ভিক্ষুকমুক্ত কলারোয়ায় শুক্রবারে বসে ভিক্ষুকের মেলা!
ক্রাইমবার্তা ডটকম
09/11/2019
ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সাতক্ষীরা: কলারোয়া ‘ভিক্ষুকমুক্ত উপজেলা!’ অথচ খোদ উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের মসজিদের সামনে-ই ভিক্ষুকদের মিলন মেলা। শুক্রবার এ দৃশ্য চোখে পড়েছে। সপ্তহের অন্যদিনগুলোতে একটু কম হলেও শুক্রবার এলে ভিক্ষুকদের আধিক্যতা বেড়েই চলেছে। বাজারের দোকানদার, ব্যবসায়ী, বাসা-বাড়ির বাসিন্দা ও সাধারণ জনগণও ভিক্ষুকদের ‘হাত পাতা’র কাছে রীতিমতো অসহায়। ভুক্তভোগিরা জানিয়েছেন-‘কলারোয়া উপজেলাকে কয়েকবছর আগে ‘ভিক্ষুকমুক্ত উপজেলা’ ঘোষণা করা হলেও আজো তা বাস্তবে পরিলক্ষিত হয় না। শুক্রবার খোদ উপজেলা মসজিদের সামনে জুম্মার নামাজের পরে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ভিক্ষুকেরা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। এমন দৃশ্য অন্য মসজিদগুলোর সামনেও। এমনকি সকাল থেকে দোকানগুলো পর্যায়ক্রমে ভিড় জমায় বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের ভিক্ষুকরা। আর পুরুষ ভিক্ষুকরা জুম্মার নামাজের সময় শেষের কাতারে অবস্থান করেন, ফরজ নামাজের সালাম শেষে হতেই তারা মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে যান।’ তারা আরো জানান-‘ভিক্ষুকরা এখন আর ভিক্ষা চান না, সকলেই এসে ‘সাহায্য’ চান। এসকল ভিক্ষুকদের অধিকাংশ ব্যক্তি-ই কর্মক্ষম। কাজ করার কথা বললে তারা নানান অজুহাত দেখান।’ কয়েকজন দোকানদার জানান-‘তাদের অনেকে ১টাকার কয়েন দিলে নিতে চান না, কমপক্ষে ২টাকার কয়েন দিতে হয়। একেকজন দোকানদার প্রতি শুক্রবার ভিক্ষুকপ্রতি ১/২টাকার কতগুলো কয়েন অর্থাৎ কত টাকা ভিক্ষুকদের দিতে হয় তার হিসাব নেই, তবে তা ১০০ টাকার নিচে নয়।’ সাধারণ মানুষ মন্তব্য করেছেন-‘ভিক্ষুকমুক্ত, তবে কী ফকিরমুক্ত হয়নি? উপজেলা সদর শুক্রবার ‘ফকিরবার’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এসব ফকিরেরা বেশ নিয়ম মেনে ভিক্ষা করেন। তাদের মধ্যে সারিবদ্ধ শৃংখলাও দেখা যায়।’ সপ্তাহের অন্য দিন এসকল ভিক্ষুকরূপী ফকিররা কলারোয়া পৌরসদরের দোকানদারদের তেমন বিরক্ত করেন না। তবে শুক্রবার জুম্মার দিনে সকাল থেকেই শুরু হয় ভিক্ষুকদের ফকিরি কার্যক্রম। দলবেঁধে ও এককভাবে তারা বাজারের দোকানে দোকানে গিয়ে ভিক্ষার টাকা সংগ্রহ করেন। জুম্মার নামাজ শেষে উপজেলা মসজিদ, থানা জামে মসজিদ, কাছারী মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড মসজিদ, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ অন্যান্য মসজিদের সামনে তাদের উপস্থিতি দৃশ্যমান হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন-‘দু:খজনক হলেও সত্য যে, ভিক্ষুকমুক্ত করণ প্রকল্পে এদের অনেকে সহায়তাপ্রাপ্ত। তবে পেশা আর নেশায় অনেকে এটা ছাড়তে পারছেন না। অনেকে আবার বেশ স্বচ্ছল তবুও তারা ভিক্ষুক।’ বাসা-বাড়ির বাসিন্দারা জানান-‘আগত ভিক্ষুকরা এখন আর চাউল নিতে চান না। তারা টাকা দাবি করেন।’ উপস্থিত ভিক্ষুকদের পরিচয় জানাতে চাইলে তারা অধিকাংশ অন্য উপজেলার বাসিন্দা বলে জানান।