চাকুরিচ্যুতির হুমকির মুখে পড়েছেন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের ৪৬ আউটসোর্সিং কর্মচারি

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  টানা ছয় বছর দায়িত্ব পালনের পর সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজে কর্মরত ৪৪ জন আউটসোর্সিং কর্মচারি এখন চাকুরিচ্যুতির হুমকির মুখে পড়েছেন। তাদের কয়েক মাসের বেতন ভাতা বকেয়া রয়েছে। এরই মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে গত জুন মাসে তাদের চাকুরির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন আউটসোর্সিং কর্মচারিরা।
লিখিত বক্তব্যে কর্মচারি কল্যাণ কমিটির সাধারন সম্পাদক নাঈম হাসান বলেন, মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্ন ২০১৪ সালে আউটসোর্সিং কর্মচারি হিসাবে যোগদান কালে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৩০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা করে ঘুষ নেওয়া হয়েছিল। নিয়োগকালে তাদের বলা হয় ২০ তম গ্রেডে তাদের বেতন পরিশোধ করা হবে । ২০১৬ সালে পে স্কেল চালু হলে তাদের মূল বেতন ১৪ হাজার ৪৫০ টাকা থেকে প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা করে কেটে নেওয়া শুরু হয়। কি কারণে এই টাকা নেওয়া হয় তার কোনো সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে কর্তৃপক্ষ জানান এ নিয়ে কথা বললে তোমরা চাকুরি হারাবে। এমনকি বেতন ভাতার টাকা নিজ নিজ হিসাবে জমার কথা থাকলেও তা জমা করা হয় কলেজের হিসাবে। ফলে তাদের বেতনের টাকা নিতে হয় হাতে হাতে। এরই মধ্যে ৫/৬ মাসের বেতন এবং তিনটি উৎসব ভাতা বাকি পড়েছে। এই টাকা আদৌ হাতে পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ ছাড়াই ইতিমধ্যে ২২ জনকে ছাঁটাই করেছেন। এ ছাড়া নতুন নিয়োগও দিয়েছেন। টেবিল বয়ের দু’টি পদও বিলুপ্ত করা হয়েছে। জনবল নিয়োগের প্রশাসনিক অনুমোদনের সুযোগ নিয়ে কর্তৃপক্ষ ৪৬ জন কর্মচারি কর্মরত থাকা সত্ত্বেও সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে আউটসোর্সিংয়ের সব পদ শুন্য দেখিয়েছেন। এদিকে গত জুন মাসে জনবল নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সময়সীমা শেষ হওয়ার বিষয়টি আউট সোর্সিং কর্মচারিদের অবহিত না করেই অক্টোবর মাস পর্যন্ত তাদের দিয়ে কর্ম পরিচালনা করা হয়েছে। এসব বিষয়ে তারা কলেজ অধ্যক্ষের কাছে জানতে চাইলে তিনি তাদের বলেছেন, গত জুন মাসে তোমাদের চাকুরি শেষ হয়ে গেছে। তোমরা এখন কলেজের কেউ নও। ফলে এসব কারণে ৪৬ টি আউটসোর্সিং কর্মচারীর পরিবার হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।
অধ্যক্ষের বরাত দিয়ে তারা আরও বলেন, নতুন নিয়োগ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো কাজ করলে কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন। অথচ এসব বিষয়ে অধ্যক্ষ তাদেরকে লিখিত কোনো কাগজপত্র দেননি। চাকুরিচ্যূতি নয়, ২২ জন কর্মচারিকে আউটসোর্সিং পদে বহাল এবং ২২ জনকে রাজস্বখাতে নিয়ে বেতন ভাতা দেওয়ার দাবি জানান তারা। একই সাথে দুইজন টেবিল বয়কে নতুন কর্মে সহযোগিতা করা ছাড়াও সমুদয় বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধেরও দাবি জানান। তারা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কাজী হাবিবুর রহমান বলেন, আউটসোর্সিংয়ে যারা কাজ করতেন তাদের নিয়োগ মেয়াদ এক বছরের। এরই মধ্যে তাদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুন নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। তবে তিনি পুরনো কর্মচারিদের নতুন করে নিয়োগের ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন বলে মন্তব্য করেন।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।