এটিএম আজহারের আপিলের রায় আজ

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাস চেয়ে আপিলের রায় বৃহস্পতিবার ঘোষণা করবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আজ বুধবার প্রকাশিত আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় রায় ঘোষণার জন্য মামলাটি এক নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।

এর আগে গত ১০ জুলাই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষামান (সিএভি) করেন। ১০ জুলাই এটিএম আজহারুল ইসলামের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন আপিলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তির জবাব দেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে দিল্লী চুক্তির মাধ্যমে ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে পাকিস্তানী বিচার করবে এই শর্তে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এটা সঠিক নয়, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যে দিল্লী চুক্তি হয় যেখানে স্পষ্টভাবে ক্ষমা করা হয়েছে বলা হয়। সেখানে বিচারের কোনো প্রভিশন রাখা হয়নি।

শুনানিতে তিনি বলেন, চিহ্নিত ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীকে ছেড়ে দিয়ে ৪৩ বছর পর মানবতাবিরোধী অপরাধের নাম দিয়ে আপিলকারীর যে বিচার করা হচ্ছে সেটা অনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা প্রণোদিত। তিনি আরো বলেছিলেন, এটিএম আজহার এলাকায় ২০১০ সাল পর্যন্ত জামাতের একজন নেতৃস্থানীয় নেতা হিসেবে প্রকাশ পেয়েছেন। তার পূর্বে মামলার ঘটনা দূরের কথা তার বিরেুদ্ধে কোনো অভিযোগ কখনো উত্থাপন করা হয়নি। এ মামলায় সরকার পরিকল্পিতভাবে সাক্ষীদের সেফহোমে রেখে আপিলকারীর বিরুদ্ধে অবাস্তব সাক্ষ্য দিয়েছে। বিশেষ করে তার এলাকায় তৎকালীন সময়ে জামায়াত ও মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন এবং তারা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন। তাদের সবাইকে বাদ দিয়ে আজহার সাহেবকে আসামী করা হয়েছে। এর স্বপক্ষে ১৩ বছরের বালকসহ অবাস্তব সাক্ষী প্রমাণ দেয়া হয়েছে। আপিল কারীর পক্ষে আমরা বলেছি, মামলার বর্ণিত ঘটনা আপিলকারী স্বীকার করেন। বর্বর পাকিস্তান আর্মি এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। উদ্দেশ্য মূলকভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ওই ঘটনার সময় আপিলকারী উপস্থিত ছিলেন বলে বলা হয়েছে।

খন্দকার মাহবুব হোসেন আরো বলেছিলেন, ঘটনার সময় আপিলকারী ১৮ বছরের একজন বালক ছিলেন। ১৯৫জন চিহ্নিত পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীকে ছেড়ে দিয়ে আজহারের মতো ১৮ বছরের একজন বালকের বিচার কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমি শুনানিতে বলেছি ট্রাইব্যুনাল বিচার-বিশ্লেষণ করেই মৃত্যুদ-ের রায় দিয়েছিলেন। তাই ট্রাইব্যুনালের সে সাজায় হস্তক্ষেপের কোনো কারণ নেই। আমি আশা করি ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়টিই আপিল বিভাগ বহাল রাখবেন।

গত ৯ জুলাই এটিএম আজহারের খালাস চেয়ে আপিলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। তিনি গত ২, ৮ ও ৯ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের যুক্ত উপস্থাপন করেন। গত ২ জুলাই এটিএম আজহারুল ইসলামের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। গত ১৮ জুন এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এটিএম আজহারকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ১১৩ যুক্তিতে এটিএম আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠারমূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল দাখিল করেন।

Check Also

ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

আবুল হোসেন সদর প্রতিনিধি : ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।