ক্রাইমবার্তারিপোর্টঃ মানুষ হত্যা সরকারের কাছে ‘ডাল-ভাতে’ পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
ভোলায় পুলিশের গুলিতে মুসল্লি নিহতের ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বুধবার বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘ভোলায় নির্বিচারে গুলি করা হয়েছে। শুধু কথায় কথায় গুলি। দেশের মানুষ মনে হয় পশু-পাখির মতো। যে কোনো একটা সমাবেশ হলেই সেখানে গুলি আর হত্যা। মানুষ হত্যা সরকারের কাছে ‘ডাল-ভাতে’ পরিণত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের কোনো কাজ নেই। এরা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, এরা বাকস্বাধীনতা হরণ করেছে, এরা স্বাধীন মতামত হত্যা করেছে। তাই গণতন্ত্রের অন্যতম শর্ত হল সমাবেশ করা। এটি সাংবিধানিক অধিকার, সেই অধিকারকে ভোলায় সরকার সহ্য করল না, ৪ জনকে হত্যা করল, শতাধিক আহত করল বিনা কারণে, বিনা উসকানিতে।’
ভোলার ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার ঢাকার থানায় থানায় এবং সারা দেশে জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশহিসেবে সকালে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে পল্টন-শাহবাগ-রমনা থানা বিএনপি।
মিছিলটি নয়া পল্টনের কার্যালয় থেকে নাইটিঙ্গেল রেঁস্তোরার মোড় দিয়ে আবার কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
এ সময় রিজভী বলেন, ‘আমরা সারা দেশে ভোলা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজকে কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের সবাইকে এই প্রতিবাদে রাজপথে নেমে আসতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি প্রতিবাদ না করি তাহলে আপনাদের-আমাদের কারো জীবনই নিরাপদ থাকবে না, আমাদের সন্তানরা নিরাপদে স্কুল-কলেজে যেতে পারবে না, বাসায় ফিরে যেতে পারবে না।’
ভোলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রিজভী আরও বলেন, ‘সরকার কথায় কথায় গুলি, কথায় কথায় গ্রেফতার। এটার একটা কারণ আছে, প্রতিবাদকে আগেভাগেই নিস্তব্ধ করে দেয়া এ জন্য যাতে দেশ বিক্রি করা যায়, পানি বিক্রি করা যায়, মাটি বিক্রি করা যায়, বাংলাদেশের মাটিতে অন্য দেশের বিমানবন্দর করা যায়।এই কারণেই প্রতিবাদ মিছিল বা সমাবেশের জবাব হচ্ছে গুলি, জবাব হচ্ছে রক্তপাত, জবাব হচ্ছে মানুষ হত্যা।’
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করা যাবে না। সে জন্য তারা (সরকার) গণতন্ত্রের প্রতীক, গণতন্ত্রের মা বারবার যিনি গণতন্ত্রকে অন্ধকারের গুহা থেকে, একদলীয় কর্তৃত্ববাদের গুহা থেকে যিনি উদ্ধার করেছে তাকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। কারণ তাকে বন্দি করে রাখলে অবলীলায় গুলি করা যাবে, তাকে বন্দি করে রাখলেই ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ২৯ ডিসেম্বর রাতে করা যাবে, তাকে বন্দি করে রাখলেই বাংলাদেশকে করত রাজ্যে পরিণত করা যাবে। এটাই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য।’
এ সময় সরকারের ‘অপকর্মের’ বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান রিজভী।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারও বক্তব্য রাখেন।