ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কারাগার থেকে খালেদা জিয়ার সুস্থ অবস্থায় ফেরা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
যুবদলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানানো শেষে তিনি এই শঙ্কার কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীর স্বাস্থ্যের অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। তার জীবনের হুমকি দেখা দিয়েছে এখন। সুস্থ অবস্থায় ফিরে না আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন তার স্বজনরা। বেরিয়ে এসে তারা জানান, খালেদা জিয়ার হাত-পা নাড়াতে পারেন না। বসতে পারেন না। তার অবস্থা নাজুক। একই দিন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত ১৫ দিন খালেদা জিয়াকে দেখতে কোনো চিকিতসক যাননি।
আজ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন যখন কারাগারে যান তখন সবাই দেখেছেন তিনি সুস্থ অবস্থায় সেখানে গিয়েছেন। আজকে তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারেন না, নিজ হাতে খাবার খেতে পারেন না, এক পা অচল, হাঁটতে পারেন না। তিনি যে হাসপাতালে রয়েছেন সেখান তাঁর সঠিক চিকিৎসা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, খালেদা জিয়ার জামিন তার অধিকার। তিনি জামিন পেতে পারেন। কিন্তু সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে জামিন আটকে রেখেছে এবং জামিন যেন না হয় সেজন্য সব ব্যবস্থা নিয়েছে।’
যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে এমন এক সময় যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন হচ্ছে যখন বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। বর্তমানে অবৈধ সরকার জবর দখল করে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। গণতন্ত্রকে হরণ করে, যিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন তাঁকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ রেখে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।’
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, যে মানুষটি গণতন্ত্রের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, আজ সেই মানুষটিকে আটকে রাখা হয়েছে। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। তাকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করতে চাইছে সরকার।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিনাভোটে সরকারে থাকা আওয়ামী লীগ দুর্নীতিবাজ, অপরাধী, টেন্ডারবাজ, ক্যাসিনো ব্যবসায়ীতে ছেয়ে গেছে। চলমান শুদ্ধি অভিযানেই বিষয়টি প্রমাণ করে। এই অভিযানে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের চরিত্র ফুটে উঠেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, এই সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ তারা বৈধ নয়। এজন্য আমরা বারবার বলেছি, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা একটি গণতান্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সেজন্য বর্তমান অবৈধ সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিৎ। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনই এই সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।’
এসময় এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুবদলের সাবেক সভাপতি বরকতউল্লাহ বুলু ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মজনু, উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।