ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মো: আফজালের দুর্নীতি ও অনিয়মের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম আজ রোববার একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সরকারি বিশেষ নিরীক্ষায় ধরা খেয়ে ইসলামী ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মো: আফজালের দুর্নীতি ও অনিয়মের ৩২ কোটি টাকা ফেরৎ দেয়ার ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। তার এই দুর্নীতির ঘটনায় দেশবাসী বিস্মিত ও মর্মাহত।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মতো দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ে থেকে দুর্নীতি করে তিনি প্রচুর অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। এই রকম একজন আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি কী করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মতো একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে ছিলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। শুধু সামীম মে: আফজাল একাই নন, এ রকম বহু দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি বর্তমান সরকারের বিগত ১০ বছর আমলে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সৃষ্টি হয়েছে। তারাই গোটা দেশের দরিদ্র জনগণকে অভুক্ত রেখে দেশের সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছে। যে কারণে বর্তমান সরকারের বিগত ১০ বছর আমলে কোটিপতি দুর্নীতিবাজ লোকের সংখ্যা ৪ গুণ বেড়েছে।
এই সামীম মো: আফজাল ইসলামী ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক থাকাকালে ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতি, তাহজিব ও তামুদ্দুনকে ভূলুন্ঠিত করে দিয়েছে। তিনি দুর্নীতির করে ধর্মীয় মহলের মুখে চুন-কালি মেখে দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বহু আগেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এবং ইসলামী ফাউন্ডেশনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো পদপেক্ষই গ্রহণ করেনি। যখন তার বিরুদ্ধে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করেছিল তখনই সরকারের উচিত ছিল তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তা করা হলে তিনি এভাবে অবাধে দুর্নীতি করার সুযোগ পেতেন না। যথাসময়ে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় প্রমাণিত হয়েছে যে, সরকারের স্বজনপ্রীতি ও পৃষ্ঠপোষকতায়ই তিনি অবাধে দুর্নীতি করে প্রচুর অবৈধ অর্থের মালিক হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। বিশেষ নিরীক্ষায় ধরা পড়া একটি মাত্র খাতে তিনি ওই পরিমাণ দুর্নীতি করেছেন। তাহলে অন্যান্য খাতে তিনি কী পরিমাণ দুর্নীতি করেছেন তা সহজেই অনুমেয়। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি থাকাকালে আরো কত দুর্নীতি করেছেন তা অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে খুঁজে বের করতে হবে।
জনগণের ট্যাক্সের টাকায় সরকার তাকে বেতন দিয়েছে। তার দায়িত্ব ছিল ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে রক্ষা করা। কিন্তু তিনি তা না করে সেখানে বসে দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে দেশের জনগণ ও ইসলামী আদর্শের সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। কোন ঈমানদার মুসলমান এ ধরনের গর্হিত অপরাধ করতে পারে না।
তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ আমলে নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’