ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা অপরাধ করবে তাদের বিরুদ্ধে আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে। সে যেই হোক এবং যে দলই করুক না কেন।
গতকাল সন্ধ্যায় আজারবাইজানের হিলটন হোটেলে সেদেশে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদের সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। যদি আমাদের দলের কেউ ও অপরাধে জড়িত হয়, সে তৎক্ষণাৎ শাস্তি ভোগ করছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অপরাধীরা অপরাধীই, আমরা অপরাধীদের অপরাধী হিসেবেই দেখবো এবং আমরা সেটাই দেখার চেষ্টা করছি। অন্যকে শিক্ষা দেয়াটা নিজের ঘর থেকেই শুরু করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি সেটাই করছি এবং এটি অব্যাহত রাখবো।
বিএনপি-জামায়াত সরকারের দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের পাঁচ বছরের দু:শাসনে দেশে দুর্নীতির কোন সীমা ছিল না। তিনি বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাদের হীন স্বার্থে বিভিন্ন বিষয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উন্নত চিকিৎসার ব্যাপারে একজন প্রবাসীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী অন্যান্য বন্দিদের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা লাভ করছেন। তিনি বলেন, বেগম জিয়ার ইচ্ছা অনুযায়ী একজন গৃহপরিচারিকা কারাগারে তার সঙ্গে রাখা হয়েছে।
তার মানে বেগম জিয়াকে কারাগারে সে সেবা করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারাগারের ইতিহাসে বা কোন দেশে এমন নজির নেই কোন নিরপরাধী গৃহপরিচারিকা একজন বন্দির সঙ্গে কারাগারে অবস্থান করে। কিন্তু খালেদা জিয়া সেই সুবিধা ভোগ করছেন। বিএনপি বলছে বেগম জিয়া অসুস্থ, কারণ তারা তার মুক্তির দাবিকে আন্দোলনের ইস্যু বানাতে এটা বলছে। কিন্তু বিএনপি তার মুক্তির আন্দোলন বা জনমত গঠন করতে পারে নি। আমাদের কিছু করার নেই। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেন সেক্ষেত্রে আমরা কি করতে পারি?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিগত কেয়ারটেকার সরকারের আমলে দায়েরকৃত মামলায় সাজা হয়। আরও মামলা চলমান রয়েছে। বেগম জিয়ার দুই ছেলে মানি লন্ডারিং, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। অভিযানগুলোতে আমরা ভালো ফল পাচ্ছি। কারণ, মাদক একটি ব্যক্তি ও পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়। আমি ক্ষমতায় আসার পর সর্বাত্মকভাবে দেশের ও জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মায়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য ভাষানচরে আবাস গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু কিছু এনজিও তাদেরকে সেখানে যেতে দিতে চায় না।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, দেশে স্বাস্থ্য, আইসিটি, সামাজিক নিরাপত্তা সেক্টরে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশ সাফল্যের কারণে বিশ্বে উন্নয়নের জন্য রোল মডেল হিসাবে পরিণত হয়েছে।
দেশের আর্থ-সামজিক উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে আরও ১০টি বোয়িং এয়ারক্রাফট কিনে বিভিন্ন দেশের সাথে বিমান নেটওয়ার্ক বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২টি ও কানাডা থেকে ৩টি বোয়িং বিমান ক্রয় করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, আজারবাইজানের দূত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দিকী।