১৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা লোপাটের মামলায়   সাতক্ষীরা স্বাস্থ্য বিভাগের কোটিপতি কর্মচারি ফজলু জেল হাজতে

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে ১৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা লোপাটের মামলায় স্টোর কিপার একেএম ফজলুল হককে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি সাতক্ষীরা সিনিয়র স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতে আত্মসমর্পন করলে আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান তাকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তিনি দীর্ঘ দিন পলাতক থাকার পর মঙ্গলবার সকালে সাতক্ষীরার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত জামিন নিতে গেলে আদালত তাকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ১৬ কোটি টাকা ৬১ লাখ টাকার মালামাল ক্রয়ে দুর্নীতির ঘটনায় বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর এ ঘটনার দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক জালালউদ্দিন বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের পক্ষে তৎকালীন সিভিল সার্জন ডাঃ তৌহিদুর রহমান, স্টোর কিপার একেএম ফজলুল হক ও হিসাবরক্ষক আনোয়ার হোসেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার অপর আসামিরা হলেন, রাজধানীর ২৫/১ তোপখানা রোডের বেঙ্গল সায়েন্টেফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির কর্ণধার ঠিকাদার মো. জাহের উদ্দিন সরকার, তার ছেলে মো. আহসান হাবিব, জাহের উদ্দিনের বাবা মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার হাজী আবদুস সাত্তার সরকার এবং তার ভগ্নিপতি ইউনিভার্সেল ট্রেড কর্পোরেশনের কর্ণধার মো. আসাদুর রহমান, জাহের উদ্দিন সরকারের নিয়োগকৃত প্রতিনিধি কাজী আবু বকর সিদ্দিক ও মহাখালী নিমিউ অ্যান্ড টিসির সহকারী প্রকৌশলী এএইচএম আব্দুল কুদ্দুস।

এ মামলার আসামি ডাঃ তৌহিদুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, জাহের উদ্দিন সরকার, হাজী আবদুস সাত্তার, আসাদুর রহমান ও আব্দুল কুদ্দুসসহ ৬ জন নি¤œ আদালত থেকে জেলে যাওয়ার পর বর্তমানে উচ্চ আদালতের জামিনে রয়েছেন। বাকী দুই জন আহসান হাবিব ও কাজী আবু বকর সিদ্দিক পলাতক রয়েছেন।

সাতক্ষীরা দূর্নীতি দমন কমিশনের পিপি এড. আসাদুজ্জামান দিলু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ মামালার আসামী স্টোর কিপার এ.কে.এম ফজলুল হকের বিরুদ্ধে দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা থাকার পর গতকাল (মঙ্গলবার ) সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত জামিন নিতে গেলে আদালত তাকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, স্টোর কিপার একেএম ফজলুল হক সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের ১৬ গ্রেডের একজন কর্মচারী । তার বেতন স্কেল মাত্র ৪ হাজার ৭০০ টাকা। অথচ সাতক্ষীরা জেলা শহরের মধুমল্লারডাঙ্গি (পলাশপোল সরদার বাড়ি) এলাকায় চারতলা (১৬ প্লাটের ) একটি এবং তার পিছনে তিন তলা আরো একটি বিলাশ বহুল বাড়ির মালিক সে। এই দুটি বাড়ির আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ১০ কোটি টাকারও বেশি। এছাড়া অধেল সম্পদের মালিক স্বাস্থ্য বিভাগের এই দুর্নীতিবাজ কর্মচারী ।
একেএম ফজলুল হকের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য বিভাগের কোটি কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। চাকরি জীবনে সরকারি টাকা লুটপাটের অভিযোগে সে একাধিক বার চাকরি থেকে বহিস্কার হয়েছে। আর চড়েন অর্ধকোটি টাকা মূল্যের বিলাশ বহুল গাড়ি।

Check Also

আশাশুনিতে টঙ্গী ইজতেমায় হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।ঢাকার টঙ্গীত ইজতেমা-মাঠে নিরীহ মুসল্লিদের উপর উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সাদ পন্থীদের বর্বরোচিত হামলা ও পরিকল্পিত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।