ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ছোট ছেলের সঙ্গে মন কষাকষি ছিল শেখ ইকবালের। এই জন্য ঘুমন্ত ছেলেকে ঘরে তালাবদ্ধ করে পুড়িয়ে মারলেন তিনি।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন নিহতের স্ত্রী ও দুই মেয়েও।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানের গলসি ২ ব্লকের খানো-ডাঙাপাড়ায় মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শেখ ইউসুফ ও তার বড় ছেলে শেখ একরামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খবর আনন্দবাজার।
বর্ধমান মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে, শেখ ইকবালের (৩৬) স্ত্রী তুহিনা বেগম ৯০ শতাংশ ও দুই নাবালিকা মেয়ে সোহনা খাতুন ও বিলকিস খাতুন ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে।
পুলিশের দাবি, জেরায় তাদের কাছে ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন ইউসুফ।
জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওই বৃদ্ধ ও তার বড় ছেলেকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ইউসুফ অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী। ১৩ বিঘার কিছু বেশি জমি এবং পাকা ও মাটির মিলিয়ে তিনটি বাড়ি রয়েছে তার। ইকবাল কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকলেও, তার পরিবার গ্রামে থাকে।
প্রতিবেশীদের একটা বড় অংশের দাবি, মাস দু’য়েক আগে সম্পত্তির বাটোয়ারা নিয়ে বাবা-ছোট ছেলের মারপিট হয়। থানায় অভিযোগ হয়। গ্রামে সালিশিসভা বসে।
সিদ্ধান্ত হয়, ইকবালকে বাড়ি তৈরি করতে চার লাখ টাকা ও জমি দেবেন ইউসুফ। বিনিময়ে আর কোনো সম্পত্তিতে দাবি জানাবেন না ইকবাল। মঙ্গলবার সম্পত্তির সে ভাগ বুঝে নিতে এসেছিলেন ইকবাল।
ইউসুফের স্ত্রী মাবিয়া বিবি জানান, রাতে পাকা বাড়িতে সপরিবার শুয়েছিলেন তার ছোট ছেলে। লাগোয়া দোতলা মাটির বাড়িতে এক নাতিকে নিয়ে শুতে যান ইউসুফ।
গভীর রাতে ইকবালের আর্তনাদে ঘুম ভাঙে মাবিয়া বিবির। উঠে গিয়ে বন্ধ দরজার তালা ভাঙার চেষ্টা করেন। লাগোয়া বাড়িতে থাকা বড় ছেলে, পড়শিদেরও ডাকেন। ইউসুফ পালিয়ে যান। পরে গুসকরা স্টেশন থেকে তাকে ধরে পুলিশ।
অভিযোগ, ইকবালদের ঘরের পিছনের জানলার নীচে টুল রেখে তার ওপরে পাঁচ কিলোগ্রামের গ্যাসের সিলিন্ডার বসান ইউসুফ। পাইপ দিয়ে গ্যাস ছেড়ে দেন ওই ঘরে। তার পরে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই সিলিন্ডার, টুল ও পাইপ উদ্ধার হয়েছে।
মাবিয়া বিবি বলেন, ‘স্বামীই ছোট ছেলেকে পুড়িয়ে মেরেছে। বউমা এবং নাতনিদেরও পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল। ওর শাস্তি চাই।’