জাতিসংঘে স্মরণ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা আমাদের জাতির পিতাও গান্ধীজির আদর্শ থেকে অনুপ্রেরণা নিতেন

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  কানায় কানায় পরিপূর্ণ গোটা মিলনায়তন। দৃষ্টিনন্দন স্নিগ্ধ সাজে সজ্জিত। ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মদিন আগামী ২ অক্টোবর। কিন্তু এমন মহান একজন মানুষকে স্মরণ করার জন্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলার সময়টাকেই বেছে নেয়া হয়েছে। তাতে যোগ দিতে এসেছেন বিশ্ব সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ মানুষরা। সেখানে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুরুতে মিলনায়তনে প্রবেশ করলেন। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এলেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতারেস ছাড়াও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন  এবং জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস। গোটা মিলনায়তন তখন দাঁড়িয়ে বিশ্বনেতাদের প্রতি সম্মান জানালো।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই অতিথিরা ফটোসেশনে অংশ নেন। এরপর সবাইকে সাথে নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৫০ কিলোওয়াটের ‘গান্ধী সোলার পার্ক’র উদ্বোধন করেন। তারা গোলাকার সাদা একটি বলে হাত রাখলে সেটি জ্বলে ওঠে। তখন একটি ছোট্ট তথ্যচিত্র দেখানো হয়। ‘সমসাময়িক বিশ্বে মহাত্মা গান্ধীর প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এই স্মরণ অনুষ্ঠানজুড়ে তখন অদ্ভূত এক মুগ্ধতা। এ সময় মহাত্মা গান্ধীর ওপর একটি জাতিসংঘের স্ট্যাম্প অবমুক্ত করা হয়।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শংকর স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এরপর বক্তব্য দিতে আসেন নরেন্দ্র মোদি। চমৎকার ভঙ্গিমায় গোটা বিশ্বের সামনে তিনি মহাত্মা গান্ধী ও তার অহিংস আন্দোলনের নীতি তুলে ধরেন। একটি উদাহরণ দিতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘একবার রানী এলিজাবেথের সাথে আমার দেখা হয়েছিল। তিনি আমাকে তার আবেগঘন একটি উপহার দেখান। হাতে তৈরি এক টুকরো কাপড়। যেটা তৈরি করে মহাত্মা গান্ধী রানীর বিয়েতে উপহার দিয়েছিলেন’।

মোদি বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে তিনি স্বাধীনতার আন্দোলন করেছিলেন, সেই তাদের রানীকে মহাত্মা গান্ধী এমন আন্তরিক উপহার দিয়েছিলেন। এতেই বোঝা যায়, তিনি কতটা অহিংস মনের ছিলেন।’

সময় গড়িয়েছে ঠিক, কিন্তু মহাত্মা গান্ধী আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন। বর্তমান জটিল ও সংঘাতম বিশ্ব ব্যবস্থায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে গান্ধীজির অহিংস নীতি কতটা জোড়ালো ভূমিকা রাখতে পারে, সেটাই তুলে ধরলেন বিশ্বনেতারা।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জাতির পিতাও গান্ধীজির আদর্শ থেকে অনুপ্রেরণা নিতেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যন্ত তিনি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনী যখন নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়, তখন তিনি সশ্রস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন’।

আবেগঘন কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই দুই নেতাকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে।’

আগামী বছর বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতিসংঘে একটি অনুষ্ঠান করার কথা ভাবা হচ্ছে। তিনি মহাত্মা গান্ধীর আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।