ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতার জেরে ছাত্রলীগের হাতে নির্মমভাবে নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিবৃতির জন্য বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পোকে তলব করে ব্যাখ্যা চেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মিয়া সেপ্পো রোববার বেলা ১১টার দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাজির হয়ে জাতিসংঘ উইংয়ের মহাপরিচালক নাহিদা সোবহানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের ঢাকা অফিস যে বিবৃতি দিয়েছিল, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয় আবাসিক প্রতিনিধির কাছে।
আবরার হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি জাতিসংঘের
গত ৫ অক্টোবর দিল্লিতে হায়দ্রারাবাদ হাউসে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
এসব চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদ।
পরদিন রাতে বুয়েট শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী।
বুধবার নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আহ্বান জানানো হয় জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে।
আজ দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তলবের বিষয়ে প্রশ্ন করা হরে কোনো মন্তব্য করেননি মিয়া সেপ্পো।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, জাতিসংঘ প্রতিনিধিকে তারা দুটি বিষয়ে বলেছেন।
‘প্রথমত, মুক্তভাবে নিজের মতপ্রকাশের জন্য বুয়েট ছাত্র আবরারকে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে জাতিসংঘের বিবৃতিতে, যা সঠিক নয়। ভারতের সঙ্গে করা চুক্তি নিয়ে অনেকেই নানা মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা-মন্তব্য করেছেন। সরকার কাউকে তার মত প্রকাশে বাধা দেয়নি। এমনকি আবরার খুন হওয়ার আগ পর্যন্ত সে ফেসবুকে কী লিখেছে, তা সরকারের ধারণায় ছিল না।
দ্বিতীয়ত, উন্নত বিশ্বে যখন কোনো ছাত্র হত্যার ঘটনা ঘটে, তখন তা নিয়ে জাতিসংঘকে কথা বলতে দেখা যায় না। বাংলাদেশে কোনো ঘটনা ঘটলেই তাকে মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে জড়ানো হয় কেন।’