ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ মুজিব বর্ষ ও সাতক্ষীরা কেন্দ্রিয় পাবলিক লাইব্রেরির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ভালো মানুষ হতে বই পড়ার বিকল্প কিছু নেই। যে বই পড়ে তার মাঝে সংবেধশীলতা জন্ম নেয়। আর একজন সংবেদনশীল মানুষ কখনও অসৎ হতে পারে না। সে কখনও অন্যায় করতে পারেন না। সংবেদনশীল মানুষ সব সময় মানুষকে ভালোবাসবে। তিনি সৃষ্টির সকল জীবকে ভালোবাসবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা যার এ প্রজন্মের প্রতিনিধি তোমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অনুসারণ করবে তাহলে দেখবে তোমরা কোন অন্যায় করতে পারবে না এবং সত্যিকারের সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। সত্যিকারের সু নাগরকি হতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে হবে। জিপিএ-৫ পেলেই তাকে মেধাবি বলার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা তারা তাদের সহপাঠিকে নির্মমভাবে পিটিয়ে মেরেছে তারাও কম মেধাবি ছিলো না। মেধা (কোড এবং আনকোড) এখানে মেধাকে মেধা বলা যাবে না। এই মেধা দিয়ে দেশের কোন মঙ্গল হতে পারে না। জিপিএ-৫ বা জিপিএ-৪ দিয়ে মেধার মূল্যয়ন করার সুযোগ নেই। মেধার পাশাপাশি মানবিক মূলবোধ নিজের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে।’
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে মুজিব বর্ষ ও সাতক্ষীরা কেন্দ্রিয় পাবলিক লাইব্রেরির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘তৎকালীন ফ্রান্সের সংস্কৃতি মন্ত্রী ও দার্শনিক আঁদ্রে মালরো মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তিনি বিভিন্ন কারণে অংশ গ্রহন করতে পারেননি। দেশ স্বাধীন হওয়ার বাংলাদেশে আসলে ও বঙ্গুবন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কাছে প্রশ্ন করেন আপনার সবচেয়ে বড় অর্জন কোনটা বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘আমি মানুষকে ভালোবাসি।’ তিনি আবারও প্রশ্ন করেন আপনার মন্দ দিক কোনটি? তখন বঙ্গবন্ধু বলেন আমি মানুষকে বেশি ভালোবাসি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বলেছেন মানুষকে ভালোবাসো। মানুষকে ভালোবাসাই হলো বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমি শোষকের পক্ষ নয় শোষিদের পক্ষে।’
‘ফ্রান্সের সংস্কৃতি মন্ত্রী ও দার্শনিক আঁদ্রে মালরো ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়েল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন। যুদ্ধে নিহত শিক্ষার্থীদের কবরে লিতে দিতে বলেছিলেন, ‘তোমাদের জন্য আমাদের জীবন দিয়েছি। তেমনিভাবে তোমাদের হাতে যারা বই তুলে দিয়েছেন তারাও মহান মানুষ। তারা কীভাবে দেখেছেন এই সমাজকে এই পৃথিবীকে সেটা বইয়ের মাধ্যমে এসব প্রদশিত হবে। এমনিভাবে এক প্রজন্ম থেকে থেকে আরেক প্রজন্মের মাঝে জ্ঞান সঞ্জয় হোক। জ্ঞানের মাধ্যমে নিজেকে আলোকিত করা। যে ঘরে বই নেই। সে ঘর জানালা বিহীন ঘর। ঘরের মধ্যে জানালা না থাকলে আলো আসবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বাড়িতে পর্যাপ্ত বই নেই সেই বাড়িটিও একটি অন্ধকার বাড়ি। মুজিব বর্ষ ও সাতক্ষীরা কেন্দ্রিয় পাবলিক লাইব্রেরির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বই মেলার আয়োজন করা হয়েছে তোমরা বই কিনবে। বেশি বেশি কিনবে বেশি বেশি বই পড়বে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলে সাতক্ষীরা সদর আসনের সাংসদ মীর মোস্তাক আমেদ রবি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) আবদুল মান্নান ইলিয়াস, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সংসদ ও আইন) মো: শওকত আলী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ফয়েজুর রহমান ফারুকী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের রেজিস্টার অফ কপিরাইটস (যুগ্ম সচিব) জাফর রাজা চৌধুরী, সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, পৌর মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতি, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক ফরিদ আহমেদ, বাংলাদেশ পুস্তক ও প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির