আশাশুনির চাপড়ায় দু’সন্তানের জননীকে এসিড নিক্ষেপ: ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ   আশাশুনির দক্ষিণ চাপড়ায় তালাকপ্রাপ্ত স্বামী কর্তৃক দু’সন্তানের জননীকে এসিড নিক্ষেপে ঝলছে দেয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তিনি চাপড়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এসিড দগ্ধের শিকার দু’সন্তানের জননী ফাতেমা বর্তমানে বসবাসকারী বাড়িতে উপস্থিত হন। এসময় সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) ইয়াছিনুর রহমান, থানা অফিসার ইনচার্জ আবদুল সালাম, বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান আ. ব. ম মোছাদ্দেক, স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ, থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শকবৃন্দসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, ঘটনা সম্পর্কে পত্রিকা মারফত জেনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মোটামুটি অবহিত হয়েছি। এসিড দগ্ধের শিকার ভিকটিমসহ তার অবিভাবকগণ চিকিৎসায় ব্যস্ত আছেন বলে জানলাম। তবে মামলার প্রস্তুতি চলবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রসঙ্গত: সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ চাপড়ার একরাম গাজীর জৈষ্ঠ কন্যা ফাতেমা খাতুন (২৯) এর সাথে নড়াইল জেলার পঙ্কবিলা গ্রামের শওকত আলীর পুত্র শাহজাহান আলীর বিগত ১৫ বছর পূর্বে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। ফাতেমা জানায়, বিয়ের পরই সে স্বামীর মাদকাক্ততার কথা জানতে পারে। স্ত্রী নানা কৌশলে চেষ্টা করেও তাকে মাদকাসক্ততার পথ থেকে স্বামীকে ফেরাতে পারেনি। এরই মধ্যে তাদের ঔরসে একে একে জাহেরা (৭) ও জাকেয়া (২) নামে দু’টি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। মাদকের প্রতিবাদ করতে গিয়ে স্ত্রী ফাতেমার উপর একের পর এক শারীরিক ও মানিসক নির্যতন চলতে থাকে। এনিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পর্যায়ে কয়েকবার শালিশ হলেও মেয়ে স্বামীর ঘরে আর যেতে রাজী হয়নি। শেষ পর্যন্ত প্রায় ৪/৫ মাস পূর্বে ফাতেমা তার স্বামীকে তালাক প্রদান করে বাবার বাড়ির পাশে ফুপা ইকবাল হোসেনের বাড়িতে দু’সন্তান নিয়ে বসবাস করের। এরমধ্যে মাদকাসক্ত শাহজাহান স্ত্রীকে জব্দ করতে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বাজে ভাষায় স্টাটাস দেয়া ও মোবাইলে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। সোমবার রাত্র সাড়ে ৮টার দিকে ফাতেমা খুলনায় শিয়া সম্মেলন শেষে বাড়িতে ফেরেন। ঘরে ঢুকে পরনের বোরখা ছেড়ে বাথরুম থেকে বারান্দায় এসে দাঁড়াতেই গ্রীলের ফাঁক দিয়ে তালাকপ্রাপ্ত স্বামী শাহজান এসিড নিক্ষেপ করে। ফাতেমা তাকে বারান্ডায় বিদ্যুতের আলোয় তাকে দেখতে পান। এতে ফাতেমার মুখমন্ডল, বুকসহ শরীরের সামনের প্রায় সমস্ত স্থান এসিডে ঝলছে গেছে। মায়ের পাশে থাকা শিশু কন্যা জাকেয়া (২)’র মুখে এসিড লেগে অল্প ঝলছে যায়। তাদের ডাকচিৎকারে পাশের বাড়ির লোকজন ছুটে এসে তাদেরকে পানি দিয়ে প্রাথমিক ভাবে এসিড থেকে রক্ষার চেষ্টা করেন। এসিড ছুড়ে দ্রুত দৌড়ে পালানোর সময় সমানের মসজিদের মুয়াজ্জিন দৌড়ে আসার সময় তাকে দেখতে পায়। রাজ্জাক দৌড়ে রাস্তায় থাকা একটি মটর সাইকেলে পালিয়ে যায়। রাতেই এসিড দ্বগ্ধ মা-মেয়ে দু’জনকে প্রথমে আশাশুনি হাসপাতাল ও পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ফাতেমার অভিভাবকরা তার সাথে থাকায় এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলা দায়ের সম্ভব হয়নি বলে অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের নিকট থেকে জানা গেছে।

 

Check Also

সাতক্ষীরা শহর শিবিরের উদ্যোগে আন্ত:থানা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট।

স্টাফ রিপোটার: ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের ৫৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাতক্ষীরা শহর শিবিরের উদ্যোগে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।