ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির ঘিরে কাঁটাতারের বেড়া ও গার্ড টাওয়ার নির্মাণে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনায় আপত্তির কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে শরণার্থীদের চলাফেরার স্বাধীনতার অধিকার ক্ষুন্ন হবে।
এইচআরডব্লিউয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শিবিরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের হলেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে মৌলিক অধিকার ও মানবিক প্রয়োজন অস্বীকার করা যাবে না। বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তাবিত এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী চলাফেরার স্বাধীনতার নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা ও প্রাসঙ্গিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর রাখাইনে পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ। এদের সঙ্গে রয়েছেন ১৯৮২ সাল থেকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্যে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া আরও প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলে বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি। কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে এসব রোহিঙ্গা। গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান এসব শিবির ঘিরে কাঁটাতারের বেড়া ও গার্ড টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার।
এক বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তিনি শিবিরগুলোকে কার্যত উন্মুক্ত কারাগার বানাতে চাইছেন। শরণার্থীদের বাইরের বিশ্ব থেকে আলাদা করে বাংলাদেশ সরকার তাদের অর্জিত বৈশ্বিক সুনামকে ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটি শিবিরের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের সুপারিশ করে। যাতে করে কেউ শিবিরে প্রবেশ বা শিবির থেকে বাইরে বের হতে না পারে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দাবি, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তার সুরক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে তাদের মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে চলাফেরার স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা হচ্ছে। এছাড়া এর ফলে জরুরি পরিস্থিতিতে শিবির থেকে বাইরে বের হওয়া বা জরুরি চিকিৎসা সেবা ও অন্যান্য মানবিক সেবা পাওয়া থেকে তারা বঞ্চিত হবে।
Check Also
আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইল বাংলাদেশ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারতকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. …