্চল এলাকার বর্জ্য অপসারণ, ই-বর্জ্য রাখার জন্য প্রত্যেক বিভাগীয় শহরের ড্যামপিং ষ্টেশন নির্মাণ করা এবং বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দায়ী রাষ্ট্রকে অর্থ বরাদ্দ দিতে উৎসাহ প্রদান করতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি