Exif_JPEG_420

সাতক্ষীরা আগরদাঁড়ী আমিনিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদত্যাগের অভিযোগ তদন্তে প্রশাসন

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্টঃ সদরের আগরদাঁড়ী আমিনিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম কাশেমীকে পদত্যাগের অভিযোগ তদন্তে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। তিনি সাতক্ষীরা সদর থানায় অবিযোগ করায় পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে সূত্র জানায়। তবে থানায় অভিযোগের পর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জরুরী সভা করেছেন। মাদ্রাসার আয় ও ব্যয়ের হিসাব পর্যালোচনা করা হয়েছে। তাতে উন্নয়নের ব্যয় দেখিয়ে ভুয়া ভাউচারের কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এই টাকা কে আত্মসাত করলো তা জানতে এলাকার সাধারণ মানুষ উদগ্রীব।
গত ৩০ অক্টোবর সদর থানায় হাজির হয়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম কাশেমীর বাদী হয়ে ওই মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন বলে জানা গেছে। অভিযোগের সূত্রে ৩১ অক্টোবর তদন্তকারী সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ওসি) আবুল কালাম আজাদ ও এসআই সুভাষ মাদরাসায় তদন্ত যান। এসময় উপস্থিত ছিলেন মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি সভাপতি গোলাম মোরশেদ, সদস্য হাবিবুর রহমান হবি, আক্তার ফারুক, বুলবুলসহ আরও অনেকে। তবে অভিযোগকারী অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম কাশেমী তদন্তের সময় মাদ্রাসায় উপস্থিত ছিলেন না।
এ ব্যাপারে সদর থানার তদন্তকারী পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, ওই মাদরাসার অধ্যক্ষকে পদত্যাগের বিষয়ে ওই অধ্যক্ষ থানায় একটি অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগে ভিত্তিতে আমরা ওই মাদ্রাসায় তদন্ত গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে অধ্যক্ষ হাজির হননি বিধায় এখন কিছু জানানো যাবে না।
এদিকে মাদরাসার অধ্যক্ষের পদত্যাগের অভিযোগে তদন্ত করার সময় ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৪ বছরের ১ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার ৮০৬ টাকা ভুঁয়া ভাউচারে ব্যয় দেখানো হয়েছে।
তবে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম কাশেমী জানান, মাদরাসার সভাপতি ও সদস্যদের অনুমতি ছাড়াই মাদ্রাসার কোনো টাকা খরচ করা হয় না। তিনি আরও জানান, মাদরাসার টাকার আয় ব্যয়ের হিসাবকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসা কমিটির কর্তৃপক্ষ তাকে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ পদ থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে সূত্রে জানান, সদর উপজেলার আগরদাড়ী আমিনিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যাক্ষ মাও. আব্দুস সালামসহ ম্যানেজিং কমিটি মাদ্রাসার নামে সম্পতির আয়ের টাকা বিভিন্ন ব্যয়ের খাত দেখিয়ে লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসির। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, এই মাদ্রাসার নামের শতাধিক বিঘা জমির ইজারা থেকে লাখ লাখ টাকা আয় হয়।
আবাদেরহাটে এই মাদ্রাসার নামে একটি কয়েকটি দোকান রয়েছে। এই সেই সব দোকান থেকে প্রতিবছরে দোকান ভাড়া পায়। মাদ্রাসার নামে একটি আম বাগান ও পুকুর রয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবছরে হারি টাকা পায়। এছাড়া মাদরাসার নামে প্রতিবছরে ফাল্গুন মাসে ১২/১৩ ও ১৪ তারিখে ৩দিনব্যাপী বার্ষিক মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ মাহফিলে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজার হাজার মুসুল্লি হাজার হাজার টাকা দান করে থাকেন। মাহফিলে আসা মুসুল্লিরা মুরগী, ছাগল, গরু, চাল, ধান, বাঁশসহ নগদ হাজার হাজার টাকা দান করেন। প্রতিবছর এ মাদরাসার মাহফিলে সব কিছু মিলে দান করা নগদসহ ৩/৪ লাখ টাকা আয় হয়।
এছাড়া বিগত সময়ে নাশকতার মামলার আসামী মাদরাসার শিক্ষকরা সাময়িক বরখাস্ত থাকা শিক্ষকদের ১৩ লাখ টাকা বেতন জালিয়াতি করে উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন এবং শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাত করারও অভিযোগ উঠেছে। তবে মাদ্রাসার এসব টাকার হিসাব ও নিয়োগের বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ বর্তমান কমিটির কর্তৃপক্ষ সবাই জানেন বলে এলাকাবাসির দাবি।
কিন্তু সূত্রটির দাবি মাদ্রাসার বর্তমান কমিটি এসব দায় এড়াতে উদোর পিন্ডি বুধর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছেন। এলাকবাসির দাবি, মাদ্রাসার টাকায় নাকি ম্যানেজিং কমিটির এক সদস্য ভারত সফর করেছেন। তারা বিষয়টি দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অপরদিকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির গোলাম মোরশেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম কাশেমী ভুয়া ভাউচারে ব্যয় দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। তবে এসব ব্যয়ের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এসব জায়গার আয়ের টাকা কোথায় যায়? বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য দুদকের কাছে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সাধারণ জনগণ।

Check Also

বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন

দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।